মুহাম্মদ কাইসার হামিদ, কিশোরগঞ্জ জেলা প্রতিনিধিঃ তৃতীয় ধাপে ইউপি নির্বাচন উপলক্ষে কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচর উপজেলার ১নং গোবরিয়া আব্দুল্লাহপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ মনোনয়ন প্রত্যাশী প্রার্থীদের মনোনয়নের নামের তালিকায় প্রার্থীর নাম অন্তর্ভুক্ত না করে কেন্দ্রে পাঠানো ও গোবরিয়া আব্দুল্লাহপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি মো. আব্দুল আওয়াল হত্যা মামলার মূল আসামী বর্তমান গোবরিয়া আব্দুল্লাহপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. এনামুল হক আবু বক্করকে চেয়ারম্যান পদে নৌকার মনোনয়ন দেওয়ার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের অপর মনোনয়ন প্রত্যাশী সৈয়দ শামসুদ্দোহা সাফি।
মঙ্গলবার (২৬ অক্টোবর) বিকাল ৩ টার দিকে উপজেলার গোবরিয়া আব্দুল্লাহপুর ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে উপজেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক, সাবেক সদস্য ও গোবরিয়া আব্দুল্লাহপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ শামসুদ্দোহা সাফি সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে লিখিত বক্তব্য পাঠ করে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি জননেত্রী শেখ হাসিনা ও সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এঁর নিকট অভিযোগ করে বলেন, তৃতীয় ধাপে ১ নং গোবরিয়া আব্দুল্লাহপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে তিনি আওয়ামী লীগ থেকে দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার জন্য প্রায় দুই বছর যাবৎ স্থানীয় ও উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের নিকট প্রস্তাব রেখে মাঠে কাজ করে আসছেন। তৃতীয় ধাপে নির্বাচন কমিশন কর্তৃক তফসিল ঘোষণা হওয়ার পর আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয় ঢাকা থেকে মনোনয়নপত্র ক্রয় করে নির্ধারিত সময়ের একদিন আগে মনোনয়নপত্র পূরণ করে জমা দিয়েছেন তিনি। এর পর তিনি বিশ্বস্ত সূত্রে জানতে পারেন রহস্যজনক কারণে আওয়ামী লীগের যাছাই বাছায় নামের তালিকায় তার নাম অন্তর্ভুক্ত না করে মোট চার জনের নামের তালিকা দলীয় কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। সেই তালিকার কোথাও তার নাম নেই।
তিনি দাবী করে বলেন, ছাত্র জীবনে তিনি গোবরিয়া আব্দুল্লাহপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। বর্তমানে তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সমবায় ও কৃষি বিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক সদস্য ছিলেন। তার পিতা মরহুম মো. আব্দুল কাদির ছিলেন দেশ প্রেমিক বীর মুক্তিযোদ্ধা ও কারাগারের সুবেদার এবং প্রয়াত রাষ্ট্রপতি আলহাজ্ব মো. জিল্লুর রহমানের একান্ত আস্থাভাজন ব্যাক্তি। পাকিস্তান আমল থেকে জাতীয় চার নেতা, বঙ্গবন্ধু ও আলহাজ্ব মো. জিল্লুর রহমান ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি থাকা অবস্থায় চাকুরি হারানোর ভয় উপেক্ষা করে জীবন মরণ বাজি রেখে অতি গোপনীয়তার সহিত দলীয় ও তাঁদের চিঠি পত্র এবং সংবাদ আনা নেওয়া করতেন আওয়ামী লীগ নেতা সাফি’র পিতা বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল কাদির।
বংশগত ভাবে তিনি একজন আওয়ামী পরিবারের সদস্য ও নির্যাতিত নেতা এবং দেশের সূর্য সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধার সুযোগ্য সন্তান হয়েও কেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার তালিকায় তার নাম অন্তর্ভুক্ত করে পাঠানো হয়নি এমন প্রশ্ন রেখে শামসুদ্দোহা সাফি বলেন, ১নং গোবরিয়া আব্দুল্লাহপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে যাকে এবার দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে সে গোবরিয়া আব্দুল্লাহপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি মো. আবদুল আওয়াল হত্যা মামলার মূল আসামী। সাফিকে মনোনয়ন না দিয়ে একজন নিজ দলীয় নেতা হত্যা মামলার মূল আসামীকে মনোনয়ন দেওয়ায় এলাকায় বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। এতে করে দলীয় ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয়েছে। সৈয়দ শামসুদ্দোহা সাফি আরো বলেন, দলীয় মনোনয়ন যাছাই বাছাই নামের তালিকায় তার নাম অন্তর্ভুক্ত করে কেন্দ্রীয় দলীয় কার্যালয়ে পাঠানো হলে তিনি নির্শ্চিত দলীয় মনোনয়ন পেতেন এমন আশাবাদ ব্যাক্ত করেন গোবরিয়া আব্দুল্লাহপুর ইউনিয়নবাসী। বিষয়টি পূনরায় বিবেচনা করে পূর্বের মনোনয়নপত্র বাতিল করে সৈয়দ শামসুদ্দোহা সাফিকে দলীয় মনোনয়ন দেওয়ার জন্য বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি জননেত্রী শেখ হাসিনা ও সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এঁর নিকট জোরালো দাবী জানান।
এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, মো. ফালু মিয়া, মো. আব্দুস সাত্তার, মো. আসাদ মিয়া, মো. নূর আলী, মো. আরিফুল ইসলাম ও মো. বেলায়েত হোসেন বিপ্লব সহ প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ।