বিডি নীয়ালা নিউজ(৮ই জুন ২০১৬ইং) আসাদুজ্জামান সুজন,নীলফামারী প্রতিনিধিঃ
সারাদিন রোজা রাখার পর ইফতারিতে পছন্দের খাবার নিশ্চিত করার চেষ্টা করেন
রোজাদাররা। এ তালিকায় বড়া, পিঁয়াজু, ছোলা, চপ ও মুড়ির জুড়ি নেই। কিন্তু
নীলফামারীতে এবার ভাজা-পোড়ার পাশাপাশি ফলের দিকে ঝুঁকতে দেখা গেছে। একদিকে
মৌসুমী ফলের সহজলভ্যতা, অন্যদিকে আবহাওয়াগত কারণেই এ ব্যতিক্রম বলে জানান
কয়েকজন রোজাদার।
দীর্ঘ একমাস সিয়াম সাধনার পরই আসে মুসলমানদের ধর্মীয় সবচেয়ে বড় উৎসব ঈদ-উল
ফিতর। তাই পুরো রমজান মাস জুড়েই রোজাদারদের মাঝে বিরাজ করে এক অন্য রকম আনন্দ।
রোজার আকর্ষণীয় বিষয় ইফতারিতে থাকে তাই বাহারী আয়োজন। গতকাল মঙ্গলবার প্রথম
ইফতারি। তাইতো জেলা শহরসহ বিভিন্ন হাট-বাজারে ইফতারি কেনার ধূম পড়ে। সাধ্যমত
কিনে স্বজনদের সঙ্গে ইফতারি করতে বেশিরভাগ মানুষ ছুটে যান নিজ নিজ বাড়িতে।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে এবারের ইফতারির কেনার ভিন্নতা। পূর্বের বছরগুলোর মতোই
স্থায়ী দোকানদারদের পাশাপাশি শহরের বিভিন্ন স্থানে বসেছে অস্থায়ী ইফতারি
বিক্রির ছোট ছোট দোকান। চপ, বড়া, পিঁয়াজু, বেগুনী ও ছোলাসহ বিভিন্ন প্রকার
ইফতারির পসরা নিয়ে বসেছিলেন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। এসব ক্রয়ের পাশাপাশি
রোজাদাররা এবারে বেশি বেশি কিনেছেন মৌসুমী ফল ও খেঁজুর। মুড়ি-বড়ার পাশাপাশি
স্থানীয়ভাবে পরিচিত ক্ষির খেজুরের (মধ্যপ্রাচ্য থেকে আনা খেজুর) প্রতি আকর্ষণ
ছিল বেশি।
নীলফামারী বাজারের ক্ষুদ্র ফল ব্যবসায়ী নূরনবী ইসলাম জানান, ফুটপাতের দোকান
হলেও গতকাল মঙ্গলবার রোজার প্রথম দিন হওয়ায় খেজুর বিক্রি ছিল উল্লেখ্যযোগ্য।
খেজুরের মান ভেদে প্রতি কেজি ৭০-২৪০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে। তিনি গতকাল
প্রায় দের মণ খেজুর বিক্রি করেছেন।
এছাড়াও মা ফল ভাণ্ডারসহ দোকানগুলোতে রয়েছে ১০০ টাকা থেকে এক হাজার টাকা কেজি
দরের খেজুর। ইফতারির প্রথম দিনে সেখানেও খেজুর বিক্রি ছিল উল্লেখযোগ্য।
এদিকে, সকলের প্রিয় ফল আমের পর্যাপ্ত জোগান থাকায় ইফতারির তালিকার একটি বড় অংশ
জুড়ে ছিল বিভিন্ন জাতের আম।বাজারে এই মুর্হূতে হিম সাগার, ল্যাংড়া ও বোম্বাই
আম পাওয়া যাচ্ছে। প্রতি কেজির দাম ৪০-৬০ টাকা পর্যন্ত। ইফতারির জন্য
উল্লেখ্যযোগ্য পরিমাণ আম বিক্রি হয়েছে বলে জানান কয়েকজন আম ব্যবসায়ী।
এদিকে, এলাকার বাগানের লিচু পাওয়া না গেলেও দিনাজপুরের লিচু পাওয়া যাচ্ছে।
ইফতারির জন্য গতকাল ব্যাপকহারে লিচু বিক্রি হয়েছে বলে জানান লিচু ব্যবসায়ীরা।
প্রতি পণ (৮০টি) লিচু বিক্রি হচ্ছে ২০০-২৬০ টাকা পর্যন্ত। এছাড়াও মৌসুমী ফল
তরমুজের ব্যাপক চাহিদা ছিল। আস্ত তরমুজ বিক্রি ছাড়াও সব ধরনের ক্রেতাদের
সুবিধার্থে কেটে ফালি করেও বিক্রি করতে দেখা গেছে।
ভাজা-পোড়া খাবারের মধ্যে সবচেয়ে বেশি কদর ছিল ছোলার। মুড়ি-ছোলা ছাড়া ইফতারি
যেন অসম্পূর্ণ। তাই শেষ মুর্হূতে ছোলার জোগান শেষ হয়ে যায়। অনেকেই ছোলা কিনতে
না পেরে মন খারাপ করেই বাড়ি ফিরেছেন। চপ-বড়ার চেয়ে ছোলার চাহিদা বেশি থাকায় তা
আগেভাগেই শেষ হয়ে যায় বলে জানিয়েছেন নীলফামারী পাঁচমাথা মোড়ের হোটেল ব্যবসায়ী
মিন্টু ইসলাম। এছাড়াও আনারস, জামরুল, জাম, কাঁঠাল ও কলা বেচাকেনার ধূম পড়ে।