জয়নাল আবেদীন হিরো, নীলফামারী জেলা প্রতিনিধিঃ গোদরোগ তথা থ্যালাসমিয়া রোগের জন্য বিশ্বের সর্বপ্রথম চিকিৎসা কেন্দ্র সৈয়দপুর ফাইলেরিয়া এন্ড জেনারেল হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের নবগঠিত পরিচালনা কমিটির অভিষেক হয়েছে।

বুধবার (১১ মে) রাত ৯টায় প্রতিষ্ঠানটির কনফারেন্স রুমে এই পরিচিতি সভার আয়োজন করা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন কমিটির নির্বাহী পরিষদের সভাপতি জিকো আহমেদ। প্রধান অতিথি ছিলেন হাসপাতালের পরিচালক ও বাংলাদশ পল্লী চিকিৎসক এসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় সদস্য সচিব ডা. রাকিবুল ইসলাম তুহিন।

সাধারণ সম্পাদক ও হাসপাতালের কো-অর্ডিনেটর সৈয়দপুরের একমাত্র দৈনিক পত্রিকা মুক্তভাষা’র প্রকাশক ও সম্পাদক ফয়েজ আহমেদ’র সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সভায় প্রথমেই উপদেষ্টা ও নির্বাহী কমিটির সকল সদস্যকে ফুলের মালা ও তোরা দিয়ে বরণ করে নেয়া হয়।

এরপর আলোচনায় অংশ নেন উপদেষ্টা পরিষদের নতুন সদস্য নীলফামারী জেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা ডা. মো. রাশেদুল হক, নির্বাহী পরিষদের নতুন কার্যকরী সভাপতি হাসপাতালের জমিদাতার ছেলে বিশিষ্ট শিল্পপতি বাবুল হোসেন, নতুন কার্যকরী সদস্য মালারানী চক্রবর্তী ও শফিকুল ইসলাম তোতা প্রমুখ।

প্রধান অতিথি তাঁর বক্তব্যে বিশ্বের তৎকালিক একমাত্র ফাইলেরিয়া হাসপাতালটিকে নিজ দায়িত্বে মৃতপ্রায় অবস্থা থেকে উত্তরণে বিগত একবছর সাফল্যের সাথে কাজ করায় কমিটিকে সাধুুুুবাদ জানান।

পূূর্বের কমিটিতেই নতুন করে অভিজ্ঞ ও দায়িত্ববান কয়েকজন ব্যক্তিকে অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে নির্বাহী পরিষদ এবং পৃৃৃথক একটি উপদেষ্টা পরিষদ গঠন করায় সংশ্লিষ্ট সকলকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জ্ঞাপন করেন।

হাসতালের হারানো ঐতিহ্য ও জৌলুশ ফিরিয়ে এনে গোদ তথা থ্যালাসেমিয়া ও ফাইলেরিয়া রোগের পাশাপাশি সাধারণ রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিয়ে ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন উল্লেখ করে এজন্য কমিটি ও কর্মকর্তা কর্মচারীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে, অচিরেই প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক রাষ্ট্রের সর্বোাচ্চ খেতাবে ভূষিত হবে এই প্রতিষ্ঠানটি। তাই সর্বাত্মক প্রয়াস ও আন্তরিকতা দিয়ে রোগীর সেবা নিশ্চিত করতে তিনি কর্মকর্তা কর্মচারীদের প্রতি বিশেষ অনুরোধ জানান।

এক্ষেত্রে অগ্রগতি পরিলক্ষিত হলেই রংপুর দিনাজপুরই শুধু নয় সুদূর ঢাকা থেকে প্রতিনিয়ত ডাক্তার এনে সার্ভিস দেয়া হবে। সেইসাথে কর্মকর্তা কর্মচারীদের বেতনভাতা স্থায়ীকরণসহ অন্যান্য সুযোগ সুবিধাও বৃদ্ধি করা হবে বলে আশ্বাস দেন তিনি।

নতুন কার্যকরী সভাপতি বাবুল হোসেন বলেল, এলাকার মানুষের সুবিধার জন্যই আমার মরহুম বাবা হাজী দবির উদ্দীন সরদার হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার জমি দান করেছিলেন। তাঁর স্মৃতিবহ এই প্রতিষ্ঠানের সার্বিক উন্নয়নকল্পে আমরা সর্বাত্মকভাবে সহযোগীতা করতে সদা প্রস্তুত।

এখন একটা দায়িত্বপূর্ণ পদে আসায় সেইক্ষেত্রে আরও বেশি দায়িত্ব এসে পড়লো আমার উপর। তাই আমিসহ আমার পরিবার সামর্থ্যানুযায়ী সর্বোাচ্চ দিয়ে এই হাসপাতালটিকে উন্নয়ন ও সেবার মডেলরুপে গড়ে তুলতে বদ্ধপরিকর। সকলের প্রতি দোয়া ও সহযোগীতা প্রত্যাশা করেন।

জিকো আহমেদ তাঁকে আবারও সভাপতি করায় সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে নতুন কমিটির প্রতি আস্থা রেখে নিজ নিজ দায়িত্ব সঠিক ও সুচারুভাবে সম্পাদনে কর্মকর্তা কর্মচারীদের প্রতি আহ্বান জানান।

সাধারণ সম্পাদক ফয়েজ আহমেদও একইভাবে সকলকে সাধুবাদ জানান এবং অতীতের মত আগামীতেও সম্মিলিত প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখে হাসপাতালের মান উন্নয়নে তাঁর সর্বাত্মক সহযোগীতার শপথ পূনর্ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, এই হাসপাতাল বিশ্বের মধ্যে অন্যতম বিশেষায়িত স্বাস্থ্য সেবা প্রতিষ্ঠান।

যা আমাদের ধলাগাছ তথা সৈয়দপুরবাসীর সম্পদ। এটাকে রক্ষার দায়িত্ব আমাদেরই। সেই চেতনাবোধ থেকেই আমরা নানা প্রতিবন্ধকতায় বন্ধ হয়ে যাওয়া এই হাসপাতালটিকে পূন:রুদ্ধার করতে প্রায় শূন্য অবস্থাতেই নিজ দায়িত্বে কাঁধে তুলে নেই।

বহু ঘাত প্রতিঘাত ও চড়াই উৎরাই পেরিয়ে সকল ষড়যন্ত্র ও প্রোপাগান্ডা মোকাবিলা করে আজ একটা অবস্থানে আনতে পেরেছি। এখনও আমাদের কাঙ্খিত পর্যায়ে নেয়া সম্ভব হয়নি। তাই আমাদের কে আরও সংগ্রাম করতে হবে। এজন্য সংশ্লিষ্ট সকলকেই সৈনিক হয়ে যুদ্ধ জয়ে ব্রতি হতে হবে। তাহলেই আমরা সফল হবো।

তিনি বলেন, আশার কথা হলো যে, আমাদের সেই সংগ্রামে সহযোদ্ধা হয়ে যোগ দিয়েছেন জমিদাতার সুযোগ্য সন্তান বাবুল হোসেন, অভিজ্ঞ সাংগঠনিক ব্যক্তিত্ব মালা রানী চক্রবর্তী, ডা: রাশেদুল হক। তাদের সহায়তায় নতুন গতি সঞ্চারিত হবে।

পরিচালক মহোদয়ের সুপরামর্শ আর প্রশাসনিক ও লজিস্টিক সহায়তার পাশাপাশি নিয়মিত বেতন ভাতার নিশ্চয়তা প্রদান করায় পুরে টিম উজ্জীবিত হয়েছে। তাই আশা করি গত একবছরের চেয়ে আগামী দিনে আরও দ্বিগুণ গতিতে কাজ হবে। যা আমাদের সাফল্যকে ত্বরান্বিত করবে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে