xe644tm128qn7251461521222

ডেস্ক রিপোর্টঃ স্বল্পদৈর্ঘ্য বা প্রামাণ্য চলচ্চিত্র কিংবা মুক্তধারার পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রগুলো যখন প্রদর্শন জটিলতায় ভুগছে, তখনই রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমিতে প্রেক্ষাগৃহ নির্মাণের ঘোষণা দিলেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর।

শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালার পাঁচতলা ভবনটি উর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণ করে সেখানে প্রেক্ষাগৃহ নির্মাণ করা হবে জানান তিনি।

রোববার শিল্পকলা একাডেমিতে বাংলাদেশ স্বল্পদৈর্ঘ্য ও প্রামাণ্য চলচ্চিত্র উৎসব উদ্বোধন করে মন্ত্রী বলেন, “শিল্পকলার এই প্রেক্ষাগৃহে প্রতিদিন একাল-সেকালের ভালো চলচ্চিত্রগুলো প্রদর্শিত হবে। সিনেমার দর্শককে টিকিয়ে রাখতে হবে আমাদের।” পর্যায়ক্রমে সারা দেশের শিল্পকলা একাডেমির মিলনায়তনগুলোও চলচ্চিত্র প্রদর্শনের উপযোগী করে গড়ে তোলা হবে বলে জানান তিনি।

“সিনেমা ভালো হলে মানুষ সিনেমা দেখতে আসে। কিন্তু ঢাকার দু-একটি সিনেমা হল ছাড়া অন্যগুলোতে পরিবেশ নেই। এভাবে চলতে থাকলে সিনেমার ভবিষ্যৎ মোটেই ভালো না। সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে এসব প্রেক্ষাগৃহ সংস্কার করা উচিৎ।”

শিল্পকলা একাডেমির আয়োজনে ৬৪টি জেলায় একযোগে শুরু হওয়া সপ্তাহব্যাপী এই প্রদর্শনী উদ্বোধন করে মন্ত্রী বলেন, স্বল্পদৈর্ঘ্য ও প্রামাণ্য চলচ্চিত্রে অনুদান দেওয়ার কথাও সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় ভাববে।

১৯৮৫ সালে মুক্তি পাওয়া তানভীর মোকাম্মেলের স্বল্প দৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘হুলিয়া’র অভিনেতা আসাদুজ্জামান নূর বলেন, “চলচ্চিত্রের মতো শক্তিশালী ও গুরুত্বপূর্ণ সাংস্কৃতিক ধারায় মানুষের কথা যেভাবে বলা সম্ভব, তা অন্য মাধ্যমে সম্ভব না। চলচ্চিত্রের মাধ্যমে আজকের সাম্প্রদায়িকতা, জঙ্গিবাদের কথা মানুষের কাছে সহজে পৌঁছে দেওয়া সম্ভব।” অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি চলচ্চিত্রকার সৈয়দ সালাউদ্দিন জাকি, মানজারে হাসীন মুরাদ ও মোরশেদুল ইসলাম।

এবারের স্বল্পদৈর্ঘ্য ও প্রামাণ্যচিত্র চলচ্চিত্র উৎসবটি উৎসর্গ করা হয়েছে সদ্যপ্রয়াত সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হককে। এবারের উৎসবে ৩৫টি স্বল্পদৈর্ঘ্য এবং ২৯টি প্রামাণ্য চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হবে। এছাড়াও বিভিন্ন সময়ে নির্মিত ১১টি প্রামাণ্য চলচ্চিত্র এবং ৯টি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নির্বাচন করা হয়েছে প্রদর্শনীর জন্য।

স্বল্পদৈর্ঘ্য ও প্রামাণ্য চলচ্চিত্র উৎসবে সহযোগিতা করছে ফেডারেশন অব ফিল্ম সোসাইটিজ অব বাংলাদেশ, বাংলাদেশ শর্ট ফিল্ম ফোরাম এবং বাংলাদেশ প্রামাণ্যচিত্র পর্ষদ। ‘মানসম্মত’ স্বল্পদৈর্ঘ্য ও প্রামাণ্য চলচ্চিত্র নির্মাণ, তরুণ প্রজন্মের মধ্যে চলচ্চিত্র শিল্পের বিকাশ এবারের উৎসবের মূল লক্ষ্য বলে জানিয়েছে শিল্পকলা একাডেমি।

চলচ্চিত্রের দর্শকদের শিল্পসম্মত চলচ্চিত্র অবলোকন, অনুধাবন, ব্যাখ্যা, বিশ্লেষণ, আলোচনা ও সমালোচনার মাধ্যমে তাদের মধ্যে সৃজনশীল মানবিক মূল্যবোধ সৃষ্টিতে উৎসবটি ‘গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে’ বলেও আশা করছে শিল্পকলা।

এবার উৎসবের শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্রের জন্য ১ লাখ টাকা করে ২জনকে ২ লাখ টাকা এবং শ্রেষ্ঠ নির্মাতাকে ৫০ হাজার করে ২ জনকে ১ লাখ টাকা প্রদান করা হবে। এছাড়াও ক্রেস্ট ও সনদপত্র প্রদান করা হবে। বিশেষ জুরি পুরস্কার প্রাপ্তকে ক্রেস্ট ও সনদপত্র প্রদান করা হবে। এছাড়াও যে সকল চলচ্চিত্র উৎসবের প্রদর্শনী করা হচ্ছে সে সকল চলচ্চিত্রের সকল নির্মাতাকে সনদপত্র প্রদান করা হবে।

রোববার উদ্বোধনী সন্ধ্যায় শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালা মিলনায়তনে প্রদর্শিত হয় জহির রায়হান সির্মিত ‘স্টপ জেনোসাইড’, মোরশেদুল ইসলামের ‘আগামী’, তারেক মাসুদের ‘আদম সুরত’, আমিনুর রহমান মুকুলের ‘অবরোধ’ এবং ইয়াসমিন কবিরের ‘পরবাসী মন আমার’।

সোমবার একই স্থানে প্রদর্শিত হবে শান্তনু হালদার নির্মিত প্রামাণ্য চলচ্চিত্র ‘দি ওয়েভ’ রোকনুজ্জামান অর্কের ‘নয়নতারা’, শাহীন দিল রিয়াজের ‘লোহাখোর’, শহীদুল ইসলাম অলির ‘তাৎপর্যবিহীন’, এনায়েত করিম বাবুলের ‘চাক্কি’, সুমনা সিদ্দিকীর ‘মাধো’, ‘আলতাফ মাহমুদ’ রোকেয়া প্রাচীর ‘বায়ান্নর মিছিলে’ এবং মৃদুল মামুনের ‘সবাই একজাত’।  

 

বি/ডি/নি

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে