এম ডি বাবুল, চট্টগ্রাম জেলা প্রতিনিধি: উপমহাদেশের প্রখ্যাত আলেমেদ্বীন, দেশের শীর্ষ স্থানীয় দ্বীনি প্রতিষ্ঠান আল জামেয়াতুল ইসলামিয়া পটিয়ার মহাপরিচালক, সরকারের স্বীকৃতি প্রাপ্ত পাঁচটি কওমী শিক্ষাবোর্ড ‘আঞ্জুমান-ই-ইত্তিহাদুল মাদারিস বাংলাদেশ’ এর মহাসচিব, কওমী অঙ্গনের সর্বজনশ্রদ্ধেয় মুরব্বি আল্লামা শাহ আবদুল হালিম বোখারী সাহেব আমাদের কাছ থেকে চিরবিদায় নিয়েছেন।

আজ সকাল ১০টা ৪ মিনিটে চট্টগ্রাম সিএসসিআর হসপিটালে ইন্তেকাল করেন- ইন্না-লিল্লাহি ওয়াইন্না ইলাইহি রাজেউন।

আল্লামা শাহ আবদুল হালিম বোখারী সাহেব এর ইন্তেকালে গভীর শোক জ্ঞাপন এক বিবৃতি প্রদান করেছেন চট্টগ্রাম- ১৫ সাতকানিয়া লোহাগাড়া আসনের মাননীয় সংসদ সদস্য প্রফেসর ড. আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভী।

বিবৃতিতে তিনি বলেন, অল্প সময়ের ব্যবধানে এতজন প্রতিথযশা, শ্রদ্ধাভাজন ও শীর্ষস্থানীয় আলেমের ইন্তেকাল নিঃসন্দেহে দেশ-জাতি ও মুসলিম মিল্লাতের জন্য অত্যন্ত দুঃখজনক বিষয় ও অশনি সংকেত।

প্রথিতযশা আলেমদের মৃত্যুর মিছিলে সর্বশেষ হলেন কওমী অঙ্গনের সমকালীন অন্যতম প্রধান মুরব্বী আল্লামা শাহ আবদুল হালিম বোখারী সাহেব। তিনি বলেন, আল্লামা আবদুল হালিম বোখারীর মতো প্রতিথযশা, সমকালীন মুসলিম বিশ্বে অত্যন্ত শ্রদ্ধাভাজন শীর্ষস্থানীয় আলেমের ইন্তেকাল দেশ-জাতি ও মুসলিম মিল্লাতের জন্য অপুরনীয় ক্ষতি।

তাঁর ইন্তেকালে দেশের কওমি অঙ্গন একজন খ্যাতিমান অভিভাবক হারালো। তিনি ছিলেন একজন মুহাক্কেক আলেম।

সব বিষয়ে তাহকিক এবং তাদকিকের ক্ষেত্রে তিনি খুবই দক্ষ ছিলেন। যে কোন কঠিন বিষয় খুব সাবলীলভাবে উপস্থাপন করতে পারতেন।

এই বিদগ্ধ হাদীস বিশারদ ও হক্কানী আলেমেদ্বীন স্বভাবজাত বিনয়ী কথাবার্তায় সবাইকে খুব সহজেই মুগ্ধ করতে পারতেন।

ইলমি জ্ঞান-জগতের নানা শাখা-প্রশাখায় তাঁর ছিল অবাধ বিচরণ। তিনি একাধারে একজন ইসলামী পণ্ডিত, শিক্ষাবিদ, লেখক, গবেষক।

শিক্ষকতার পাশাপাশি বিভিন্ন বিষয়ে আরবি, উর্দু ও বাংলা ভাষায় বেশ কিছু কিতাবাদিও রচনা করেছেন। তিনি যেকোন কঠিন ও জটিল বিষয়ে ‘প্রত্যুৎপন্নমতি’ তথা তাৎক্ষণিক সহজভাবে উত্তর দিতে পারদর্শী ছিলেন।

প্রফেসর ড. আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভী এমপি বলেন, আল্লামা শাহ আবদুল হালিম বোখারী আমার অত্যন্ত প্রিয় শিক্ষক ছিলেন।

আল জামেয়াতুল ইসলামিয়া পটিয়ায় অধ্যয়নকালীন তাঁর অত্যন্ত স্নেহধন্য ছাত্র হবার সৌভাগ্য লাভ করি। উচ্চ শিক্ষা লাভের ক্ষেত্রে তাঁর বুদ্ধিবৃত্তিক পরামর্শ আমার অন্যতম পাথেয় ছিল।

তিনি আমার পরম নিকটাত্মীয় ছিলেন। আমার ‘আল কাওয়ায়িদুল ফিকহিয়্যা’ -এ তাঁর উচ্ছ্বসিত প্রশংসা ও অমূল্য অভিমত গ্রন্থটিকে সমৃদ্ধ করেছে।

আল্লামা শাহ আবদুল হালিম বুখারী জানুয়ারি ১৯৪৫ সালে চট্টগ্রামের লোহাগাড়া থানার রাজঘাটা গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত আলেম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম মাওলানা আব্দুল গণী বুখারী (রাহ.)। তাঁর পরদাদা সৈয়দ আহমদ বুখারী (রাহ.) উজবেকিস্তানের বোখারার বাসিন্দা ছিলেন।

প্রফেসর ড. আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভী এমপি মহান রাব্বুল আলামীনের কাছে আল্লামা শাহ আবদুল হালিম বুখারী (রাহ.) জন্য জান্নাতের আ’লা মাকাম কামনার পাশাপাশি তাঁর শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করেন।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে