হুমায়ুন কবির, নিজস্ব প্রতিবেদক(ঢাকা): ব্যাংক এশিয়ার এমডি মো. আরফান আলীর বিরুদ্ধে দুর্নীতি-অনিয়ম, স্বজনপ্রীতি, নিয়োগ বাণিজ্য- কম্পিউটার কেনার নামে টাকা আত্মসাৎ, ব্যাংকের টাকা নিজের অ্যাকাউন্টে রাখাসহ বেশ কয়েকটি অভিযোগের কথা উল্লেখ করে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) অনুসন্ধান চেয়ে আবেদন দিয়েছেন ব্যাংকটির কর্মকর্তাসহ সুপ্রিম কোর্টের এক আইনজীবী।

সোমবার (২০ জুন) দুদক চেয়ারম্যানকে পাঠানো অভিযোগে বলা হয়েছে, ব্যাংক এশিয়া লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) পদে দায়িত্ব পালন করছেন মো. আরফান আলী। ১৯৯১ সালে আরব বাংলাদেশ ব্যাংকে প্রবেশনারি কর্মকর্তা হিসেবে যোগদানের মাধ্যমে কর্মজীবন শুরু করা আরফান আলী টানা দুই মেয়াদে ব্যাংকটির এমডি পদে দায়িত্ব পালন করছেন। অর্থনৈতিকভাবে প্রভাব বিস্তার করে চেষ্টা করছেন তৃতীয় মেয়াদে নিয়োগ পেতে। ব্যাংক এশিয়া লিমিটেডের চেয়ারম্যান আ. রউফ চৌধুরীর নিজস্ব লোক হিসেবে নিজেকে পরিচয় দিয়ে আরফান আলী ব্যাংকটিতে চালিয়ে যাচ্ছেন নিজের রাজত্ব। গড়ে তুলেছেন নিজস্ব সিন্ডিকেট বাহিনী। দুর্নীতি-অনিয়ম আর চাকরিপ্রার্থীদের নিয়োগ দেওয়ার নামে হাতিয়ে নিয়েছেন কোটি-কোটি টাকা।

অভিযোগ আরও বলা হয়, মো. আরফান আলী অনিয়ম-স্বজনপ্রীতি ও নিয়োগ বাণিজ্য, কম্পিউটার কেনার নামে টাকা আত্মসাৎ, ব্যাংকের টাকা নিজের অ্যাকাউন্টে রাখাসহ শত শত অভিযোগ রয়েছে এই ব্যাংক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। তার স্ত্রী ব্যাংক এশিয়ার কেউ না হলেও তাকে টাকা দেওয়া হলে মিলে নিয়োগ। ব্যাংক এশিয়ায় নিয়োগ পেতে হলে আগে এমডির স্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাত করতে হয়। তিনি চাকরিপ্রার্থীদের সিভি গ্রহণ করেন এবং সেই সিভি এমডি আরফান আলীকে দেন। যারা অর্থ দেন তাদের সিভিগুলো এমডি আরফান আলী সই করে ব্যাংক এশিয়ার পিএমডি ডিপার্টমেন্টের কর্মকর্তা নাজমাকে দেন।

অভিযোগ রয়েছে, ব্যাংক এশিয়ায় ২০ জন নিয়োগ পেলে তার মধ্যে মাত্র দুই শতাংশ লোক নিয়োগ পান নিজ যোগ্যতায়। বাকিরা নিয়োগ পান এমডিকে ম্যানেজ করে। এমডির আশীর্বাদ পুষ্ট লোকদের আগে থেকেই প্রশ্ন দেওয়া হয়। চেয়ারম্যান ও বোর্ড মিটিংয়ে প্রতারণা আশ্রয় নিয়ে তাদের নিয়োগ দেন এই আরফান আলী। এই আরফান আলী তার পরিবারের কমপক্ষে ২০ জনকে নিয়োগ দিয়েছেন এই ব্যাংকে।

আর্থিক সুবিধা নিয়ে অনেক কোম্পানিকে যোগ্যতার চেয়েও বেশি লোন দিয়েছেন এই আরফান আলী। মানি লন্ডারিংয়ে তিনি জড়িত বলে দাবি করেছেন এই ব্যাংকের অনেক কর্মকর্তা। তার এবং তার স্ত্রীর নামে বেনামে রাজধানী ঢাকা, মুন্সীগঞ্জ ও দেশের বিভিন্ন স্থানে শত শত কোটি টাকার সম্পদ রয়েছে। গ্রাহকের টাকা উত্তোলন করে আত্মসাতের অভিযোগে ব্যাংক এশিয়ার বর্তমান ও সাবেক একাধিক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তাই ব্যাংক এশিয়াকে বাঁচানোর স্বার্থে এমডি মো. আরফান আলীর বিরুদ্ধে উত্তাপিত অভিযোগ অনুসন্ধানে দুদকের হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়েছে অভিযোগটিতে।

এদিকে, এবিষয়ে জানতে আরফান আলীকে ফোন দেওয়া হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে