Nijami

বিডি নীয়ালা নিউজ(৭জানুয়ারি১৬)- অনলাইন প্রতিবেদনঃ ১৯৭১ সালের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধে জামায়াতে ইসলামীর আমির মতিউর রহমান নিজামীকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের নির্দেশ দিয়েছেন সুপ্রিমকোর্টের  আপিল বিভাগ। জনাকীর্ণ বিচারকক্ষে আপিল বিভাগের চার সদস্যের একটি নির্দিষ্ট বেঞ্চের পক্ষে গতকাল এ মামলার রায় ঘোষণা করেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা।

এ রায়ে নিজামীর আপিল আংশিক মঞ্জুর করেছেন আদালত। এর ফলে ফাঁসির দড়িতে ঝুলতেই হচ্ছে নিজামীকে। বিগত বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের প্রথমে কৃষি ও পরে শিল্পমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী মতিউর রহমান নিজামী ১৯৬৯ থেকে ’৭১ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ছিলেন তৎকালীন জামায়াতে ইসলামীর ছাত্র সংগঠন নিখিল পাকিস্তান ইসলামী ছাত্রসংঘের সভাপতি। একাত্তরে দখলদার পাকিস্তান বাহিনীর সহযোগী ঘাতক সংগঠন আলবদর বাহিনীরও প্রধান ছিলেন তিনি। একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধে বাংলাদেশের কোনো রাজনৈতিক দলের শীর্ষতম ব্যক্তির বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ আদালত থেকে প্রথম ফাঁসির আদেশ এটাই। মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় আপিল বিভাগের এটি ষষ্ঠ রায়। ইতিমধ্যে ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলায় নিজামীকে ফাঁসির দণ্ড দিয়েছেন চট্টগ্রামের একটি আদালত। সে মামলায় করা আপিল এখন হাইকোর্টে বিচারাধীন।

বিচারিক আদালতে প্রমাণিত আট অভিযোগের মধ্যে বুদ্ধিজীবী গণহত্যা, হত্যা, ধর্ষণের দ্বিতীয়, ষষ্ঠ ও ষোড়শ অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড এবং হত্যা-নির্যাতন সম্পর্কিত সপ্তম ও অষ্টম অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের দেওয়া দণ্ডই বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ। আর ট্রাইব্যুনালে প্রমাণিত প্রথম, তৃতীয় ও চতুর্থ অভিযোগ থেকে আপিলে খালাস পেয়েছেন নিজামী। রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছে সরকারপক্ষ। তবে আসামিপক্ষ বলছে, রায় পর্যালোচনার পর রিভিউর বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে। এখন অপেক্ষা আপিলের পূর্ণাঙ্গ রায়ের। প্রচলিত আইনে পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের কোনো ধরাবাঁধা নিয়ম নেই। পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের পর তা হাতে পেয়ে ঘাতক নিজামীর মৃত্যু পরোয়ানা জারি করবেন ট্রাইব্যুনাল। প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে আপিল বিভাগের নির্দিষ্ট একটি বেঞ্চের চার সদস্য এজলাসে আসন গ্রহণ করেন সকাল ৯টার পরে। বেঞ্চের অন্য সদস্যরা হলেন— বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা, বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ও বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী। সরকারপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুব আলম,  অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মুরাদ রেজা ও মোমতাজ উদ্দিন ফকির। আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন, এস এম শাহজাহান ও মুহাম্মদ শিশির মনির। নিজামীর ছেলে ব্যারিস্টার নাজিব মোমেনও উপস্থিত ছিলেন আদালতে। রায় ঘোষণা উপলক্ষে সুপ্রিমকোর্ট প্রাঙ্গণে নেওয়া হয় কড়া নিরাপত্তাব্যবস্থা।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে