বিডি নীয়ালা নিউজ(১২ই এপ্রিল১৬)-অনলাইন প্রতিবেদনঃ এমন একটি দেশের কথা কল্পনা করুন তো যেখানে পিতামাতার কাছ থেকে বহু দূরে থেকেই শিশুরা বেড়ে উঠছে।
এই ঘটনাটিই ঘটছে আজকের চীনে। এরকম শিশুর সংখ্যা ৬ কোটি ১০ লাখ, যারা পিতামাতার সান্নিধ্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
কিন্তু কেনো? এর পেছনে কারণ কি?
চীনে এটা খুব বেশি দিন আগের কথা নয় যখন বেশিরভাগ মানুষই গ্রামে বসবাস করতো।
তাদের একমাত্র কাজ ছিলো কৃষিকাজ আর গবাদি পশু লালন-পালন করা।
গ্রামীণ জীবন ছিলো খুবই কঠিন, কঠোর সংগ্রাম করে বেঁচে থাকতে হতো। লোকজনও ছিলো হত-দরিদ্র।
কিন্তু তারপরই সবকিছু বদলে যেতে শুরু করলো। গড়ে উঠতে শুরু করলো হাজার হাজার কল কারখানা।
সারা পৃথিবীতে লোকজন যেসব জিনিস কিনতে চায় সেগুলো উৎপাদন করা হয় এসব কারখানায়।
তখন গড়ে ওঠা নতুন নতুন এসব শহরে গ্রাম-গঞ্জ থেকে ছুটে আসতে শুরু করে কোটি কোটি মানুষ।
উদ্দেশ্য আর কিছুই না, কারখানায় কাজ করে কিছু অর্থ উপার্জন করা।
কিন্তু শিশুদেরকে সাথে আনার অনুমতি ছিলো না তাদের।
এরকমই এক শিশু থাঙ ইওয়ান। ওর বয়স ১১ বছর। সে থাকে তার দাদী, ভাই এবং দু’জন কাজিনের সাথে।
তার বাবা মা থাকে আরেকটি শহরে। চাংদু শহরের গার্মেন্ট কারখানায় কাজ করে তারা দুজনেই।
থাঙ জানায়, তার বাবা মায়ের রোজগার খুব বেশিকিছু নয়। তারা তাকে সময়ও দিতে পারে না। কারণ তাদেরকে কারখানায় কঠোর পরিশ্রম করতে হয়।
মা বাবা যখন বাড়িতে আসে তখন ও দৌড়ে অনেক দূর পর্যন্ত এগিয়ে যায় যাতে আরো অনেক আগেই সে বাবা মায়ের কাছে গিয়ে পৌঁছাতে পারে।
“আমার সবচে ভালো লাগে যখন আমি ওদের সাথে মাছ ধরতে যাই। আমি একা একটা দুটো মাছ ধরতে পারি। কিন্তু আমার বাবা মা যখন এখানে থাকেন তখন আমরা প্রচুর মাছ ধরতে পারি,” বলছিলো থাঙ।
সে জানায় চীনা নববর্ষের সময় তার পিতামাতা একটু লম্বা সময় ধরে তার সাথে থাকতে পারেন।
সে জানায় বাবা মা তাকে খুব কমই দেখতে আসে। কারণ এটা তাদের জন্যে অনেক কঠিন একটা কাজ। আসলেও খুব অল্প কিছু সময় থাকার পর তাদেরকে আবার চলে যেতে হয় শহরে।
থাঙ বলতে থাকে, “বাবা মাকে ছেড়ে একা থাকা খুব কষ্টের। আমার ইচ্ছা করে, ইশ আমি যদি ওনাদের সাথে থাকতে পারতাম। ওদের কাছ থেকে আমি আলাদা থাকতে চাই না। তবে আমি এটাও জানি এখানে থাকা তাদের জন্যে সম্ভব না কারণ তারা
এখানে খুব বেশি অর্থ রোজগার করতে পারে না। আমি তাদের জন্যে কোনো সমস্যা তৈরি করতে চাই না।”
“আমি ওদেরকে খুব মিস করি।”
থাঙ বলে যে সে এখান থেকে যেতে চায় না। বড় হয়ে এখানেই সে একটি কারখানায় বস হিসেবে কাজ করতে চায়।
“আমি আমার সন্তানদেরকে সাথে নিয়ে এক জায়গায় থাকতে ও কাজ করতে চাই।”
সূত্রঃ বিবিসি