ভেজাল প্যারাসিটামল সেবনে শিশুমৃত্যুর ঘটনায় ১০৪ শিশুর প্রত্যেকের পরিবারকে ১৫ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দিতে ঔষধ প্রশাসন অধিদফতরকে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এসব শিশুর মৃত্যুর জন্য দায়ী সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি, কোম্পানির কাছ থেকে ঔষধ প্রশাসন অধিদফতর এ অর্থ আদায় করবে।

বৃহস্পতিবার (২ জুন) বিচারপতি আশরাফুল কামাল ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ নির্দেশ দেন। আদালতে রিটের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। অপরপক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট মো. আসাদুজ্জামান।

রায়ে আদালত পাঁচ দফা নির্দেশনায় বলেন- এক. ভেজাল ওষুধ নিয়ন্ত্রণে ঔষধ প্রশাসন অধিদফতরের নিষ্ক্রিয়তা অবৈধ। দুই. ভেজাল ওষুধের অপরাধের ক্ষেত্রে বিশেষ ক্ষমতা আইনের ২৫(১) ধারা অনুসারে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। তিন. মৃত ১০৪ জন শিশুর পরিবারকে ১৫ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ প্রদান করবে ঔষধ প্রশাসন অধিদফতর। চার. সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা কোম্পানি থেকে ক্ষতিপূরণের টাকা আদায় করবে ঔষধ প্রশাসন অধিদফতর। পাঁচ. ভেজাল ওষুধের কারণে শিশু মৃত্যুর দায় এড়াতে পারে না অধিদফতর।

পরে অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ সাংবাদিকদের বলেন, ভেজাল প্যারাসিটামল সিরাপ সেবন করে ১৯৯১ সালে ৭৬ শিশু এবং ২০০৯ সালে রিড ফার্মার প্যারাসিটামল সেবন করে ২৮ শিশুর মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় ২০১০ সালে পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন সংযুক্ত করে মানবাধিকার সংগঠন এইচআরপিবি জনস্বার্থে হাইকোর্টে রিট করে। রিটের শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট রুল জারি করেছিল। এরপর রুলের দীর্ঘ শুনানি শেষে আদালত বৃহস্পতিবার রায় ঘোষণা করেন।

এদিকে, ২০০৯ সালের জুন থেকে আগস্ট পর্যন্ত রিড ফার্মার ভেজাল প্যারাসিটামল সিরাপ সেবন করে সারা দেশে ২৮ শিশু মারা যায়। এ ঘটনায় ঔষধ প্রশাসন অধিদফতরের তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক মো. শফিকুল ইসলাম ঢাকার ড্রাগ আদালতে ওষুধ কোম্পানিটির মালিকসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। যা এখনও চূড়ান্ত নিষ্পত্তি হয়নি।

SO/N

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে