সিরাজগঞ্জ থেকে,মারুফ সরকার:উপজেলা পর্যায়ে ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে ঘোড়াচরা উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র ও ঘোড়াচরা গ্রামবাসির আক্রমনে প্রীতিলতা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক, সহকারি শিক্ষক, খেলোয়ার ও ছাত্র দর্শকসহ কমপক্ষে ২০ জন আহত হয়েছেন। আহতদের সিরাজগঞ্জ সদর হাসপাতাল ও বিভিন্ন ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে। শনিবার বিকেলে ৪৬তম জাতীয় স্কুল ও মাদরাসার গ্রীষ্মকালীন খেলার বি-গ্রুপের বাছাই পর্বের আঞ্চলিক ফাইনাল খেলা চলাকালে ঘোরাচরা স্কুল মাঠে এই হামলার ঘটনা ঘটে। খেলার আয়োজনকারী পক্ষ সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলা প্রশাসন তদন্ত পূর্বক দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দেয়ার কথা জানিয়েছেন। এই ঘটনায় সিরাজগঞ্জ সদর থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে ৪৬তম জাতীয় স্কুল ও মাদরাসার গ্রীষ্মকালীন খেলা শুরু হয় গত ২৬ জুলাই ২০১৭ ইং তারিখে। এই খোলার মধ্যে অন্যতম আকর্ষনীয় খেলা ছিল ফুটবল।

সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলা সব স্কুলকে দুই ভাগে ভাগ করে সিরাজগঞ্জ শহীদ শামসুদ্দিন ষ্টেডিয়ামে ৪১টি স্কুল এবং সিরাজগঞ্জ হরিনা বাগবাটি উচ্চ বিদ্যালয়ে ৪০টি স্কুল খেলায় অংশ নেয়। ফুটবলের আঞ্চলিক এই বাছাই পর্বে খেলতে গিয়ে হরিনাবাগবাটি উচ্চ বিদ্যালয মাঠ বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় কর্তৃপক্ষ ঘোড়াচরা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠকে খেলার জন্য বেছে নেয়।প্রীতিলতা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জয়নাল আবেদীন জানান, শনিবার ছিল ফুটবলের উত্তরাঞ্চলীয় স্কুল পর্যায়ের ফাইনাল খেলা। স্বাগতিক ঘোড়াচরা উচ্চ বিদ্যালয় ফুটবল দল ও প্রীতিলতা উচ্চ বিদ্যালয় ফুটবল দলের মধ্যে ফাইনাল খেলা চলছিল ঘোড়াচরা স্কুল মাঠেই। ৪০ মিনিটের খেলার প্রথমার্ধে প্রীতিলতা উচ্চ বিদ্যালয় পরপর দুটি গোল করে খেলায় এগিয়ে থাকে। খেলা শেষ হওয়ার আর মাত্র তিন মিনিট বাকি। খেলার নিশ্চিত পরাজয় দেখে ঘোড়াচরা উচ্চ বিদ্যালয়ের পক্ষের ছাত্র-দর্শক ও এলাকাবাসি প্রীতিলতা উচ্চ বিদ্রালয়ের খেলোয়ার, দর্শক-ছাত্র শিক্ষকদের ওপর বিনা উস্কানিতে আক্রমণ করে বসে।

বেধড়ক লাঠিপেটায় প্রীতিলতা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক, খেলায় সহায়তাকারী সহকারী শিক্ষক, খেলোয়ার ও দর্শক ছাত্রসহ অন্তত ২০ জন আহত হয়। আহতদের উদ্দার করেূ চলে আসার পথে ছোনগাছা বাজারে সন্ধ্যায় আবারো হামলা করে আরো কয়েকজনকে আহত করে। স্থানীয়দের সহায়তায় আহতদের সিরাজগঞ্জ সদর হাসপাতাল ও বিভিন্ন ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে। প্রীতিলতার প্রধান শিক্ষক আরো জানান, ছোনগাছা বাজারের ওপর আমার স্কলের ৬ষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র সাব্বিরকে হাত- দা দিয়ে কোপ দিয়ে জখম এমনভাবে করে যে তার জখমে ১০টি সেলাই দিতে হয়েছে।

একজনের পায়ের হাড্ডি দুভাগ হয়ে গেছে। এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনার জন্য তিনি ঘোড়াচরা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাইফুল ইসলাম ও ঘোড়াচরা উচ্চ বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আবুল কালাম আজাদকে দায়ী করেন। এদিকে ঘোড়াচরা স্কুল মাঠে উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে খেলায় হামলা করে বিজয়ী দলের খেলোয়ারদের, ছাত্র এবং সংশ্লিষ্ট স্কুলের শিক্ষকদের আহত করায় চরমভাবে ক্ষুব্দ হয়েছেন উপজেলা প্রশাসন। রোববার খেলার পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সরকার মোহাম্মদ রায়হান ঘটনার তদন্ত করে দোষীদের শাস্তির আশ্বাস দেন। এদিকে এই ঘটনার জন্য অভিযুক্ত ঘোড়াচরা উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক সাইফুল ইসলাম জানান, খেলার শেষ পর্যায়ে এই ঘটনার জন্য আমি মর্মাহত ও লজ্জিত। এই ঘটনার নিন্দা জানানোর মত ভাষা আমার নাই। আমি এই ঘটনার সুষ্ঠু মিমাংসা চাই।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে