আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বিরোধী নেতা হুয়ান গুয়াইদোকে অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্টের স্বীকৃতি দেওয়ার পর থেকে প্রেসিডেন্ট নিকোলা মাদুরোর ক্ষমতার মুষ্টি আলগা হতে থাকে। কিন্তু তাঁর সমর্থকদের আস্থা ও বিশ্বাসে ফাটল ধরাতে পারেনি। উল্টো তাঁর একনিষ্ঠ সমর্থকরা বলছেন, তাঁরা তাঁর জন্য সর্বশেষ শক্তি দিয়ে লড়ে যাবেন। বাইরের দেশ থেকে আরেকজনকে প্রেসিডেন্টের স্বীকৃতি দেওয়ার বিষয়টিকে তাঁরা আত্মসম্মানের বিষয় হিসেবে দেখছেন।

কারাকাসারে বিভিন্ন মহলে মতভেদ রয়েছে। কিন্তু বিরোধী দলের নেতা হুয়ান গুয়াইদোর প্রতি বিদেশিদের সমর্থন দেওয়ার ঘটনাটি সমাজতান্ত্রিক নেতার সমর্থকদের ক্ষুব্ধ করেছে। পার্লামেন্টের সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের প্রধান গুয়াইদো গত সপ্তাহে নিজেকে অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট ঘোষণা করলে তাঁর প্রতি সমর্থন ব্যক্ত করে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে ইউরোপ লাতিন আমেরিকার কিছু দেশ। যদিও মাদুরোর প্রতি সমর্থন ব্যক্ত করেছে রাশিয়া, চীন, মেক্সিকো ও তুরস্কের মতো দেশ।

মাদুরোর ক্ষুব্ধ সমর্থকদের একজন স্কুল শিক্ষক মারলিন ভারগাস। ৫২ বছর বয়সী এই নারী মনে করেন, ডোনাল্ড ট্রাম্প নিষেধাজ্ঞা ও হুমকি দিয়ে সমাজতান্ত্রিক সরকারকে চেপে ধরতে চাইছেন।

ভারগাস হলেন মাদুরোর পূর্বসূরি ও প্রয়াত প্রেসিডেন্ট হুগো শাভেজ প্রচলিত আন্দোলনের কট্টর সমর্থক। ওই কর্মসূচির মাধ্যমে ১৯৯৯ সালে ক্ষমতায় আসা শাভেজ কয়েক লাখ ভেনিজুয়েলীয়কে দারিদ্র্যসীমা থেকে তুলে এনেছিলেন। এই কর্মসূচি এখনো চলমান রেখেছেন তাঁর বিশ্বস্ত উত্তরসূরি।

নিজের ক্ষোভ প্রকাশ করে গত ৩ জানুয়ারি ভারগাস এএফপিকে বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের মতো আমাদের উচ্চ প্রযুক্তি ও যুদ্ধের অভিজ্ঞতা না থাকতে পারে, কিন্তু আমরা আত্মমর্যাদাশীল মানুষ। আমরা আমাদের শেষ শক্তি দিয়ে লড়ে যাব।’

ইইউ পার্লামেন্টের স্বীকৃতি : অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও ইউরোপের দেশগুলোর পথ ধরে এবার ভেনিজুয়েলার স্বঘোষিত অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট হুয়ান গুয়াইদোকে স্বীকৃতি দিয়েছে ইউরোপীয় পার্লামেন্ট। গতকাল পার্লামেন্টের ভোটাভুটিতে ৪৩৯-১০৪ ভোটে এই প্রস্তাব (রেজুলেশন) পাস হয়। এটি একটি ‘নন-বাইন্ডিং রেজুলেশন’ হলেও এর মাধ্যমে তারা গুয়াইদোকে স্বীকৃতি দিতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।

সেনাবাহিনীর সঙ্গে বৈঠকের দাবি গুয়াইদোর : পশ্চিমাদের চাপের মুখে থাকা মাদুরোর প্রতি এরই মধ্যে সেনাবাহিনী ও সুপ্রিম কোর্ট সমর্থন ব্যক্ত করলেও বুধবার নিউ ইয়র্ক টাইমসে লেখা এক নিবন্ধে স্বঘোষিত প্রেসিডেন্ট গুয়াইদো দাবি করেছেন, সমর্থন আদায়ের জন্য এরই মধ্যে সেনাবাহিনীর সঙ্গে তাঁর গোপনে বৈঠক হয়েছে। তবে তিনি ঠিক কাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন, সে ব্যাপারে কিছু বলেননি।

সাংবাদিকদের মুক্তি দাবি স্পেনের : এদিকে স্পেনের সরকার গতকাল এক বিবৃতিতে স্প্যানিস নিউজ এজেন্সি ইএফইর গ্রেপ্তারকৃত সাংবাদিকদের মুক্তি দেওয়ার জন্য ভেনিজুয়েলার কর্তৃপক্ষের প্রতি দাবি জানিয়েছে। বিবৃতিতে ইএফইর চার সদস্যকে গ্রেপ্তারের তীব্র নিন্দা জানানো হয়।

K/K/N.

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে