সিরাজগঞ্জ থেকে, মারুফ সরকারঃ যমুনা নদীর বুকে জেগে ওঠা ৩০/৩২টি চরে চলতি মওসুমে ৭৮০ হেক্টর জমিতে প্রায় ১১ হাজার মেট্্িরকটন চিনাবাদাম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ মওসুমেও বাদামের বাম্পার ফলনের আশা করছেন চাষিরা। বাদাম চাষ করে চরের প্রায় ৪ হাজার ভূমিহীন বর্গাচাষি ভাগ্য পরিবর্তন করেছেন।
এ উপজেলার পূর্ব পাশ দিয়ে প্রবাহিত যমুনার চরে এ বছর বাদাম চাষ করেছেন প্রায় ৫ হাজার চাষি। যমুনা নদীর ভাঙনে কাজিপুরের বিভিন্ন গ্রামের প্রায় ৪০ হাজার পরিবার মানবেতর জীবনযাপন করে আসছিল। বাদাম চাষ করে নদীভাঙা মানুষের মুখে এখন হাসি ফুটেছে।কাজিপুর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, গত দুই বছর চরাঞ্চলের পলিযুক্ত বেলে-দোআাঁশ মাটিতে ৭৮০ হেক্টর জমিতে ১১ হাজার মোট্্রকটন বাদাম উৎপন্ন হয়। বাদাম চাষ করে চরাঞ্চলের ৪ হাজার ভূমিহীন বর্গাচাষি পরিবারে এসেছে সচ্ছলতা। চিনাবাদামের বাম্পার ফলন ও ভালো দাম পাওয়ায় চাষিরা লাভবান হয়েছেন।
চলতি মওসুমে গত বছরের চেয়ে বেশি জমিতে বাদাম আবাদ হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবারো বাদামের বাম্পার ফলন হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন কৃষি অধিদফতরের কর্মকর্তারা।সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, যমুনার বুকে জেগে ওঁঠা নাটুয়ারপাড়া, ঘোড়াগাছা, রেহাইশুড়িবেড়, পানাগাড়ী, চরপানাগাড়ী, তেকানী, খাসরাজবাড়ী, যুক্তিগাছা, মাজনাবাড়ী, শালগ্রাম, শালদহ, চরছিন্না, চরগিরিশ, রঘুনাথপুর, নিশ্চিন্তপুর, শুভগাছা, নতুন মাইজবাড়ী, পীরগাছা, সানন্ধাসহ ছোট-বড় ৩০/৩২টি চরের জমিতে বাদাম চাষ হয়েছে। বাদামচাষিদের সাথে কথা বলে জানা যায়, চরাঞ্চলে বাদাম চাষের সম্ভাবনার পাশাপাশি রয়েছে নানা সমস্যা।
বীজসস্কট বাদাম চাষের প্রধান সমস্যা। চাষিরা স্থানীয়ভাবে দেশী পদ্ধতিতে বাদামবীজ সংরক্ষণ করায় অনেক সময় ভালো ফলন পাওয়া যায় না। চরাঞ্চল হওয়ায় বাদাম চাষে কৃষি বিভাগের পৃষ্ঠপোষকতা ও সহযোগিতা পাওয়া যায় না বলে বাদাম চাষিরা অভিযোগ করেন।কাজিপুর উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মামুনুর রহমান জানান, আবহাওয়া অনূকূলে থাকা ও সময়মতো বৃষ্টি হওয়ায় এ বছর বাদামের দানা পুষ্ট হয়েছে। এ বছর বাদাম গাছে তেমন কোনো রোগবালাইয়ের আক্রমণ নেই। ফলে এ অঞ্চলে বাদামের বাম্পার ফলন হবে বলে তিনি আশা করেন।