mm muzahid

বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষার্থীদের কিছু কমন প্রশ্ন ও তার উত্তর

এম এম মুজাহিদ উদ্দীন

বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে প্রায় সময় কিছু সাধারন জিজ্ঞাসা শুনে থাকি।সেসব নিয়েই আজকের আয়োজন।
১।প্রশ্ন: ভাইয়া কত মার্কস পেলে চান্স হবে?

উত্তর: বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা এসএসসি,এইচএসসি পরীক্ষার মতো ৮০নাম্বার পেলে "এ+",৭০পেলে "এ"গ্রেড,এমনটি না।এখানে কোনো গ্রেডিং সিস্টেম নাই।এটা একটি প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা।এসব পরীক্ষাতে যারা হাজার হাজার প্রতিযোগিকে  পিছনে ফেলে প্রথম সারিতে থাকে তারাই চান্স পায়।আর প্রশ্ন সহজ হলে বেশি নাম্বার পেতে হয়,আর প্রশ্ন কঠিন হলে কম নাম্বার পেলেও চান্স হয়।অর্থ্যাৎ
এটা প্রশ্নের উপর ডিপেন্ড করে।

২।প্রশ্ন: ভাইয়া আমার এসএসসি,এইচএসসির রেজাল্ট বেশি ভালো না,আমি কি চান্স পাবো?

উত্তর: তুমি যদি ফরম তোলার যোগ্য হও বা ফরম তুলতে পারো,তাহলে তুমি চান্স ও পেতে পারো।তবে যারা ভালো রেজাল্ট করেছে তাদের চেয়ে তোমাকে একটু বেশি পড়তে হবে।কারন তারা যখন পড়ার টেবিলে ছিল, তখন তুমি খেলাধুলা,সাজুগুজু করা,ফেসবুকিং করা বা বন্ধুদের সাথে ফাউল আড্ডা দিয়েছো।তাই এখন তারা যদি ১০ঘন্টা পড়ে তাহলে তোমাকে পড়তে হবে ১৭-১৮ঘন্টা।পারলে এভাবে পড়ো,আর না পারলে তোমার বন্ধু-বান্ধবী
আর পরিচিতরা কোথায় কোথায় চান্স পায়, সে খবর শোনার জন্য আঙ্গুল চুষো।

৩।প্রশ্ন: প্রতিদিন কয়ঘণ্টা করে পড়া উচিত?

উত্তর: আমার পরামর্শ  ১৭-১৮ঘণ্টা  পড়া,বাকি ৪ঘণ্টা ঘুমাবা আর ২/৩ঘণ্টা অন্যান্য কাজ করবে।অর্থ্যাৎ খাওয়া,ঘুমসহ অতিপ্রয়োজনীয় কাজ ছাড়া বাকি সময় তুমি পড়বে।যখন কোচিং এ যাবা তখন ও হাতে একটা শীট রেখে দেখতে দেখতে যাবা(আবার দেখো একসিডেন্ট করোনা যেনো),খাওয়া,গোসল প্রভৃতির সময় ও মাথায় চিন্তা করে কোনো পড়া রিভিশন দিবা।

৪।প্রশ্ন: ভাইয়া আমি তো ‘ক’ ইউনিট অথবা ‘গ’ ইউনিটের জন্য কোচিং করছি। আমি কি ‘ঘ’ ইউনিট বা কম্বাইন্ড ইউনিটে জন্য প্রিপারেশন নিবো?

উত্তর: আমার পরামর্শ হলো দুই নৌকায় পা দেয়ার দরকার নাই।যেকোনো একটা টার্গেট ফিক্সট করো। আর সেটার জন্য  সর্বোচ্চ দিয়ে চেষ্টা করো।আর সে ইউনিটে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা দিবে।তবে কম্বাইন্ড ইউনিট গুলোতে ফরম তুললে তুলতে পারো।যদি তোমার প্রত্যাশিত ইউনিটে চান্স না হয় তখন তুমি পরীক্ষা দিতে পারবে।একথা সবার জন্য সমানভাবে প্রযোজ্য।ঁঅর্থ্যাৎ যারা মেডিকেলের জন্য কোচিং
করছো তারা টার্গেট রাখো মেডিকেল,যারা ইঞ্জিনিয়ারিং এর জন্য কোচিং করছো তারা টার্গেট রাখো ইঞ্জিনিয়ারিং।আর যারা বিবিএর জন্য কোচিং করছো তারা টার্গেট রাখো বিবিএ।কি বুঝাতে চেয়েছি আশা করি বুজতে পারছো।

৫।প্রশ্ন: কোচিং এর টেস্টে নাম্বার তেমন পাইনা।মেরিটলিস্টে আমার নাম উঠেনা।আমার কি ছেড়ে দেয়া উচিত?

উত্তর: আমাদের সাথে কোচিং এ অনেকেই ছিলো যারা কোচিং এর টেস্টে ভালো নাম্বার পেতো,কিন্তু তারা কোথাও চান্স পাইনি।আবার অনেকেই ছিল যারা তুলনামূলক কম নাম্বার পেতো,তা সত্ত্বেও এখন তারা ভালো ভালো সাবজেক্টে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করছে।সো চেষ্টা চালিয়ে যাও,আসল টেস্ট হবে ভর্তি পরীক্ষায়।

৬।প্রশ্ন: আমি তো ঢাকার বাইরে কোচিং করি, আমার কি চান্স হবে?

উত্তর: আমার বাড়ি খুলনা জেলায়।আমার পরিচিত একভাই খুলনাতে কোচিং করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এক ইউনিটে ২য় আরেক ইউনিটে ৬ষ্ঠ হয়েছিল।সো বুঝতেই পারছো…!

৭।কোচিং এর পাশাপাশি কি ব্যাচ করা লাগবে?

উত্তর: তুমি যদি কোচিং এর টিচারদের লেকচার ভালো বুঝতে পারো,তাহলে ব্যাচ করার প্রয়োজন নাই।আর একটু দূর্বল হলে ইংলিশের একটা ব্যাচ করতে পারো।তবে সব সময় মনে রাখবা,এখন তোমার সময় কিন্তু হীরার চেয়েও মূল্যবান।

৮।কোন কোচিং সেন্টারে ভর্তি হলে চান্স পাওয়া যায়?
উত্তর: কোচিং সেন্টার তোমাকে চান্স পাইয়ে দিবে না।চান্স পেতে হবে তোমার নিজেকেই।বড় কোচিং এ পড়লে সেখানে অনেক ভালো স্টুডেন্টরা থাকে,তাই তোমার কম্পিটিটিভনেস তৈরী করতে সাহায্য করে,এই ছাড়া আর কিছু না।সো,যে কোচিংএ পড়ো না কেনো,ভালো করে পড়ালেখা করো।পরিশ্রম করলে ফল তুমি পাবে,এ তুমি বিশ্বাস করো।

৯।প্রশ্ন: ভাইয়া কোন সাবজেক্টে পড়লে ভালো চাকরি পাওয়া যায়?

উত্তর: বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে প্রায় সব সাবজেক্ট থেকে পড়াশোনা করে ভালো  চাকরি পাওয়া যায়।চাকরি পাওয়ার ক্ষেত্রে সাবজেক্ট তেমন ম্যাটার না,আসল হলো তোমার যোগ্যতা,  সে কথা পরে হবে।তোমার পছন্দ মতো সাবজেক্ট চয়েস দিও।আশা করি তুমি ভালো করবে।

১০।প্রশ্ন: ভাইয়া কোন ভার্সিটিতে পড়লে ভালো হবে?

উত্তর: আমার ব্যক্তিগত মত হলো,তোমার পছন্দ মতো যেকোনো একটা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে পারো,যেকোনো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে জব মার্কেটে ভালো করতে দেখা গেছে।তবে ঢাকা শহরের ভিতরে অবস্থিত কোনো একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে পারলে ভালো।গ্রাজুয়েশন কম্পিলিট করার পর প্রায় সবাই ঢাকা এসে থাকে।কারন চাকরির প্রায় সব পরীক্ষা ঢাকায় অনুষ্ঠিত  হয়ে থাকে,ঢাকাতে থাকতে পারলে তুমি অনেক
আ্যডভান্স হতে পারবে।তাই আমি অন্য আরো কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পাওয়ার পরও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছিলাম শুধুমাত্র ঢাকা শহরে থাকার জন্য।

যাইহোক তোমার নিজের পছন্দকেই গুরুত্ব দিবে। আশা করি ভালো কিছু হবে।

 তোমারই ভাইয়া
এম এম মুজাহিদ উদ্দীন
গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ,
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়।
লেখক: *An Exclusive book of Synonyms &Antonyms.
* শর্ট টেকনিক।
লেকচারার: আলমা ম্যাটার বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি কোচিং।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে