প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকার জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে সবসময়ই কৃষিখাতকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে আসছে। সরকার দেশব্যাপী ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তুলেছে। এতে কৃষিনির্ভর শিল্পের কাঁচামাল সরবরাহে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনসহ ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।
সোমবার (৩ অক্টোবর) ‘বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পুরস্কার প্রদান’ উপলক্ষে দেওয়া বাণীতে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, কৃষিক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য ‘বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পুরস্কার ১৪২৫ ও ১৪২৬’ দেওয়া হচ্ছে জেনে আমি আনন্দিত। এ উপলক্ষে আমি সংশ্লিষ্ট সবাইকে শুভেচ্ছা জানাই। পুরস্কার বিজয়ীদের জানাচ্ছি আন্তরিক অভিনন্দন।
শেখ হাসিনা বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশ স্বাধীনের পর কৃষিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ পুনর্গঠনের কাজ শুরু করছিলেন। তিনি বিশ্বাস করতেন নদীমাতৃক এ দেশে কৃষিঅর্থনীতি সামাজিক কর্মকাণ্ডের মূল চালিকাশক্তি। তিনি গরিব কৃষকদের ২৫ বিঘা পর্যন্ত জমির খাজনা মওকুফ করেন এবং পরিবারপ্রতি সর্বোচ্চ ১০০ বিঘা পর্যন্ত জমির সিলিং নির্ধারণ করেন।
তিনি বলেন, কৃষকদের মধ্যে কৃষিপণ্য বিতরণের পাশাপাশি বঙ্গবন্ধু কৃষি গবেষণায় গুরুত্ব দেন। এজন্য কৃষিবিষয়ক উচ্চশিক্ষা ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান পুনর্গঠনে উদ্যোগী হন। গঙ্গা কপোতাক্ষ সেচপ্রকল্প চালুর ব্যবস্থা করেন। তিনি সবুজ বিপ্লব তথা কৃষিবিপ্লবের ডাক দিয়েছিলেন। কৃষি উন্নয়নে অনুপ্রেরণা জোগানোর লক্ষ্যে কৃষিক্ষেত্রে অবদানের জন্য জাতির পিতা ১৯৭৩ সালে ‘বঙ্গবন্ধু পুরস্কার তহবিল’ গঠন করেন এবং জাতীয় পর্যায়ে ‘বঙ্গবন্ধু পুরস্কার’ প্রবর্তন করেন।
সরকারপ্রধান বলেন, কৃষিপণ্যের রপ্তানি বৃদ্ধিতে আমরা উত্তম কৃষিচর্চা নীতিমালা ২০২০ অনুসরণে ফসল উৎপাদন, আধুনিক প্যাকিং হাউজ নির্মাণ, অ্যাক্রিডিটেড ল্যাব স্থাপনসহ বিভিন্ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছি। আমাদের সরকার ‘বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পুরস্কার ট্রাস্ট আইন, ২০১৬’ প্রবর্তনের মাধ্যমে ‘বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পুরস্কার’-কে আইনগত ভিত্তি দিয়েছে। কৃষিক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জনকারী ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান তাদের কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ রাষ্ট্রীয় পর্যায়ের এ পুরস্কার পাচ্ছেন, যা অন্যদেরও অনুপ্রাণিত করছে।
শেখ হাসিনা আরও বলেন, করোনা মহামারির মধ্যেও কৃষি নিরবচ্ছিন্নভাবে দেশের বিপুল জনগোষ্ঠীর খাদ্য যোগানের পাশাপাশি অর্থনীতির চাকাকে সচল রাখতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। কৃষিখাতে আমাদের সময়োপযোগী পদক্ষেপের কারণে খোরপোষের কৃষি আজ বাণিজ্যিক কৃষিতে রূপান্তরিত হয়েছে এবং খাদ্যশস্য উৎপাদনে বিশ্বে বাংলাদেশ শীর্ষ ১০-এ স্থান করে নিয়েছে।
তিনি বলেন, কৃষিজমি কমতে থাকা, জনসংখ্যা বৃদ্ধিসহ জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বন্যা, খরা, লবণাক্ততা ও বৈরি প্রকৃতিতেও খাদ্যশস্য উৎপাদনে বাংলাদেশ এখন বিশ্বের উদাহরণ। আমাদের লক্ষ্য কৃষিখাতে বর্তমান প্রয়াসকে আরও বেগবান করে ২০৩০ সালের এসডিজি লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করে ২০৪১ সালের মধ্যে জাতির পিতার ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত, উন্নত-সমৃদ্ধ স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়ে তোলা। সবার সহযোগিতায় এ লক্ষ্য অর্জনে আমরা সফল হবো। আমি ‘বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পুরস্কার ১৪২৫ ও ১৪২৬’ প্রদান অনুষ্ঠানের সার্বিক সাফল্য কামনা করছি।
Jag/N
