সোহেল রানা, রাজশাহী জেলা প্রতিনিধি: রাজশাহীর ঐতিহাসিক মাদ্রাসা মাঠের পাশেই অবস্থিত ঈদগাহ মাঠ। ভরে গেছে তাবুতে। পদ্মা নদীর পাড়ে এ অবস্থিত বিশালকার এ মাঠটি জুড়ে গত বুধবার থেকে গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত পর্যন্ত গড়ে তোলা হয়েছে অন্তত দুই শতাধিক তাবু। শনিবার মাদ্রাসা মাঠে অনুষ্ঠিত হবে বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশ। এ সমাবেশে যোগ দিতে আসা হাজার হাজার নেতাকর্মীরা বুধবার থেকেই রাজশাহী এসে জড়ো হতে শুরু করেন। তাদের আশ্রয় দিতে ঈদগাহ মাঠে গড়ে তোলা হয়েছে দুই শতাধিক তাবু। মাঠ জুড়ে গড়ে তোলা এসব তাবুতে রাত-দিন কাটাচ্ছেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। তাদের পদচারণা আর স্লোগানে স্লোগানে অরে উঠেছে ঈদগাহ মাঠটি।

ভোর থেকেই মাঠের ভিতরেই চলছে রান্না-বান্না। সেখানেই হচ্ছে খাওয়া-দাওয়া। নেতাকর্মীরা আসছেন দূর-দূরান্ত থেকে। তারা এসে আশ্রয় নিচ্ছেন এখানে। পরিস্থিতি এমন যেন উৎসবে মেতে উঠেছেন নেতাকর্মীরা।

জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল থেকে আসা মজিবুর রহমান নামের এক কর্মী বলেন, ‘রাস্তায় নানা বাধা পেরিয়ে রাজশাহী এসে পৌঁছেছি। কিন্তু এখানে আসার পরে ভালো লাগছে। একসঙ্গে এতো নেতাকর্মী ঈদগাহ মাঠে অবস্থান করছে যে, আসার পথে সব কষ্ট ভুলে গেছি। এখন সমাবেশ শেষ করে বাড়ি ফিরবো।’

পাবনার চাটমোহর থেকে আসা বিএনপি কর্মী আজমত হোসেন বলেন, ‘এখানে রাতে তাবুর নিচে ঘুমাইছি। সঙ্গে আনা ব্যাগ মাথার নিচে দিয়ে বালিশ করেছি। তাতেও কোনো কষ্ট নাই। গণসমাবেশ উপলক্ষে এতো মানুষ কষ্ট করছে, দেখেই ভালো লাগছে। কেউ খাবার নিয়েও কোনো আপত্তি তুলছে না। যে যার মতো করে খেয়ে নিচ্ছে। যে গ্রুপ রান্না করছে, তারা খাচ্ছে, অন্যদেরও দিচ্ছে। আমি সঙ্গে করে মুড়ি আর চিঁড়া নিয়ে নিয়ে এসেছি। কখনো সেগুলো খেয়েও থাকছি।’

শুক্রবার সকালে গিয়ে দেকা যায়, ঈদগাহ মাঠে হাজার হাজার নেতাকর্মী যেন আনন্দ-উল্লাসে মেতে উঠেছেন। কেউ রাস্তার পাশের দোকান থেকে চা-সিগারেট, পানসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র কিনে খাচ্ছেন, আবার কেউ কেউ তাবুর ভিতরে বসেই তাস খেলাতে মেতে উঠেছেন। কোনো কোনো গ্রুপ ভাগ হয়ে মিছিল করছেন। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা সুলতান সালাহউদ্দিন টুকুকে ঘিরে পাবনার একটি গ্রুপ মিছিল বের করেন। এর কিছুক্ষণ পরেই কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের নেতারা মোটরসাইকেল বহর নিয়ে মিছিল করতে করতে ঈদগাহ মাঠে এসে পৌঁছান।

ঈদগাহ মাঠের ভিতরে গিয়ে দেখা যায়, বিএনপি নেতাকর্মীদের জন্য দুপুরের খাবার রান্না হচ্ছে আলাদা আলাদাভাবে। কোথাও ভাত, তরকারি, কোথাও বিরআনি, আবার কোথাও খিচুড়ি রান্না হচ্ছে। অন্তত ৩০-৪০টি চুলাই চলছে রান্না। বিএনপি নেতাকর্মীরাই নিজেদের মতো করে উৎসবমুখোর পরিবেশে রান্নায় ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন।

জানতে চাইলে নজরুল ইসলাম নামের একজন কর্মী বলেন, আমি ‘সিরাজগঞ্জের একটি ইউনিয়নের ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি। এখানে এসে আমরা রান্না করে খাচ্ছি। আমাদের সঙ্গে আসা অন্যরাও যে যার মতো কাজ করছেন। কেউ মিছিল করছেন।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে