1457383181

বিডি নীয়ালা নিউজ(৯ই মার্চ১৬)-স্বাস্থ ও চিকিৎসা প্রতিবেদনঃ মধ্যরাতে হঠাত্‍ ঘুম ভেঙে গেল। অনুভব করলেন, আপনার বুকের ওপর ভারী কিছু বসে আছে। এত ভারী কিছু যে ঠিকঠাক নিঃশ্বাসই নিতে পারছেন না আপনি। কেমন লাগবে তখন? নিশ্চয়ই খুব ভয় পাবেন! এটা একটা ভীতিকর পরিস্থিতিই বটে যখন টের পাবেন আপনি চাইলেও শরীরের কোনো অংশ নাড়াতে পারছেন না, এমনকি চিত্‍কারও করতে পারছেন না। নিজেকে এমন অসহায়ভাবে আবিষ্কার করলে ভয় পাওয়াটাই স্বাভাবিক।

সমস্যাটাকে বলে স্লিপ প্যারালাইসিস। সহজ বাংলায় আমরা যাকে বলি বোবায় ধরা।

তাহলে আসুন এটা সম্বন্ধে আরো বিষদ জেনে নেয়া যাক-কাকে বলে বোবা ধরা?

বিশেষজ্ঞদের মতে, বোবায় ধরা বা স্লিপ প্যারালাইসিস স্রেফ একটা ইন্দ্রিয়ঘটিত ব্যাপার। যখন শরীর গভীর ঘুমের এক পর্যায় থেকে আরেক পর্যায়ে যায়, তখনই এটা ঘটে থাকে। বোবা ধরলে একেকজনের একেক রকম অভিজ্ঞতা হয়। কেউ ঘরের ভেতর ভৌতিক কিছুর উপস্থিতি টের পান, কেউ দুর্গন্ধ পান, কেউ বা ভয়ানক কোনো প্রাণি দেখতে পান। মোট কথা তখন একটা হ্যালুসিনেশনের মতো অবস্থার সৃষ্টি হয়। গভীর ঘুমের এক পর্যায় থেকে আরেক পর্যায়ে যাবার সময় মস্তিষ্ক সতর্ক হয়ে ঘুম ভেঙে গেলেও শরীর আসলে তখন ঘুমেই থাকে। ফলে অভিজ্ঞতাটা অন্যরকম থাকে। বিশেষ করে ইন্দ্রিয় তখন আচ্ছন্ন থাকায় মানুষ অদ্ভুত কিছু দেখে এবং শ্বাসকষ্ট অনুভব করে। সাধারণত যাদের ঘুমের সমস্যা থাকে তারাই বেশি স্লিপিং প্যারালাইসিসে ভোগে। অনেকেই এটা বিশ্বাস করে অতিলৌকিক কোনো কিছু এ ব্যাপারটি ঘটায়। আসলে এটা স্রেফ একটি শারীরবৃত্তীয় ব্যাপার।

কেন এমন হয়?
বোবায় ধরা বা স্লিপ প্যারালাইসিসের পেছনে বিভিন্ন কারণ থাকতে পারে। এর অন্যতম কারণ হলো চাপের মধ্যে থাকা এবং যথেষ্ট পরিমাণে বিশ্রামের অভাব। অনিয়মিত ঘুমও এর আরেকটি কারণ। ঘুম বিশেষজ্ঞরা এটাও বলেন যে, যখন ঘুমের এক ধাপ থেকে আরেক ধাপে যাবার সময় শরীর সাবলীলভাবে নড়াচড়া করতে পারে না, তখনই মানুষ বোবা ধরা বা স্লিপিং প্যারালাইসিসে আক্রান্ত হয়। এছাড়া আরও কিছু ব্যাপার বোবা ধরার কারণ হতে পারে। যেমন ঘুমের নির্দিষ্টতা না থাকা, মানসিক চাপ, দুশ্চিন্তা, ঘুমের সঙ্গে জড়িত অন্যান্য সমস্যা, হাত-পায়ের মাংসপেশিতে খিঁচ ধরা, অনিদ্রা, বিষণ্নতা ইত্যাদি।
পরিত্রাণের উপায়:

বোবায় ধরা বা স্লিপিং প্যারালাইসিস থেকে বাঁচার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং সহজ উপায় হলো ঘুমের নির্দিষ্ট সময় মেনে চলা। বিশেষজ্ঞরা বলেন, এই সমস্যাটা সাময়িক। কিন্তু যদি এটা ঘন ঘন হতে থাকে এবং কোনো শারীরিক বা মানসিক সমস্যার জন্ম দেয়, তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে।

 

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে