ডেস্ক রিপোর্টঃ দ্রুত ইমিগ্রেশন পার হওয়ার মেশিন ই-পাসপোর্ট গেট দেশে এসেছে। এসব ই-গেটের মধ্যে তিনটি ইতিমধ্যে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বসানো হয়েছে। আগামী ১ জুলাই থেকে নাগরিকদের হাতে ই-পাসপোর্ট তুলে দেওয়ার তোড়জোড় চলছে। ই-পাসপোর্টের অত্যাধুনিক সুবিধা পেতেই বসছে ই-পাসপোর্ট গেট।

ই-গেটের কারণে বিদেশে যাওয়া-আসার ক্ষেত্রে ভ্রমণকারী যেমন উপকৃত হবে তেমনি দেশের সীমান্ত নিরাপত্তা আরো জোরদার হবে বলে মনে করছেন পাসপোর্ট অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা। তাঁরা জানিয়েছেন, কোনো ভুয়া পাসপোর্টধারী ই-গেট পার হওয়ার চেষ্টা করলেই ধরা পড়ে যাবে। ফলে কোনো অপরাধী পরিচয় গোপন করে ই-গেট অতিক্রমের সুযোগ পাবে না। আর এ সুযোগ কাজে লাগাতে পর্যায়ক্রমে দেশের স্থলবন্দরগুলোতেও বসানো হবে ই-গেট।

ই-পাসপোর্ট প্রবর্তন ও স্বয়ংক্রিয় বর্ডার কন্ট্রোল ব্যবস্থাপনার প্রকল্প পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাইদুর রহমান খান বলেন, ‘ইতিমধ্যে ই-পাসপোর্ট গেট জার্মানি থেকে দেশে এসেছে। পরীক্ষামূলকভাবে ঢাকায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তিনটি ই-গেট স্থাপন করা হয়েছে।’

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, মাস দুয়েক আগে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিবের সভাপতিত্বে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেট আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, বেনাপোল ও বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরে ৫০টি ই-গেট স্থাপনের সিদ্ধান্ত হয়। আর ওই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী জার্মানির প্রতিষ্ঠান থেকে ই-গেট আনার বিষয়ে চুক্তি হয়। অবশেষে গত ঈদের আগে কয়েকটি ই-গেট দেশে পৌঁছায়। ঈদের পর তিনটি স্থাপন করা হয় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে। পরীক্ষামূলকভাবে প্রথমেই দেশের তিনটি বিমানবন্দর ও দুটি স্থলবন্দরে সেগুলো বসানোর কথা ছিল। কিন্তু তা সম্ভব হয়ে ওঠেনি। পর্যায়ক্রমে অন্য বিমানবন্দর ও স্থলবন্দরেও ই-গেট স্থাপন করা হবে বলে জানা গেছে।

পাসপোর্ট অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা জানান, ‘ই-পাসপোর্ট প্রবর্তন ও স্বয়ংক্রিয় বর্ডার কন্ট্রোল ব্যবস্থাপনা’ প্রকল্পের মাধ্যমে ইমিগ্রেশন চেকপোস্টগুলো স্বয়ংক্রিয় বর্ডার কন্ট্রোল ব্যবস্থাপনার আওতায় আনা হবে। ইমিগ্রেশন চেকপোস্টগুলোতে ৫০টি ই-গেট স্থাপন করা হবে। ই-গেটে দ্রুততম সময়ে স্বয়ংক্রিয়ভাবে পাসপোর্ট রিডার ও ক্যামেরার সাহায্যে চিপযুক্ত পাসপোর্ট যাছাই, ফিঙ্গারপ্রিন্ট ও ফেসিয়াল রিকগনিশনের মাধ্যমে ইমিগ্রেশন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা যাবে। ভেরিফিকেশনে ব্যক্তির সঠিক তথ্য পাওয়া গেলে ই-পাসপোর্ট গেট স্বয়ংক্রিয়ভাবে খুলে যাবে। এ ব্যবস্থায় ভ্রমণকারীর পরিচয় যাচাইয়ের মাধ্যমে দেশের সীমান্ত নিরাপত্তা অধিকতর কার্যকরভাবে সংরক্ষণ করা যাবে।

সূত্র জানায়, ই-পাসপোর্ট ই-গেটের একটি নির্দিষ্ট স্থানে রাখার সঙ্গে সঙ্গে বাহকের পরিচয় নিশ্চিত করবে। নির্দিষ্ট নিয়মে দাঁড়ালে ক্যামেরা ছবি তুলে নেবে। থাকবে ফিঙ্গারপ্রিন্ট যাচাইয়ের ব্যবস্থাও। সব ঠিকঠাক থাকলে দ্রুততম সময়ের মধ্যেই ভ্রমণকারী ইমিগ্রেশন পেরিয়ে যেতে পারবে। তবে বিভ্রাট ঘটলেই লাল বাতি জ্বলে উঠবে। তখন সেখানে দায়িত্বরত কর্মকর্তারা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে সঠিকভাবে ই-পাসপোর্ট ব্যবহারে সহযোগিতা করবে। বর্তমানে মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট বা এমআরপি নিয়ে ইমিগ্রেশন পার হতে গেলে কয়েক মিনিট সময় লেগে যায়। ওই কারণে যাত্রীদের লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। কিন্তু ই-পাসপোর্ট থাকলে কয়েক সেকেন্ডে পার হওয়া সম্ভব হবে বলে বিড়ম্বনায় পড়তে হবে না।

পিবিএ/এভিএন/হক

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে