magufuli_tanjiniya

বিডি নীয়ালা নিউজ(২৮ই মার্চ১৬)-আন্তর্জাতিক প্রতিবেদনঃ ২০১৫ সালে আফ্রিকাতে ৭৫ মিলিয়ন মানুষ ঘুষ দিয়েছেন বলে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল এর সর্বশেষ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

রিপোর্টে আরো বলা হয়েছে যে, আফ্রিকানরা মনে করছেন মহাদেশজুড়ে দুর্নীতি ভয়াবহ মাত্রায় পৌঁছেছে।

তবে তানজানিয়াতে সম্প্রতি প্রেসিডেন্ট হিসেবে জন মাগুফুলি নির্বাচিত হওয়ার পর দুর্নীতির বিরুদ্ধে তিনি যুদ্ধ ঘোষণার পরিপ্রেক্ষিতে দেশটির মানুষের মধ্যে আশার সঞ্চার হয়েছে।

তানজানিয়ার নতুন প্রেসিডেন্ট হয়তো এখনো দারেস সালামের ভয়াবহ যানজট সমস্যার সমাধান করতে পারেননি। কিন্তু সাধারণ মানুষের জীবনকে শুদ্ধ করতে তিনি বদ্ধপরিকর।

তিনি প্রকাশ্যে বিচার বিভাগকে দুর্নীতিগ্রস্ত বলে অভিহিত করেছেন এবং শীর্ষ অনেক কর্মকর্তাকে অপসারণ করেছেন। এদের মধ্যে অ্যান্টি করাপশন ইউনিটের প্রধানও রয়েছেন।

আইন দিবসে এটাই ছিল প্রেসিডেন্ট মাগুফুলি বলেছেন, “এই দেশের এমন অনেক কর্মকর্তারা আছেন যারা দেশের ভেতরে বোর্ড মিটিং বা সভা করার মতো কোনও হোটেল খুঁজে পান না। ফলে শুধুমাত্র বোর্ড মিটিং করার জন্য তারা ইউরোপের দেশে দেশে ছোটেন”।

২০১৪ সালে কিছু শীর্ষ রাজনীতিক কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে একশো মিলিয়ন ডলার সরিয়ে নেয়ার পর দাতারা অর্থসাহায্য তুলে নেয়।

রাজনীতিবিদরা এ সংক্রান্ত অভিযোগ অস্বীকার করলেও, দাতাদের অর্থছাড়ে বিরতি অব্যাহত রয়েছে। তাদেরকে আশ্বস্ত করার চাপ রয়েছে প্রেসিডেন্টর মাথায়।

john_magufuli_tanzania

দারেস সালাম বন্দরটি আঞ্চলিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ।

গত বছরের ডিসেম্বরে আচমকা এই বন্দরে আসেন প্রেসিডেন্ট।

তিনি নিজে দুই হাজারের বেশি শিপিং কন্টেইনার আটক করেন যেগুলো সরকারকে নির্ধারিত কর না দিয়ে পাচার করা হচ্ছিল।

যার ফলে সরকারের চার কোটি ডলার রাজস্ব লোকসান গুনতে হয়। তাৎক্ষণিকভাবে বন্দরের প্রধান এবং শীর্ষ কয়েকজন কর্মকর্তাকে চাকরি খোয়াতে হয়।

দেশের প্রধান একটি হাসপাতালে আকস্মিক পরিদর্শনে এলে রোগী এবং দর্শনার্থীরা হতচকিত হয়ে পড়েন।

প্রেসিডেন্ট দেখতে পান অসুস্থ রোগীদের অনেকের জায়গা হয়েছে হাসপাতালের মেঝেতে । তিনি হাসপাতালের প্রধানকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করলেন। সেইসাথে এর পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দিলেন। এখানকার লোকজনকে তার কাজকর্মে উদ্বুদ্ধ হয়ে উঠতে দেখা যায়।

“দুর্নীতির শেকড় এখানে অনেক গভীর। এর বিরুদ্ধে লড়াইয়ের এটি একেবারেই প্রাথমিক সময় বলা যায়। এবং সামনে এখনো অনেক পথ পাড়ি দিতে হবে” দেশটির নীতি ও বাজেট বিষয়ক বিশ্লেষক নিকোলাস লেকুলে এমনটাই মনে করেন।

তিনি বলেন “এখানে শুধু দুর্নীতিকে একা একটি সমস্যা হিসেবে দেখা যাবে না। পুরো প্রক্রিয়াটি এখানে আক্রান্ত।এখন সেটি কিভাবে করা হবে? সরকারি কর্মকর্তাদের মধ্যে জবাবদিহিতার সংস্কৃতি গড়ে তুলতে হবে। আর এটাই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ বলে আমি মনে করি”।

প্রেসিডেন্ট সঠিক পথেই এগুচ্ছেন বলে মনে করেন আরেকজন রাজনৈতিক বিশ্লেষক আটিলিও টাগালিলে।

তিনি বলছেন, “যে মুহুর্তে তিনি ক্ষমতায় এলেন, তিনি সরাসরি দুর্নীতির বিরুদ্ধে শুরু করে দিলেন। এবং তিনি প্রকৃতপক্ষেই সঠিক বার্তাটি লোকজনের কাছে পৌঁছে দিতে পেরেছেন। এর ফলে জাতি এখন পুনরুজ্জীবিত বলে মনে হচ্ছে”।

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের দুর্নীতির সূচকে তালিকার নিচের দিকে থাকা দেশগুলোর একটি তানজানিয়া।

এখানেও হয়তো একসময় উজ্জ্বল দিন আসতে পারে।

কিন্তু এখানকার লোকজন মনে করছেন, সেজন্য আরো অনেক শুদ্ধি অভিযান এখনও দরকার।

সূত্রঃ বিবিসি বাংলা

 

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে