জুয়েল ইসলাম, তারাগঞ্জ (রংপুর) প্রতিনিধিঃ রংপুরের তারাগঞ্জে আমন ক্ষেতে ব্লাস্ট (বিএলবি) ও কারেন্ট পোকা (বাদামি গাছফড়িং) রোগ দেখা দিয়েছে। কীটনাশক প্রয়োগ করেও এ রোগ দমন না হওয়ায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন কৃষকরা। গাছের বৃদ্ধির সময় এ রোগ হওয়ায় ধানের ফলন কমে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন কৃষকরা।

কুর্শা ইউনিয়নের ঝাকুয়াপাড়া গ্রামের কৃষক আজিজার রহমান বলেন, হামার উপজেলাত ৭-৮ বছর ধরে আমন মৌসুমে স্বর্ণা, হাইব্রিড জাতের ধান বেশি আবাদ হওচে। আগোত এই জাতের ধানের খেতোত কোন রোগ বালাই না ধরলেও এবার এই রোগ খেতোত দেখা দিয়েছে। দুই থেকে তিন বার ওষুধ দিয়াও কাম হওচে না। গাছের পাতা লাল হয়া মরি যাওচে।

ইকরচালী ইউনিয়নের লক্ষীপুর গ্রামের কৃষক তারাজুল মিয়া বলেন, খালি ব্লাস্ট রোগে খেতোত ধরে নাই, সেই সাথে কারেন্ট পোকাও ধরছে। জমি নেড়ানি দিয়া সার ওষুধ দেনো তাও এ রোগ সারোছে না। হামড়া কেমন করি ধানোত লাভ করমো। হামার গ্রামোত কোনো দিন মুই দ্যাখো নাই কৃষি অফিস থাকি কায়ও আসি খোজ খবর নেইল।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় ৯ হাজার ৯ শত ৪২ হেক্টর আবাদি জমি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে ৯ হাজার ৯ শত ৪৭ হেক্টর জমিতে আমন লাগানো হয়েছে।

কীটনাশক ব্যবসায়ী হাফিজুল ইসলাম ও সন্তশ কুমার রায় বলেন, গত বছরের তুলনা আমন মৌসুমে কৃষকরা ব্লাস্ট রোগ দমনে ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাকনাশক এবং কারেন্ট পোকা দমনে এসিফেড, নাইটেনপাইরাম, পাইমেট্রোজিন গ্রুপের কীটনাশক ওষুধ বেশি ব্যবহার করছেন।
শনিবার বিকেলে উপজেলার দোহাজারী গ্রামের কৃষক বদিউজ্জামন তাঁর বাড়ির পাশের মাঠে আমন খেতে ওষুধ দিচ্ছেন তার সাথে কথা হলে তিনি বলেন, মুই এবার তিন বিঘা জমিত আমান ধান লাগাছুং। গাছ দেখে মনে হছলো ফলন ভালো হইবে। কিন্তুক ভাই হঠাৎ করি এই পচন রোগ মোর ৮০ শতক খেতে ধরি গাছগুলা দুর্বল হয়া যায়ছে। ওষুধ দিয়া কাম হয়ছে না।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ঊর্মি তাবাস্সুম বলেন, ব্লাস্ট ও কারেন্ট পোকা দমনে সার্বক্ষণিক মনিটরিং করছি। উপজেলার প্রত্যেকটি ইউনিয়নে উপ-সহকারীরা এ বিষয়ে কৃষকদের সাথে উঠান বৈঠক করে বিভিন্ন পরামর্শ দিচ্ছেন।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে