IMG_3644

মাহফুজার রাহমান মণ্ডল রাচিত কবিতাসমুহ

রেখা

রেখাকে প্রশ্ন কর, সে কোন দিকে যাবে,

যে দিগেই যাক না কেন, সীমাবদ্ধ আছে।

সরলভাবে চলতে চাই, সরল রেখা বলে,

না, কৈফিয়ত দিতে হবে ত্রুটি করলে।

সভ্য জাতিকে সাজালে শান্তি মেলে

কুসংস্কার শীর্ণ জীর্ণ কুকর্মে থাকে।

পৃথিবীর উপর সমান্তরালে টানিলে রেখা,

সরল রেখার থাকে না সরলতা,

সরাসরি চলে আসে বক্রতা

যার নাম বক্র রেখা,

বক্রে না চলিলে কার্য হয়না সম্পাদন।

যে রেখায় চলুক না কেন,

রেখার কাহিনী রেখার মনেই থাকে।

যদি রেখা কোন দিন জীবন্ত হয়

সরলটা বাদ দিয়ে চলবে

এটাই যেন তার রীতিতে রয়।

বিদ্রোহ তোমার জন্য

তুমি কি অনুভব করতে পার না?

তোমার বুকের উপর কত অন্যায় আর অত্যাচার।

শতশত মায়ের কোল খালির হাহাকার।

তুমি কি শুনিতে পার না?

বিকট সেই গ্রেনেডের শব্দ আর  বন্দুক যুদ্ধ।

তোমার বুকের উপরে মানুষের চিৎকার আর ইমারত বিধ্বস্ত।

তুমি কি দেখতে পার না?

আমি এদের একজন প্রতিবাদ নিয়ে নিরবে চলছি

হাতে নিয়ে স্বাধীন অস্ত্র লেখার মধ্যে তোমায় জানাচ্ছি।

তুমি কি ঘ্রাণ নিতে পার না?

পরে থাকা লাশের গন্ধ, পরিবেশ দূষণের, অস্ত্র,

যারা বেঁচে আছে সব কিছু সহ্য করে নিরব নিরন্তে।

তুমি কি সাধ গ্রহণ করতে পার না?

বিভিন্ন ঋতুর বিভিন্ন খেলায় রঙবেরঙের মাঠে

আজ সব কিছু পরিবর্তন হচ্ছে পরিবেশ দূষণের কারণে

যদি তুমি বুঝতে পার, চিৎকার করে বল,

বুঝেছি, চিৎকার করার ক্ষমতা তোমার নেই।

আছে দেখার শক্তি, তবু নিরব কেন, এই

সংশয়ের মাঝে,

আমাকে অস্ত্র দাও না হলে খাবার দাও।

তুমি আমার জন্য কি করবে তা জানিনা,

তবে আমি পেয়েছি স্বাধীন অস্ত্র

যা চোখে দেখা দায় কিন্তু কারও শক্তি নেই ছিনিয়ে নেওয়ার,

তুমি যদি চাও দেখতে পারবে আমার ক্ষমতা

আমি শুধু তোমার জন্য যুদ্ধে নেমেছি,

আর যুদ্ধ চালিয়ে যাব নিরব নিরন্তে।

কলম পৃথিবীর মাঝে

ঘোরে কলমের মাথা, পৃথিবীর মত

আছে সাধু, ভণ্ডামী, কলমে যত

সাধু বলে পরিচিত হয়, কলম সুনাম ধন্য

ভণ্ডামী হলে পরে সবাই করে অমান্য।

মানুষের মাঝে আছে যত গ্লানি আর মিথ্যা

সবকিছু ফুটে উঠে কলমের মধ্যে দিয়ে।

কলম দিয়ে মানুষ হয় বিদ্যার সাগর

কলমে পৌঁছে দেয় মানুষকে মহানগর।

কবিগণ লিখেছিলেন যতসব কবিতা,

তাও সম্ভব হয়েছিল কলমের মধ্যে দিয়ে

কলম ছাড়া পৃথিবী হয় অন্ধকার

কলম হলে পৃথিবী হয় উজ্জ্বল।

ল্যাম্পহীন পোস্ট যেমন হয় শ্রীহীন

তেমনি কলম ছাড়া শিক্ষিত জাতির হয় প্রাণহীন।

রাজপুত্র

আমি রাজার ছেলে, আমি রাজা হব,

রাজতন্ত্র নেই, রাজতন্ত্র গঠন করব।

শোষক যারা আছেন, তাদের সাথে মিশে যাব,

পৃথিবীর এ প্রান্তে ও প্রান্তে ছুটে বেড়াব।

রাজা আছেন, রাজ্য চালাবেন

ভূমির দরকার তিনি ভূমি দিবেন

অর্থের দরকার তিনি অর্থ দিবেন

কিভাবে দিবেন তিনি ভাল করে জানেন।

আমি রাজার ছেলে আমি রাজা হব,

প্রাসাদের প্রয়োজন আমি প্রাসাদ বানাব।

আমি হব দেশের শ্রেষ্ঠ ধনী

চাই আমার বেশী বেশী গাড়ি বাড়ি।

রাজার হুকুমে রাজ্য চলে

এই সুযোগে প্রাসাদ গড়বে,

রাজকুমার আমি সবাই মানবে

পরে কী হবে দেখা যাবে।

রাজ্যের ধন পরের দেশে

যা জমাব তাই আমার সাথে

চিন্তা করে জমাই পয়সা

ভবিষ্যৎ মোর নেইকো আশা।

আমি রাজার ছেলে আমি রাজা হব,

বিরোধী দল আমাকে মানতে নাহি পারে

সংগ্রাম আমার চলতে থাকবে।

প্রজারা যদি সমর্থন নাই করে

অর্থ দিয়ে তাদের কিনতে হবে।

অর্থ আসবে কোথা থেকে

রাজা আমাকে যা দিয়েছেন বাক্স ভরে।

তাই আমি রাজপুত্র বটে প্রজাদের আশীর্বাদে।

অবুজ শিশু

টাপুর টুপুর বৃষ্টি পড়ে

খোকা বাবুর পরাণ নাচে,

মা গেছে রান্না ঘরে

খোকা বাবু বৃষ্টিতে ভিজে।

পাড়ার ছেলেরা হৈ চৈ করে

খোকা বাবু তাদের সঙ্গে মিশে,

এমন সময় চিৎকার করে

খোকা বাবুর নাম ধরে।

ডাক্তার বাবু ছুটে আসে

মাথায় তার সেলাই করে।

গায়ের ছেলেরা সবাই বলে

খোবা বাবু বুঝি নাই ফিরে

ডাক্তার বাবু চিৎকার করে

সকলকে বলতে থাকে-

খোকা বাবুর প্রাণ বাঁচবে বটে,

আর যেন কেউ অবুঝ শিশুর মত

শিশুদেরকে ছেড়ে ব্যস্ত না থাকে।

বাংলার নেতা

ও পিঁপিলিকা ভাই কোন দিকে যাই?

দেহের আকারে শক্তি তুলনা নেই।

সামনে বর্ষা খাদ্যের সন্ধানে যাই,

তাই তোমার আমার তুলনায় লাভ নেই।

তোমার দেহের ওজন এতই ভারী

আমার মত লক্ষ পিঁপিলিকা সালাম করি,

তোমার হুংকারে বাড়ি আর গাড়ি

আমার মত পিঁপিলিকার নেই কারবারী।

তোমার সরকার আর কত দিন আছে শুনি

এর পরত কমে যাবে তোমার বাহাদুরী

তোমার কণ্ঠে এখন আছে যত শক্তি

হ্রাস হয়ে যাবে আছে যত যুক্তি।

তাই আমি পিলপিল করে চলি

আনন্দে সুরে সুরে গান ধরি।

 

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে