জয়নাল আবেদীন হিরো, নীলফামারী জেলা প্রতিনিধিঃ ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী দিয়ে ৪ বোন ও দুলাভাই মিলে অন্যায়ভাবে দোকান দখল এবং বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ার হুমকি প্রদানের অভিযোগ উঠেছে। জোরপূর্বক দোকানে তালা দিয়ে বন্ধ করায় উপার্জনের একমাত্র উৎস্য হারিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে পুরো পরিবার।

৯ মাসের গর্ভবতী স্ত্রী ও দুই মেয়ে নিয়ে চরম আতঙ্ক ও হতাশাগ্রস্থ হয়ে পড়েছে ভুক্তভোগী অসহায় ভাই। এমন অমানবিক ও বেআইনী কর্মকাণ্ডের অভিযোগ তুলেছেন নীলফামারীর সৈয়দপুর শহরের পুরাতন বাবুপাড়া রেলওয়ে অফিসার্স কলোনীর মৃত হালিমের ছেলে মুরাদ হোসেন।

তিনি বলেন, আমার বাবা একজন সরকারী চাকুরীজীবী ছিলেন। বাবা মারা যাওয়ার আগে রিটায়ার করে পাওয়া টাকা দিয়ে আমার ৫ বোনের ওয়ারিশ সুত্রে প্রাপ্য অংশের সমুদয় টাকা বুঝিয়ে দিয়েছেন। সেইসাথে আমার মা জোবেদা বেগমের নামে সাড়ে ৩ লাখ টাকা ব্যাংকে ফিক্সড ডিপোজিট করে দিয়েছেন। এই ক্ষেত্রেও নমিনি করা হয়েছে ৫ মেয়েকেই।

মা জীবিত থাকাবস্থায় ওই টাকার লভ্যাংশ মা ও মেয়েরা ভোগ করছে। আবার মার মৃত্যুর পরও ৫ মেয়েই সমানভাবে পাবে। বিনিময়ে একমাত্র বাড়ি ও দোকান ৩ ছেলের জন্য নির্দিষ্ট করে দিয়েছেন। এতে সম্মত হয়েই ৫ বোন ও দুলাভাইয়েরা তাদের পাওনা বুঝে নেন।

অথচ বাবা মারা যাওয়ার পর এখন তারা বাড়ি ও দোকানেও তাদের অংশ দাবী করছেন এবং বিক্রি করে তাদের পাওনা দেওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছেন। সর্বশেষ তারা ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী দিয়ে জোরপূর্বক দোকানে তালা লাগিয়ে অবৈধভাবে দখল করে নিয়েছে। বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিতে নানাভাবে হুমকি প্রদান করছে।

মুরাদের স্ত্রী জেসমিন বলেন,শ্বশুড়ের তিনরুমের ওই বাসায় তিন ভাইয়ের স্ত্রী সন্তানসহ বসবাস কষ্টকর হয়ে পড়ায় আমার স্বামীকে নিয়ে দীর্ঘ ১১ বছর ধরে শহরের ইসলামবাগ এলাকায় নিজস্ব ভাড়া বাসায় থাকতাম। একবছর আগে শ্বাশুড়ির দেখাশোনার জন্য ননদেরাই আমাদেরকে ফিরিয়ে নিয়ে আসেন। ফলে আমাদের হাতে থাকা প্রায় ২ লাখ টাকা খরচ করে শ্বশুর বাড়ির সংষ্কার করি। সেই বাসা থেকেই এখন আমাদের তাড়িয়ে দিতে তৎপর ৪ ননদ ও তাদের স্বামীরা।

তিনি আরও বলেন, শ্বাশুড়িকে বাসা থেকে বের করে দেওয়ার মিথ্যে নাটক সাজিয়ে সেই অভিযোগের অজুহাতে দোকানও দখল করে নিয়েছে। আবার উল্টো আমাদের নামেই মিথ্যে সংবাদ পরিবেশন করা হয়েছে। এতে আমরা যেমন সর্বস্ব হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েছি। তেমনি সামাজিকভাবে বিড়ম্বনায় পড়েছি। প্রতিমূহুর্তে চরম আতঙ্ক ও হতাশায় দিন কাটাচ্ছি। স্কুল পড়ুয়া মেয়েরা লেখাপড়া করতে পারছেনা। আয়ের একমাত্র উৎস্য হারিয়ে অর্থাভাবে খেয়ে না খেয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছি।

ইতোপূর্বেও তারা এমন জবরদস্তি করেছিল। তখন আইনী ব্যবস্থা হিসেবে সৈয়দপুর থানায় অভিযোগ দিলেও তারা কোন পদক্ষেপ না নেয়ায় আজ এই দূরাবস্থার শিকার হয়েছি। এমতাবস্থায় বিষয়টি তদন্ত করে সঠিক বিচারের দাবি জানাই প্রশাসনের প্রতি। নয়তো সপরিবারে রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ জানানো বা আত্মহত্যা করা ছাড়া আর কোন উপায় থাকবেনা।

এব্যাপারে অভিযুক্ত ৪ বোন ও তাদের স্বামী যথাক্রমে মোছা. ইতি (২৫), স্বামী মো. ইমরান, সাং সাহেবপাড়া, মোছা. শিরিন আকতার (২৭), স্বামী মো. এরশাদ, সাং পুরাতন মুন্সিপাড়া, মোছা. দিতি (৩৫), স্বামী মো. সাহেব, সাং পুরাতন মুন্সিপাড়া ও মোছা. সোনিয়া (২৮), স্বামী বাপ্পী, সাং চাউলিয়াপট্টি, দিনাজপুরগণের যোগাযোগ করা হলে তারা অভিযোগ অস্বীকার করেন। বরং বাড়ি ও দোকান মায়ের নামে হওয়ায় তাতে নিজেদের অংশ দাবি করেন।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে