সাম্প্রতিক সংবাদ

জয়পুরহাটে কলা চাষ করে লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা

ডেস্ক রিপোর্ট : ’কলা রুয়ে না কেটো পাত, তাতেই কাপড় তাতেই ভাত’। খনার ওই বচনটি ভালই আত্মস্থ করেছেন জয়পুরহাটের কলা চাষিরা।
এদের পরিবারে কেবল ভাত কাপড়ের ব্যবস্থাই নয়। পরিবারের অনেক ব্যয় সংস্থানই হয়েছে কলা চাষ করে। আর্থিক ভাবে লাভবান হওয়ায় জেলায় বর্তমানে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে কলার চাষ। জয়পুরহাট জেলার প্রধান অর্থকরি ফসল হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে পুষ্টিগুন সমৃদ্ধ এই কলা।

জেলায় বিশেষ করে জামালগঞ্জ ও ভাদসা এলাকার অনেক পরিবার কেবল কলা চাষ করেই স্ববলম্বি হয়েছেন।কৃষকদের সাথে আলাপ করে জানান যায়, অন্য যে কোন ফসলের চেয়ে অনেক বেশী লাভ হয় কলা চাষে। বিশেষ করে যমুনা সেতু চালু হওয়ার পর থেকে জয়পুরহাট জেলার জামালগঞ্জে ও ভাদসার দূর্গাদহ বাজারে কলার বিস্ময়কর বাজার সৃষ্টি হয়েছে। অন্যান্য ফসলের পাশাপাশি এখন কলার চাষ বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এ সব জাতের কলা গাছ থেকে অল্প দিনেই ফল পাওয়া যায়। কৃষকরা জানান, তুলনামূলকভাবে অন্যান্য ফসলের চেয়ে দামও বেশী । সাধারনত বৈশাখ মাসে কলার চারা রোপন করলে অগ্রহায়ণ মাস থেকে কলা পাওয়া শুরু হয়। যেসব জমিতে বর্ষার পানি সাধারনত এক সপ্তাহের বেশি থাকে না সেসব জমিতে কলার চাষ ভাল হয়।

কৃষকরা জানান, একবিঘা জমিতে কলার জাত ভেদে ৩শ থেকে সাড়ে ৩শ কলার চারা রোপন করা হয়ে থাকে। যত সহকারে কলা চাষ করলে একটি গাছ থেকে ২ থেকে আড়াই মণ কলা পাওয়া যায়। এক বিঘা জমিতে কলা চাষ করতে ১৫/২০ হাজার টাকা খরচ পড়লেও প্রতি বিঘা জমি থেকে কলা বিক্রি হয় ৮০ হাজার থেকে এক লাখ টাকা। যা অন্য কোন ফসলে সম্ভব নয়।
স্থানীয় কৃষি বিভাগ জানায়, জয়পুরহাট জেলায় এবার ৬শ হেক্টর জমিতে কলার চাষ হয়েছে। এতে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২০ হাজার মেট্রিক টন। জামালগঞ্জ এলাকার মাতাপুর গ্রামের কলা চাষি আশরাফুল ইসলাম বলেন, তিনি এবার ৫ বিঘা জমিতে কলার চাষ করেছেন। খরচ বাদে প্রতি বিঘায় ৬০ হাজার থেকে ৮০ হাজার টাকা পর্যন্ত লাভ হয়েছে বলে জানান তিনি।
নুনুজ গ্রামের কলা চাষি নূর আলম বলেন, কলা বিক্রিতে কোন ঝামেলা হয় না। পাইকাররা জমি থেকেই কলা কেটে নিয়ে যায়। এ ছাড়াও জামালগঞ্জে ও দূর্গাদহ বাজারে কলার বিশাল হাট বসে প্রত্যেক দিন সকালে। জেলা শহরের গুলশান চৌ মোড়েও পাইকারী কলার হাট বসে।
জয়পুরহাটের কলা উন্নত মানের হওয়ায় দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করে থাকেন ব্যবসায়ীরা। বিশেষ করে ঢাকা, সিলেট ও চট্টগ্রাম জয়পুরহাটের কলার বড় মার্কেট বলে জানান ব্যবসায়ী তাব্বা ও মিজানুর রহমান। জয়পুরহাটে উৎপাদিত কলার মধ্যে রয়েছে ওষুধি কলা হিসেবে চিহ্নিত চাম্পা কলা, সবরি কলা , রঙ্গিন মেহের সাগর ও সাগর কলা।
বর্তমানে জয়পুরহাটের হাটবাজার গুলোতে সবরি কলা ১৮ থেকে ২৪ টাকা হালি এবং চাম্পা ও সাগর কলা ১০ থেকে ১৫ টাকা হালি বিক্রি হচ্ছে। জয়পুরহাট জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সুধেন্দ্রনাথ রায় বলেন, কলা চাষ বেশ লাভজনক ফসল। কলা চাষ করে অনেকেই স্বাবলম্বি হয়েছেন।

বি/এস/এস/এন

Facebooktwitterredditpinterestlinkedinmail

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

Social Media Auto Publish Powered By : XYZScripts.com
shared on wplocker.com