আন্তর্জাতিক রিপোর্ট : চেতেশ্বর পূজারা ও আজিঙ্কা রাহানের জোড়া সেঞ্চুরিতে শ্রীলংকার বিপক্ষে কলম্বো টেস্টের প্রথম দিনটি নিজেদের করে নিলো সফরকারী ভারত। দুই অপরাজিত ব্যাটসম্যান পূজারার ১২৮ ও রাহানের ১০৩ রানের সুবাদে টেস্টের প্রথম দিন শেষে ৩ উইকেটে ৩৪৪ রান করেছে টিম ইন্ডিয়া। টেস্ট ইতিহাসের প্রথম দল হিসেবে পর পর দুই ম্যাচের প্রথম দিনেই ৩ শতাধিক রান করল ভারত।
কলম্বোর সিংহলিজ স্পোর্টস ক্লাব গ্রাউন্ডে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন ভারতের অধিনায়ক বিরাট কোহলি। শুরুটা ঝড়ো গতিতেই করেছিলেন দুই ওপেনার শিখর ধাওয়ান ও লোকেশ রাহুল। ওয়ানডে স্টাইলে ব্যাট করে ৮ দশমিক ৪ ওভারে দলের স্কোর ৫০এ নিয়ে যান তারা।
এরপর ডিআরএসের ফাঁদে পড়ে বিদায় নেন প্রথম টেস্টের প্রথম ইনিংসে ১৯০ রান করা ধাওয়ান। ৫টি চার ও ১টি ছক্কায় ৩৭ বলে ৩৫ রান করেন তিনি।
দলীয় ৫৬ রানে ধাওয়ান ফিরে যাবার পর উইকেটে রাহানের সঙ্গী হন পূজারা। দু’জনে শক্ত হাতে হাল ধরে দলীয় স্কোর তিন অংকে নিয়ে যান। এরই মাঝে হাফ-সেঞ্চুরির স্বাদ নেন রাহুল। টেস্ট ক্যারিয়ারে এটি তার অষ্টম হাফ-সেঞ্চুরি। তবে টানা ষষ্ঠ হাফ-সেঞ্চুরি। ভারতের তৃতীয় খেলোয়াড় হিসেবে টানা ষষ্ঠ হাফ-সেঞ্চুরির রেকর্ড গড়লেন তিনি। এর আগে এমন কীর্তি গড়েছিলেন ভারতের গুন্ডাপ্পা বিশ্বনাথ ও সাবেক অধিনায়ক রাহুল দ্রাবিড়। বিশ্বনাথ ১৯৭৭/৭৮ এবং দ্রাবিড় ১৯৯৭/৯৮ মৌসুমে এ রেকর্ড গড়েছিলেন।
রেকর্ডের পাতায় নাম তুলে ৫৭ রানে রান আউট হন রাহুল। তার ৮২ বলের ইনিংসে ৭টি চার ছিলো। দলীয় ১০৯ রানে রাহুলকে হারানোর কিছুক্ষণ পর অধিনায়ক কোহলিকেও হারায় ভারত। উইকেটে গিয়ে ২টি বাউন্ডারিতে শুরুটা চমৎকারই করেছিলেন কোহলি। কিন্তু চমৎকার শুরুটা ভালো কিছু এনে দিতে পারেনি ভারতকে। কারণ ১৩ রানেই থেমে যান কোহলি।
১৩৩ রানে কোহলির আউটের পর সর্তক হয়ে যায় ভারত। সর্তকতার সাথে ব্যাট করতে থাকেন পূজারা ও রাহানে। উইকেটে সেট হয়ে দু’জনই রান তোলায় মনোযোগি হয়ে উঠেন। এতে প্রথম দিনের নিয়ন্ত্রণ নিজেদের দখলে নিয়ে নেয় ভারত। কারণ ব্যাট হাতে সেঞ্চুরি করেন দু’জনই।
টেস্ট ক্যারিয়ারের ৫০তম ম্যাচে ১৩তম সেঞ্চুরির স্বাদ পান পূজারা। শ্রীলংকার বিপক্ষে তৃতীয় সেঞ্চুরি তার। সবক’টিই হয়েছে লংকানদের মাটিতে। ২০১৫ সালে প্রথম ও গত টেস্টে লংকানদের বিপক্ষে দ্বিতীয় সেঞ্চুরির স্বাদ পান তিনি। তিন অংকে পা দিয়ে ১০টি চার ও ১টি ছক্কায় ২২৫ বলে ১২৮ রানে অপরাজিত আছেন পূজারা। এই ইনিংস খেলার পথে ৪’হাজার রানও পূর্ণ করেন তিনি। ৮৪তম ইনিংসে এই মাইলফলক স্পর্শ করেন এই ডান-হাতি ব্যাটসম্যান। ফলে দ্রুত ৪’হাজার স্পর্শ করার পথে ভারতের হয়ে যৌথভাবে দ্বিতীয়স্থানে রয়েছেন পূজারা। সেখানে তার সঙ্গী দ্রাবিড়। ২০০১ সালে ৮৪তম ইনিংসে ৪’হাজার রান পূর্ণ করেছিলেন দ্রাবিড়। ভারতের ৮১ ইনিংসে ৪’হাজার রান পূর্ণ করে এই তালিকায় শীর্ষে যৌথভাবে সুনীল গাভাস্কার ও বিরেন্দার শেবাগ।
টেস্ট ক্যারিয়ারের নবম সেঞ্চুরির স্বাদ নিয়ে ১০৩ রানে অপরাজিত রাহানে। তার ১৬৮ বলের ইনিংসে ১২টি চার ছিলো। শ্রীলংকার বিপক্ষে পাওয়া দু’টি সেঞ্চুরি তাদের মাটিতেই করলেন তিনি। চতুর্থ উইকেট জুটিতে অবিচ্ছেদ্য ২১১ রান করেন পূজারা-রাহানে।
শ্রীলংকার রঙ্গনা হেরাথ ও দিলরুয়ান পেরেরা ১টি করে উইকেট নেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর :
ভারত : ৩৪৪/৩, ৯০ ওভার (পূজারা ১২৮*, রাহানে ১০৩*, পেরেরা ১/৬৮)।

বি/এস/এস/এন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে