ডেস্ক রিপোর্ট : জেলার নেছারাবাদ (স্বরুপকাঠী) উপজেলায় জমজমাট হয়ে উঠেছে ভাসমান নৌকার হাট। চলতি বর্ষা মৌসুমকে সামনে রেখে উপজেলার আটঘর এলাকার সন্ধ্যা নদীর খালের হাটে দুর-দূরান্ত থেকে ক্রেতারা ছুটে আসছেন। প্রতি সপ্তাহের শুক্রবার নয়নাভিরাম নৌকার হাটে বিভিন্ন ধরনের নৌকার পসরা সাজিয়ে বসছেন বিক্রেতারা। মেহগনি, কড়াই, আম, চাম্বল, রেইনট্রী গাছের তৈরি নৌকা মানভেদে ৮শ’ থেকে ৬ হাজার টাকা দরে বিক্রি করা হয়।
জানা যায়, এই উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের ১৩টি গ্রামের প্রায় দেড় সহ¯্রাধিক পরিবার বংশ পরাক্রমায় নৌকার ব্যবসার সাথে জড়িত। আর বর্ষা মৌসুম হলো তাদের কাজের সময়। অন্যসময় গাছ ও কাঠের ব্যবসায় মনোনিবেশ করলেও বর্ষায় তাদের ভালো টাকা লাভ হয়। তাই এই সময়টার অপেক্ষায় থাকেন নৌকার কারিগররা। অন্যান্যসময়ও এখানে হাট বসে, নৌকা বিক্রি হয়। তবে বর্ষার মতো এতটা হয়না। এসময় পরিবারগুলোর ব্যস্ততা বেড়ে যায় চোখে পড়ার মত।
নদী বেষ্টিত এই অঞ্চলে প্রাকৃতিকভাবেই অসংখ্য নদী ও খালের শাখা বয়ে গেছে গ্রামগুলোর কোল ঘেষে। মানুষের যাতায়াত ও ক্ষুদ্র বিক্রেতাদের অন্যতম বাহনে রূপ নেয় নৌকা। কারণ বর্ষার অথৈ জলে খাল-বিল নদী-নালা টইটুম্বর থাকে। নৌকায় করে চলাচলসহ ক্ষুদ্র বিক্রেতারা সবজিসহ হরেক ধরনের পণ্য বিক্রি করেন। এছাড়া কৃষি কাজ পরিচর্যা, পেয়ারা বাগান থেকে পেয়ারা সংগ্রহ ও বিক্রি, বিল থেকে শাপলা তোলা, মাছ শিকার করাসহ নানান প্রয়োজনে নৌকা অপরিহার্য। যুগ যুগ ধরে নৌকা এখানকার দীর্ঘ সময়ের ঐতিহ্য বহন করে। এ যেন চিরচেনা বাংলার অপরুপ সৌন্দর্যের কথা জানান দেয়।
স্থানীয় নৌকার কারিগর অমল দাস বলেন, তিনি গত ৩৫ বছর ধরে নৌকা তৈরি ও বিক্রি করে আসছেন। পারিবারিকভাবেই তিনি এই পেশায় এসেছেন। অন্যান্য হাটের চেয়ে এখানে ক্রেতা বেশি আসেন বলে বিক্রি ভালো হয়। প্রতি হাটে ৫ থেকে ৮টি নৌকা বিক্রি হয় বলে জানালেন তিনি।
হাটের ব্যবসয়ীরা জানান, এখানকার মানুষ নৌকায় করেই ছোট-খাটো ব্যবসা ও বিভিন্ন কর্ম সম্পাদন করে থাকেন। তাই অপেক্ষাকৃত ছোট পেনিস নৌকার চাহিদা সবচে বেশি। আর এসব নৌকা তৈরিতে সর্বোচ্চ ২ থেকে ৩দিন সময় লাগে। এর মূল্য ধরা হয়ে থাকে ২ থেকে আড়াই হাজার টাকা। আর মূল্য কম থাকায় ক্রেতারাও ঝুঁকছেন পেনিস নৌকা ক্রয়ে।

বি/এস/এস/এন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে