ডেস্ক রিপোর্টঃ জেলার আটটি উপজেলায় ২৭ টি আশ্রয়ণ প্রকল্পের একহাজার ৭২৮টি ভূমিহীন হতদরিদ্র পরিবারের জীবন পাল্টে দিয়েছে আশ্রয়ণ প্রকল্প।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, জেলার সদর উপজেলায় ১টি, মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলায় ১৩টি, আগৈলঝাড়া উপজেলায় ১টি, হিজলা উপজেলায় ৫টি, বানারীপাড়া উপজেলায় ৪টি, মুলাদী উপজেলায় ১টি, উজিরপুর উপজেলায় ১টি এবং গৌরনদী উপজেলায় ১টি আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় মোট প্রায় ১ হাজার ৭২৮ টি পরিবার রয়েছে।
এরমধ্যে সরকার এই আশ্রয়ণ প্রকল্পগুলোকে বিদ্যুৎ সংযোগের আওতায় এনেছে।পাশাপাশি, মানুষের গৃহ ও জীবিকার ব্যবস্থা করেছে বর্তমান সরকার।
জেলার সদর উপজেলার চরকাউয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ চরকরঞ্জি গ্রামের আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দা দেলোয়ার হোসেন (৫০) বলেন, ‘বর্তমান সরকার আমাদের মাথার গোজার ঠাঁই দিয়েছে, স্বাবলম্বী হতে বিনা শর্তে ঋন দিয়েছেন। সরকারের এমন সহযোগিতার ফলে আমাদের সন্তানদের পড়াশোনা করাতে পারছি।’
জেলা সমবায় কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান জানান, সরকার পুনর্বাসিত পরিবারগুলোর জন্য সম্ভাব্য ক্ষেত্রে কমিউনিটি সেন্টার, মসজিদ, কবরস্থান, মৎস্য চাষ ও গবাদিপশু পালনের জন্য সাধারণ জমির ব্যবস্থা করে আসছেন।পাশাপাশি পুনর্বাসিত পরিবারের সদস্যদের বিভিন্ন উৎপাদনমুখী ও আয়বর্ধক কর্মকান্ডের জন্য ব্যবহারিক ও কারিগরি প্রশিক্ষণদান এবং প্রশিক্ষণ শেষে ক্ষুদ্রঋণ বিতরণ করছে। এরমধ্যে রয়েছে ক্ষুদ্র ব্যবসা, রিকশা ক্রয়, হাঁস-মুরগি পালন, গরু মোটাতাজা করণ, দর্জি প্রশিক্ষণ।
সমবায় অফিসার জানান, এ প্রকল্পের মাধ্যমে বর্তমান সরকার জেলায় ৬৮১টি পরিবারকে ইতিমধ্যে ঋণ প্রদান করেছেন। এই ঋণ বিতরণের ক্রমপুঞ্জিভূত পরিমাণ ১ কোটি ৩৫ লাখ ৫৯ হাজার টাকা।
তিনি আরো জানান, প্রকল্প এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ, মা ও শিশুর স্বাস্থ্য পরিচর্যা নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে পরিবার-পরিকল্পনা বিভাগ কার্যক্রম পরিচালনা করছে। প্রাথমিক শিক্ষার আওতায়ধীন সকল শিশুর স্কুলে যাওয়া নিশ্চিত করা হয়েছে। পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা ও সুস্বাস্থ্য নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে প্রকল্প এলাকায় স্যানিটারি ল্যাট্রিন ও গোসলখানা নির্মাণ করা হয়েছে।
মিজানুর রহমান বলেন, প্রকল্পের সকল সুবিধাভোগীর জন্য শতভাগ স্যানিটেশন নিশ্চিত করার পাশাপাশি বিশুদ্ধ পানির জন্য গভীর ও অগভীর নলকূপ স্থাপন করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আশ্রয়ণ প্রকল্পে পুনর্বাসিত সুবিধাভোগিরা আত্ম-কর্মসংস্থানের মাধ্যমে স্বাবলম্বী হয়ে উঠছেন। যেসব ভিক্ষুক এই প্রকল্পের সহায়তা পেয়েছেন তারা এখন নিজের ভাগ্য পরিবর্তন করে সম্মানজনক পেশায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন।”
এ প্রসঙ্গে জেলা প্রশাসক এসএম অজিয়র রহমান বলেন, ‘সরকারের বিশেষ অগ্রাধিকার এই প্রকল্পের মাধ্যমে সুবিধাভোগিদের একটি করে ঘর করে দেয়ার পাশাপাশি পরিবারের সদস্যদের চাহিদা মতো কর্মমূখী প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। প্রশিক্ষণ শেষে পরিবার প্রতি ৩০ হাজার টাকা করে সুদমুক্ত ঋণ দেয়া হয়েছে। এই ঋণ নিয়ে তারা আয়বর্ধক কর্মকান্ডে যুক্ত হয়ে নিজেদের ভাগ্যের পরিবর্তন করছেন।’
তিনি বলেন, প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য হলো ভূমিহীন, গৃহহীন ও ছিন্নমূল অসহায় মানুষের আবাসন সুবিধা দেয়ার পাশাপাশি ঋণ ও প্রশিক্ষণ দিয়ে জীবিকা নির্বাহে সক্ষম করে তোলা।
বাসস

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে