আন্তর্জাতিক রিপোর্ট : চার সপ্তাহ যাবত ভারত ও চীনের মধ্যেকার সীমান্তে দুদেশের মধ্যে এক ধরনের উত্তেজনা চলছে।উভয় দেশের মাঝে প্রায় সাড়ে তিন হাজার কিলোমিটার সীমান্ত রয়েছে।সীমান্ত বিরোধী নিয়ে ১৯৬২ সালে ভারত-চীন যুদ্ধও হয়েছিল।কিন্তু তারপরেও বিভিন্ন জায়গায় বিরোধ এখনো অমীমাংসিত রয়ে গেছে এবং মাঝে-মধ্যেই সেটি মাথা চাড়া দেয়।চীন, ভুটান আর ভারতের সিকিম প্রদেশের সংযোগস্থলে একটি উপত্যকার ভেতর দিয়ে রাস্তা তৈরি করাকে কেন্দ্র করে নতুন বিরোধের সূচনা।চীন চায় সেখানে একটি রাস্তা তৈরি করতে। কিন্তু যে জায়গাটিতে চীন রাস্তা তৈরি করতে চাইছে সেটি ভুটান ও চীনের মধ্যকার একটি বিরোধপূর্ণ এলাকা।

সে উপত্যকাকে চীন এবং ভুটান-উভয় দেশই দাবী করে। এক্ষেত্রে ভারতের অবস্থান ভুটানের পক্ষে।ভারত মনে করে, চীন যদি এ রাস্তাটি তৈরি করে তাহলে কৌশলগতভাবে ভারত পিছিয়ে পড়বে।এ রাস্তাটির মাধ্যমে চীন এমন একটি জায়গায় পৌঁছে যাবে যেটি ভারতের উত্তর-পূর্ব রাজ্যগুলোর জন্য হুমকি তৈরি করতে পারে।চীন এমন জায়গায় সড়ক নির্মাণ করতে চাইছে যার পাশেই ভারতের ২০ কিলোমিটার চওড়া একটি করিডোর আছে।এ করিডোরের মাধ্যমে ভারতের উত্তর-পূর্ব রাজ্যগুলো মূল ভারতের সাথে সংযোগ রক্ষা করে।উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে উভয় দেশ সীমান্তে তাদের সামরিক শক্তি বাড়িয়েছে এবং একটি মুখোমুখি অবস্থান তৈরি হয়েছে।অন্যদিকে সড়ক নির্মাণ না করার জন্য ভুটানের তরফ থেকে চীনকে আহবান জানানো হয়েছে।

ভুটান বলছে, এ ধরনের সড়ক নির্মাণের মধ্য দিয়ে চীন আন্তর্জাতিক চুক্তির লঙ্ঘন করছে।ভারত মনে করে সিকিম রাজ্যটি তাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।কারণ সিকিম অঞ্চলের মধ্য দিয়ে ভারত চীনের যে কোন আগ্রাসনের জবাব দিতে পারে।চীন এ বিষয়টি অনুধাবন করতে পারে বলেই সেখানে তাদের কৌশলগত অবস্থান জোরদারের চেষ্টা চালাচ্ছে।১৯৬২ সালের যুদ্ধে চীনের কাছে ভারত পরাজিত হয়েছিল।ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী অরুণ জেটলি সম্প্রতি বলেছেন, ১৯৬২ সালের ভারত এবং ২০১৭ সালের ভারত এক নয়।নিজের ভূখণ্ড রক্ষার জন্য ভারত এখন যথেষ্ট শক্তিশালী বলে মন্তব্য করেছেন মি: জেটলি।অন্যদিকে চীন মনে করে যে জায়গাটিতে তারা সড়ক নির্মাণ করতে চাইছে সেটি তাদের অবিচ্ছেদ্য ভূখণ্ড।

ভারতে সেখানে অবৈধভাবে অনুপ্রবেশের চেষ্টা চালাচ্ছে বলে মনে করে চীন।১৯৬২ সালের যুদ্ধের কথা ভারতকে মনে করিয়ে দিচ্ছে চীন। দেশটি বলছে চীন আগের তুলনায় এখন আরো বেশি শক্তিশালী।চীনের সাথে ভারতের উত্তেজনার আরেকটি কারণ রয়েছে।তিব্বতের আধ্যাত্মিক নেতা দালাইলামা ভারতে বসবাস করছেন, যেটি চীন মোটেও পছন্দ করছে না।

বি/বি/সি/এন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে