বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে প্রতিটি নাগরিকের চাওয়া-পাওয়ার গণ্ডির মধ্যে সীমাবদ্দ ছিল। কিন্তু এখন সেই গণ্ডি পেরিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। নিম্নের প্রতিটি অনুচ্ছেদ যেন সে কথা মনে করে দেয়।

বাংলাদেশ ছিল উন্নয়নশীল দেশ সেই গণ্ডি পেরিয়ে এখন নিম্নমধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হয়েছে। এই উন্নয়নের গতিধারায় বাংলাদেশ আজ এগিয়ে চলছে। ২০১৬ সালে বাংলাদেশ হবে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম প্রবৃদ্ধির দেশ। আই এম এফের তথ্য ব্যবহার করে , সি এন এন মানি প্রবৃদ্ধি ও আকারের দিক থেকে শীর্ষ দশটি দেশের একটি তালিকা তৈরি করেছে। সেই তালিকায় বাংলাদেশ তৃতীয়। তবে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস)হিসাবে ২০১৪-১৫ অর্থ বছরে বাংলাদেশের মাথাপিছু জাতীয় আয় ১ হাজার ৩১৪ ডলার। তবে বিশ্ব ব্যাংকের পদ্ধতি অনুযায়ী তা এখন ১ হাজার ৪৫ ডলারকে ছারিয়ে গেছে।

এদিকে দেশীয় অর্থায়নে পদ্মা বহুমূখী সেতুর কাজ এগিয়ে চলছে। ১১ই ডিসেম্বর ২০১৫ পদ্মাসেতুর মুলকাজের অংশ হিসাবে ৭ নম্বর পিলার পাইলিং উদ্বোধন করেন প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা। মোট ৪২টি পিলারের উপর ৬.১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ দেশের সর্ববৃহৎ সেতু।

বর্তমান সরকার যুদ্ধাপরাধীদের মৃত্যুদন্ড বহাল রেখে ফাঁসি কর্যকর করেন । এ পর্যন্ত চার জনের মৃত্যু কর্যকর হয়েছে। ১১ এপ্রিল রাতে কামরুজ্জামান আর মুজাহিদ ও ২১শে নভেম্বর(সালাউদ্দীন কাদের চৌধুরী ও আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ)।

জাতি সংঘের খাদ্য ও কৃষি বিষয়ক সংস্থার (এফ এড) “দ্য স্টেট অব ফুড সিকিউরিটি-২০১৫” শীর্ষক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে জাতিসংঘের সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এম ডিজি) পূরনের ক্ষেত্র কৃষি ও খাদ্য নিরাপত্তা অর্জনে দক্ষিণ এশিয়ার বাংলাদেশ সবচেয়ে সফল।

৩১জুলাই ২০১৫ দুই দেশের সিটমহল বিনিময়ের মধ্য দিয়ে ৬৮ বছরের দীর্ঘ সীমান্ত জটিলতার স্থায়ী অবসান ঘটে।এতে ৬জুন ঢাকা সফরে আসেন ভারতের প্রধান মন্ত্রী নরেদ্র মোদি।সঙ্গে ছিলেন পশ্চিম বঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়।

আমরা যদি ক্রিকেট প্রসঙ্গে বলি তাহলে প্রথমে আসে আফগানিস্থান ও স্কটল্যান্ডের কথা – এই দুই দলকে হারিয়ে অ্যাডিলেডে বিশ্বকাপ থেকে ইংল্যান্ডকে হটিয়ে প্রথমবারের মত বাংলাদেশ কোয়ার্টার ফাইনালে।বিশ্বকাপের পর এবার ঘরের মাঠে পাকিস্থানের বিরুদ্ধে সিরিজ জয়। এরপর জুনে ভারতের সঙ্গে এক ম্যাচ বাকি থাকতে বাংলাদেশ জিতেছিল আবশ্য পরের ম্যচটিতে তাদের মান টিকে রেখে ছিল। চ্যাম্পিয়ন ট্রফিতে শেষ দুটি ওয়ানডে জিতে সিরিজ পকেটে। এরপর জিম্বাবুইকে ধবল ধোলায় করে দারুন সমাপ্তিরেখা টানল টাইগাররা।

উপগ্রহ, তা আবার নিজেদের মহাকাশে! থালস এলোনিয়া নামে ফরাসি-ইতালিয়ান কম্পানির সঙ্গে ২৪ কোটি ৮০ লাখ ডলারের চুক্তি করেছে বাংলাদেশ সরকার । বঙ্গবন্ধু-১ নামে প্রথম যোগাযোগ স্যাটেলাইট নির্মাণ করবে এই কম্পানিটি এবং নির্ধারিত কক্ষপথে সেটি স্থাপন করা হবে। ঐ যায়গাটি বরাদ্দ করতে এ পর্যন্ত ২ কোটি ৮০ লাখ ডলার খরচ হয়েছে।সফলভাবে উৎক্ষেপন হয়ে গেলে বঙ্গবন্ধু-১ দেশের অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থাকে অত্যন্ত মজবুত ও ঘাত সহনীয় করে তুলে আনবে ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে।

পোশাক রপ্তানি করে আমাদের এখন বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের দ্বার ক্রমান্বয়ে বেড়েই চলেছে।রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ই পি বি) তথ্য অনুযায়ী নতুন বাজারে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি মূল্য ক্রমেই বাড়ছে।বিজিএমই এর তথ্য অনুযায়ী আরো প্রায় ২৫ টি দেশে আমাদের পোশাক রপ্তানি হচ্ছে। এছাড়া উদ্যোক্তাদের উৎসাহিত করতে নতুন বাজারে তিন শতাংশ হারে প্রণোদণা দিচ্ছে বাংলাদেশ সরকার।

কয়েকদিন আগে আরো নতুন ছয়টি বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় অনুমোদন পেল। এ নিয়ে মোট বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা ৯১টি এ দাড়াল। উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হউক জাতি এটা মাথায় রেখে এই সব বিশ্ববিদ্যালয় সৃষ্টি। এ পর্যন্ত দেশে বেশ কয়েকটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় অনুমদিত হয়েছে বিশেষ করে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। আশা করা যাচ্ছে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা আরো বৃদ্ধি পাবে।তাই আমরা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কন্ঠে শুনতে পাই “প্রতিটি জেলায় জেলায় একটি করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিস্থাপিত হবে”। বে-সরকারী প্রাইমারী স্কুল গুলোকে সরকারীকরণ , মেয়েদের বিনা বেতনে অধ্যায়নের সুযোগ, প্রাইমারী স্কুলের ছাত্রদের ভাতা প্রদান, বিনামুল্যে মাধ্যমিক পর্যায় পর্যন্ত বই বিতরণ, সব কিছু মিলিয়ে মনে হচ্ছে শিক্ষাখাত একটি নজিরবিহীন দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।

অবশেষে শুরু হতে যাচ্ছে বহুল প্রতিক্ষিত মেট্রোরেলের নির্মাণ কাজ। রাজধানীর যানজট নিরসনে সরকারের এই পদক্ষেপকে আমরা স্বাগতম জানাই। ২০১৯ সালে এই প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়ন হবে, এছাড়াও ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম চার লাইনে চলবে গাড়ি, গাজীপুরে তারই ধারাবাহিকতায় কাজ চলছে। এর আগের সরকারগুলো রাজধানিকে দূষণমুক্ত করার জন্য সিএনজি ও ফোর স্টোক ইঞ্জিন চালু করেছিলেন।

আমাদের দেশ যে এগিয়ে যাচ্ছে এতে কোন সন্দেহ নেই। সেই ৭১ এর পর থেকে ভাঙ্গাচুড়া একটি সংসার তিলে তিলে উন্নয়নের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। একটি সমাজে ভাল-মন্দ উভয়ই বিদ্যমান থাকবে এটি পৃথিবীর সৃষ্টি লগ্ন থেকেই ছিল। আমাদের দেশের দিকে যদি তাকাই তাহলে দেখতে পারি- রানা প্লাজার ট্রাজেডি, বন্যা, সাইক্লোন, অগ্নিসংযোগ, সন্ত্রাসীদের আক্রমণ, ঘুস ও চাঁদাবাজি ইত্যাদি আমাদের দেশকে উন্নয়ন থেকে বাধা দিচ্ছে কিন্তু নাগরিক সচেতন একটি প্রধাণ বিষয় যা সরকারকে বিভিন্ন মাধ্যমে সচেতন করবে আর সোনার বাংলাকে বিশ্বের দরবারে তুলে ধরতে সহায়তা করবে। দেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবে এই আমাদের প্রত্যাশা।

 

লেখক- কবি, কলামিস্ট ও সম্পাদক 

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে