fload

বিডি নীয়ালা নিউজ( ২৭ই আগস্ট ২০১৬ইং )-ডেস্ক রিপোর্টঃ পদ্মা নদীর হার্ডিঞ্জ সেতু এলাকায় পানি বিপদসীমার মাত্র দশমিক ১২ সেন্টিমিটার দূরে অবস্থান করছে। পদ্মা নদীতে পানির বিপদসীমা হচ্ছে ১৪ দশমিক ২৫ সেন্টিমিটার। সেখানে শনিবার সকাল ৯টায় পানি প্রবাহিত হচ্ছে ১৪ দশমিক ১৩ সেন্টিমিটার। বিপদসীমা থেকে মাত্র দশমিক ১২ সেন্টিমিটার দূরে অবস্থান করছে।

ভারতে বন্যার পানি সরানোর জন্য ফারাক্কা বাঁধের গেট খুলে দেয়ার পর থেকে পদ্মায় অস্বাভাবিকভাবে পানি বাড়তে থাকে। এর ফলে পদ্মাপাড়সহ আশেপাশের গ্রামগুলো পানিতে তলিয়ে যায়। পানিবন্দি হয়ে আছে ৬০ হাজার মানুষ। বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো।

এদিকে পদ্মার পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এর প্রধান শাখা গড়াই নদীতেও অব্যহতভাবে পানি বাড়ছে।

কুষ্টিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী নৈমূল হক জানান, কুষ্টিয়ার পদ্মা নদীতে পানির বিপদসীমা ১৪ দশমিক ২৫ সেন্টিমিটার। শুক্রবার সন্ধ্যায় পানি প্রবাহিত হয়েছিল ১৪ দশমিক ৭ সেন্টিমিটার। আজ শনিবার সকালে পানি প্রবাহিত হচ্ছে ১৪ দশমিক ১৩ সেন্টিমিটার।

তিনি বলেন, পানির মাপ পর্যবেক্ষণ করার জন্য কুষ্টিয়ায় একটি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। প্রতি ৩ ঘণ্টা পর পর পানির মাপ পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। তবে যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবেলায় পানি উন্নয়ন বোর্ড সতর্ক রয়েছে বলে জানান এই কর্মকর্তা।

পদ্মার পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এর প্রধান শাখা গড়াই নদীতেও পানি বেড়ে গেছে। ফলে গড়াই নদীর তীরবর্তী হাটশ হরিপুর গ্রামে বিভিন্ন পয়েন্টে ভাঙন দেখা দিয়েছে।

এদিকে শনিবার সকাল পর্যন্ত পদ্মার পানিতে জেলার দৌলতপুর উপজেলা চিলমারি ও রামকৃঞ্চপুর ইউনিয়নের ৩৫টি ও ভেড়ামারা উপজেলার ২টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে ৬০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে আছে।

পদ্মার পানি বৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে ভেড়ামারার সবচেয়ে পুরনো আশ্রয়ণ প্রকল্প-১ এর বসতবাড়ি সরিয়ে নিতে এবং জনসাধারণকে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে ভেড়ামারা উপজেলা নির্বাহী অফিসার শান্তিমনি চাকমা।

এরপর থেকেই সরিয়ে নেয়া হচ্ছে উপজেলার সবচেয়ে পুরনো চর গোলাপনগর আশ্রয়ণ প্রকল্প-১এর বসত বাড়িগুলো। একমাত্র প্রাথমিক বিদ্যালয়টিও এখন হুমকির মুখে। যে কোনো সময় পদ্মার গর্ভে বিলীন হয়ে যেতে পারে বিদ্যালয়টি।

ভেড়ামারার মোকারিমপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক মেম্বার বাবুল আকতার জানিয়েছে, হঠাৎ করেই পদ্মা ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করেছে। ক্রমশ পানি বৃদ্ধির ফলে তলিয়ে যাচ্ছে ফসলের মাঠ এবং গ্রাম। ইতিমধ্যে চর ঢাকাপাড়া, সলেমানীর চর এবং চর গোলাপনগর তলিয়ে গেছে।

পানিবন্দি মানুষের অভিযোগ, শুক্রবার সকাল থেকে তারা পানি বন্দি অবস্থায় রয়েছে। ঘরের সব কিছুই পানিতে তলিয়ে গেছে। নষ্ট হয়ে গেছে ঘরে রাখা সকল ফসল। ২৪ ঘন্টা অতিবাহিত হলেও দুর্গত এলাকায় এসে কেউ খোঁজ খবর নেয়নি। এসব এলাকায় তীব্র খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে।

দৌলতপুর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা জয়নাল আবেদীন জানান, চিলমারী ইউনিয়নের ১৮টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠদান বন্ধ ঘোষণা দেয়া হয়েছে। পানি কমে গেলে পুনরায় পাঠদান দেয়া হবে।

কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মুজিব উল ফেরদৌস জানান, তাৎক্ষনিক চিলমারি ইউনিয়নে ৬টন চাল দেয়া হয়েছে। এছাড়া আমাদের পর্যাপ্ত ত্রাণ প্রস্তুত আছে। প্রয়োজনে আরও ত্রাণ সরবরাহ করা হবে।

 

 

 

jugantor

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে