160218200210_bd_rohingya_camp_woman_640x360_bbcbangla_nocredit

বিডি নীয়ালা নিউজ(১৯ই ফেব্রুয়ারী১৬)-ঢাকা প্রতিনিধিঃ বাংলাদেশে যখন রোহিঙ্গা গণনা শুরু হতে যাচ্ছে তখন মিয়ানমারে নতুন গণতান্ত্রিক সরকার গঠনের প্রক্রিয়া চলছে। এ বাস্তবতায় বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গারা ভবিষ্যত সুদিনের স্বপ্ন দেখছেন।

বাংলাদেশে তাদের পরিস্থিতি আরো ভাল হবে এমন প্রত্যাশা যেমন আছে তেমনি অনেকেই চান নিজের দেশে ফিরে যেতে।

টেকনাফের লেদা নামে অনিবন্ধিত এক রোহিঙ্গা শিবিরে সরকারি লোকজন দেখে আগ্রহ নিয়ে ছুটে আসে রোহিঙ্গা শিশু। এদের পূর্বপুরুষ সবাই মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে বহু বছর আগে। এ শিবিরে চার হাজার পরিবারে আনুমানিক ৩০ হাজার জনগোষ্ঠীর বসবাস করছে। বাংলাদেশ সরকারের শুমারির উদ্যোগকে ইতিবাচক ভাবেই নিয়েছেন এখানকার রোহিঙ্গারা।

রোহিঙ্গা শুমারির জন্য প্রতিটি বাড়িকে আলাদা করে চিহ্নিত করা হয়েছে। কক্সবাজারে সবচেয়ে বেশি রোহিঙ্গা থাকলেও তিন পার্বত্য জেলা এবং পটুয়াখালীকে শুমারির আওতায় আনা হয়েছে।

কর্মকর্তারা বলছেন মার্চ মাস থেকে ৬টি জেলায় রোহিঙ্গা শুমারি শুরু হবে। বাংলাদেশে কোথায় কত সংখ্যক মিয়ানমারের নাগরিক আছে তার সঠিক সংখ্যা নিরূপণ মূল উদ্দেশ্য হলেও এর মধ্য দিয়ে প্রত্যাবাসনের জন্য কূটনীতিক তৎপরতাও চালাতে পারবে সরকার।

কক্সবাজার জেলা পরিসংখ্যান অফিসের উপপরিচালক মো. ওয়াহিদুর রহমান বলেন, রোহিঙ্গাদের সম্পর্কে সরকারের কাছে কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য নাই। এই মুহূর্তে উখিয়ার কুতুপালং এবং টেকনাফের নয়াপাড়া ক্যাম্পে নিবন্ধিত ৩২ হাজার রোহিঙ্গা আছে। তবে অনিবন্ধিত রোহিঙ্গার সংখ্যা আনুমানিক তিন থেকে ৫ লাখ।

তিনি বলেন, ‘‘আমরা যখন ফাইনাল সেনসাস করবো ওদের ছবিও নিয়ে যাবো ওরা যারা মিয়ানমার থেকে এদেশে চলে এসেছে যদি কোনো জমির দলিল বা ডকুমেন্ট থাকে সেগুলো নিয়ে যাব। সরকার চাচ্ছে ওদের (মিয়ানমার) সাথে যদি কথা বলতে হয় ডকুমেন্ট নিয়ে, ড্যাটা নিয়ে, ইনফরমেশন নিয়ে জোর দিয়ে কথা বলতে পারে।

এদিকে বাংলাদেশ মিয়ানমার সীমান্ত পথে অবৈধভাবে প্রতিদিনই বাংলাদেশে ঢুকছে রোহিঙ্গারা। বিজিবির হিসেবেই গড়ে ১৫-২০জনকে প্রতিদিন আটক করে ফেরত পাঠানো হয়। কক্সবাজার বিজিবির সেক্টর কমান্ডার কর্নেল এস এম আনিসুর রহমান জানান ২০১৫ সালে ৬ হাজার ১৩১ জনকে পুশব্যাক করা হয়েছে। শুমারিকে সামনে রেখে অনেকেই ঢুকে পড়তে পারে বলে সন্দেহ আছে।

 

‘‘তারা এ সুবিধাটা নিতে পারে এবং আসার সংখ্যাটা বেড়ে যেতে পারে, এদিকে আমাদের নজর আছে।’’

কক্সবাজারে রোহিঙ্গাদের নিয়ে কাজ করে আন্তর্জাতিক অভিবাসী সংস্থা আইওএম বলছে, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন একটি দীর্ঘমেয়াদী জটিল প্রক্রিয়া। সংস্থাটির কর্মকর্তা আসিফ মুনীর বলছেন অতীতে প্রত্যাবাসনের পর তাদের অনেকে আবার বাংলাদেশে ফেরত এসেছে।

‘‘রিপ্যাট্রিয়েশনের ব্যাপারটা জটিল। সেখানে যদি তারা যেটাকে তাদের নিজেদের দেশ মনে করে মায়ানমারে যে অধিকার বা যেভাবে তারা থাকতে চান বা জাতিগতভাবে দাঙ্গার সম্মুখীন যেন তারা না হন। এ ধরনের কিছু পরিস্থিতি, মানে তাদের সকল অধিকার নিয়ে থাকার মতো সংবেদনশীল পরিবেশ পরিস্থিতি তৈরি না হয়, তাহলে সেখানে গিয়ে তারা স্বাচ্ছন্দ বোধ করবেন না বরং এই প্রবণতাটি থেকে যাবে।’’

রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে বাংলাদেশের জন্য একটা বড় সমস্যা হিসেবে দেখা হয়। শুমারির পর এদের পরিচয় এবং প্রত্যাবাসনের ব্যাপারে কী সিদ্ধান্ত হবে সেটি এখনো পরিষ্কার নয়।

 

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে