৭৫ পরবর্তী সময়ে অন্য যে কারো আমলের চেয়ে শেখ হাসিনার আমলে দেশে মানুষ বেশি ভালো আছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

শনিবার (১৬ এপ্রিল) সকালে ২৩ বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ উপকমিটি আয়োজিত অসহায় ব্যক্তিদের সহায়তা প্রদানকালে তিনি এ কথা বলেন।

রমজান উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে এতিম, প্রতিবন্ধী, অসহায়দের মধ্যে ইফতার সামগ্রী বিতরণ এবং ঘাতকের আঘাতে নিহত উমামা বেগম কনকের পরিবার ও ক্যানসারে আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে নগদ অর্থ সহায়তা দেওয়া হয়।

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, বাংলাদেশে অনেক সরকার এসেছে বঙ্গবন্ধু হত্যার পর। জনগণকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, প্রতিশ্রুতির বরখেলাপ করেছে। ওয়াদা করেছে, ওয়াদা ভঙ্গ করেছে। গণতন্ত্রের নামে গণতন্ত্রের মুখোশ পরা বর্ণচোরা। এ রাজনীতিতে সবাই চিহ্নিত। আমি বুকে হাত দিয়ে বলতে পারি, ৭৫ পরবর্তীকালে শেখ হাসিনার আমল ছাড়া অন্য কারো আমলে বাংলাদেশ এত ভালো ছিল না। শেখ হাসিনার আমলে বাংলাদেশ বেটার দ্যান বিফোর।

কাদের বলেন, আমাদের ভুল-ত্রুটি আছে। আমরা দেশ পরিচালনা করি, ভুল-ত্রুটি আমাদের থাকতেই পারে। তবে আমরা দেশটাকে যত ভালো চালিয়েছি এবং চালিয়ে যাচ্ছি, এ দেশকে যা দিয়েছি এবং দিয়ে যাচ্ছি তা অন্য কেউ বঙ্গবন্ধুর পর দিতে পারেনি। তারা নিজেদের ভাগ্য উন্নয়ন করেছে। আর শেখ হাসিনা এ দেশের মানুষের ভাগ্য উন্নয়ন করার জন্য ক্ষমতায় আছেন এবং তিনি জনগণের ভাগ্য উন্নয়নের জন্যই অবিরাম কাজ করে যাচ্ছেন।

সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, একটু চিন্তা করে দেখেন বড় বড় কথা যারা বলে, চার দিকে আজ যা অবস্থা, বিশ্ব বাজারে যে সংকট, প্রবৃদ্ধির সংকট, জ্বালানি এসবের জন্য সাংঘাতিক সংকটের মধ্য দিয়ে চলছে বিশ্ব। আমাদের প্রতিবেশী পাকিস্তানের অবস্থা দেখুন, শ্রীলঙ্কার অবস্থা দেখুন। তুলনা করে দেখুন। আজ বাংলাদেশের মানুষ যত ভালো আছে, এত ভালো কী কোনো দিন ছিল ৭৫ এরপর?

বিএনপির সমালোচনা করে ওবায়দুল কাদের বলেন, এ দেশের গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি, গণতান্ত্রিক কাঠামো-প্রতিষ্ঠান বারবার ধ্বংস করেছে বিএনপি। তাদের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান সংবিধান, সেনা আইন লঙ্ঘন করে অবৈধভাবে নিজেকে রাষ্ট্রপতি হিসেবে ঘোষণা দিয়ে ক্ষমতা দখলের মাধ্যমে বাংলাদেশের সংবিধান, সব প্রতিষ্ঠানের প্রাতিষ্ঠানিক ক্ষমতাকে ধ্বংস করে দেয়।

আওয়ামী লীগের এ নেতা বলেন, জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধু হত্যায় মদদ দিয়ে…সেদিন যে দুঃসাহস খুনিরা করেছে, জিয়াউর রহমান সঙ্গে না থাকলে এ রকম বর্বর ঘটনা ১৫ আগস্ট হতে পারতো না। এই হত্যাকাণ্ডের মধ্যে খুনিদের প্রশ্রয় দিয়ে, পুরস্কৃত করে জিয়াউর রহমান এ দেশে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে কর্ম সম্পর্কে অলঙ্ঘনীয় দেয়াল তুলেছে, কর্ম সম্পর্কে অলঙ্ঘনীয় দেয়াল সৃষ্টি করে গণতন্ত্রের প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পাওয়ার পথকে রুদ্ধ করে দিয়েছে।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে উদ্দেশ্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, আওয়ামী লীগ নাকি ছদ্মবেশী একদলীয় শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে চায়। বিএনপি মহাসচিবের এ ধরনের বক্তব্য শুনলে জনগণের হাসি পাওয়ার কথা। জনগণ দেখেছে, বিএনপি একদিকে ভোটে আসে না। আবার নির্বাচিত হয়েও মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সংসদে যান না। বিএনপি নির্বাচিত প্রতিনিধিরা সংসদে সোচ্চার। তাহলে কীভাবে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা হলো?

তিনি বলেন, বিএনপি বহুদলীয় গণতন্ত্রের মুখোশের আড়ালে যা করেছিল তা ভুলে যায়নি বাংলাদেশের মানুষ। তাদের ছদ্মবেশী বহুদলীয় গণতন্ত্র ছিল বহুদলীয় তামাশা। আমরা সেই তামাশার গণতন্ত্রে আমরা বিশ্বাস করি না।

ওবাযদুল কাদের বলেন, আমরা জনগণের শক্তিতে আস্থাবান, আমাদের শক্তির উৎস বাংলাদেশের জনগণ। পৃথিবীর অন্যান্য গণতান্ত্রিক দেশে যেভাবে নির্বাচন হয়, বাংলাদেশেও সে রকম হবে। নির্বাচন ফ্রি অ্যান্ড ফেয়ার করার জন্য দরকার নিরপেক্ষ নির্বাচন ব্যবস্থা। তখন সরকারের কোনো ভূমিকা থাকবে না। সরকার শুধু নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানে নির্বাচন কমিশনকে বিভিন্ন সহায়তা করবে।

কাদের আরও বলেন, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, প্রশাসন সব থাকবে নির্বাচন কমিশনের অধীনে। সরকারের অধীনে কিছুই থাকবে না। আমরা বিএনপিকে অনুরোধ করবো। আসলে শেষ পর্যন্ত আধা ঘোলা করে পানি খায়। আপনারা আসবেন কিন্তু পানি ঘোলা করে। নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা করে লাভ নেই। বাংলাদেশ একটি ফ্রি অ্যান্ড ফেয়ার ইলেকশনের দিকে যাচ্ছে।

ban/N

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে