1475494757

ডেস্ক রিপোর্টঃ ডিমলায় কাজের মেয়ের উপর এ কেমন বর্বরতা শিরোনামে ২ অক্টোবর নীলফামারীনিউজসহ দেশের বিভিন্ন গনমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হবার পর দেশে- বিদেশে সেই ঘটনাটি নিয়ে নতুন করে আবারো মুল্যবোধ ও মানবতার প্রশ্ন নিয়ে ব্যাপক আলোড়ন সৃস্টি হয়েছে। অনেকে ফোন করে গৃহকর্মী শিশু আর্জিনার (১৩) খবর জেনে নিচ্ছেন।

সেই সঙ্গে এই নির্যাতনের আইন সহায়তা দিতে ঢাকার আইন ও সালিস কেন্দ্র এগিয়েও এসেছেন। আইন ও সালিশ কেন্দ্রের এ্যাডঃ শিল্পি শাহ ঢাকা হতে মোবাইল ফোনে বলেন, নির্যাতনের শিকার মেয়েটিকে টাঙ্গাইল আদালতে নিয়ে মামলা করতে সকল খরচ আইন ও সালিশ কেন্দ্রই বহন করবে।এ ছাড়া নির্মম নির্যাতিত শিশুটির চিকিৎসার জন্য লন্ডন প্রবাসী মাদারীপুরের আব্দুল জলিল ব্যাপারী ২০ হাজার টাকা আর্জিনার মায়ের নামে প্রেরন করেছে সোমবার বিকালে।

সোমবার সকালে নীলফামারীর ডিমলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আর্জিনাকে দেখতে যায় ডিমলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রেজাউল করিম, ডিমলা থানার ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন। এ সময় তারা আর্জিনা ও তার পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন এবং চিকিৎসা সেবার খোঁজ খবর নেন।এ ছাড়াও আর্জিনার চিকিৎসা ও আইন সহায়তার জন্য এগিয়ে আসেন পল্লীশ্রী এলএইচডিপি প্রকল্পের ফিল্ড ফেসিলিটের ও মানবাধিকার কর্মী নার্গিস বেগমসহ শিশু নির্যাতন প্রতিরোধ ডিমলা উপজেলা মোবাইল টিমের সদস্যগন। ডিমলা থানার ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন জানান, মেয়েটি নির্যাতনের শিকার টাঙ্গাইলে হওয়ায় এ সংক্রান্ত মামলা টাঙ্গাইল সদর থানা বা আদালতে করতে হবে। ডিমলা হাসপাতালে মেডিকেলের ডাঃ ইয়াসমিন ইসলাম সোমবার বিকালে আবারো সংবাদ মাধ্যমকে জানান, শিশু মেয়েটি যথাসাধ্য চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। তবে তাকে দুই একদিনের মধ্যে উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিতে হতে পারে।

এদিকে সোমবারও টাঙ্গাইলের গৃহকর্তা তাজুল ইসলাম মোবাইল ফোনে সাংবাদিকদের জানান, তিনি দেশের অনেক জাতীয় নিউজপোর্টাল ও জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় আর্জিনার খবরটি দেখে অবাক হয়েছেন। তার বাড়ির কোন সদস্য শিশু গৃহকর্মি আর্জিনাকে কোনো প্রকার নির্যাতন করেনি আর্জিনা চর্ম রোগে আক্রান্ত বলেও মাঝ দিয়ে শাক ঢাকার চেষ্টা করেন তিনি।

উল্লেখ, শিশু গৃহকর্মী আর্জিনা(১৩) রবিবার দুপুরে নীলফামারীর ডিমলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছে। সে নীলফামারীর ডিমলার পাশ্ববর্তি তিস্তা নদীর ওপারে লালমনিরহাটের হাতিবান্ধা উপজেলার আরাজি শেখ সিন্ধু গ্রামের আনছার আলী ও মা আনজু বেগমের মেয়ে। সে গত ৭ বছর ধরে টাঙ্গাইল জেলা শহরের পৌর এলাকার ১৭ নম্বর ওয়াডের বিশ্বাস বেতকা মহল্লার শিবনাথ পাড়ার আমির আলীর ছেলে তাজুল ইসলামের বাড়িতে গৃহকর্মীর কাজ করতো। মেয়েটিতে ওই বাড়িতে কাজের জন্য নিয়ে গিয়ে দেয় ডিমলার গয়াবাড়ি বাজারের সংলগ্ন বসবাসরত শাহিনুর নামের এক ব্যক্তি।

অভিযোগ গৃহকর্মীর কাজ করতে গিয়ে ওই বাড়ির গৃহকর্তার স্ত্রী আমেনা বেগম ও তাদের মেয়ে লাভলী আক্তারসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের নিষ্ঠুর মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্মম নির্যাতনের শিকার হয় আর্জিনা।

গত শনিবার রাতে আর্জিনাকে তার দাদা নুরু মিয়া টাঙ্গাইল হতে অসুস্থ্য অবস্থায় নিয়ে আসে। এরপর এলাকাবাসীর সহায়তায় তাকে ডিমলা সরকারী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তারপর দেশের বিভিন্ন গনমাধ্যমে বিষয়টি প্রকাশিত হলে অন্যান্য এলাকার মতই নীলফামারী জেলাসহ আশ-পাশের জেলা জুড়ে ব্যাপক আলোড়ন সৃস্টি হয়।

ন/ন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে