ডেস্ক রিপোর্টঃ ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে সিদ্ধিরগঞ্জের কান্দাপাড়ার মিজমিজি এলাকায় অবস্থিত নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে ইংরেজি মাধ্যমের একটি স্কুলের অন্তত ২০ শিশুছাত্রীকে ধর্ষণ করেছেন প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষক আরিফুল ইসলাম সরকার ওরফে আশরাফুল। পাঁচ বছর ধরে কোমলমতি শিশুদের যৌন নিপীড়ন করে তা আবার মোবাইল ফোনে ভিডিও করে রাখতেন। সেই সব ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে আবার ধর্ষণ করতেন। গত পাঁচ বছর ধরে এই যৌন নিপীড়ন চালিয়ে আসছিলেন তিনি।

সেই ‘সিরিয়াল রেপিস্ট’কে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব ও পুলিশ। তাকে সহযোগিতা করার অভিযোগে স্কুলটির প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলাম জুলফিকারকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার দুপুরে সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি এলাকায় ওই স্কুলে অভিযান চালায় র‍্যাব ও পুলিশ। ঘটনাটি এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। খবর ছড়িয়ে পড়লে শত শত অভিভাবক ও এলাকাবাসী ছুটে গিয়ে স্কুল ঘেরাও করে বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করে তারা।

র‍্যাবের দেওয়া তথ্য মতে, স্কুলের গণিত বিষয়ের সহকারী শিক্ষক আরিফুল ইসলাম সরকার ওরফে আশরাফুল কোমলমতি শিশুদের যৌন নিপীড়ন করে তা আবার মোবাইল ফোনে ভিডিও ধারণ করে রাখেন। দীর্ঘ পাঁচ বছর ধরে তিনি এমন কাণ্ড ঘটিয়ে আসছিলেন। একবার দুইবার বা পাঁচ-দশবারেই শেষ নয়। যে শিশুটি পঞ্চম শ্রেণি শেষ করে অন্য স্কুলে ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি হয়ে আজ নবম শ্রেণিতে পড়ছে সেই মেয়েটিও পাষণ্ড ওই শিক্ষকের লালসা থেকে বের হতে পারছে না। তাকে ভয় দেখানো হচ্ছে ভিডিও ফাঁস করে দেওয়ার। এভাবে ২০টিরও বেশি শিশু শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ বা যৌন নিপীড়ন অব্যাহত রেখেছে। স্কুলের প্রধান শিক্ষক বিষয়টি দেখেও যেন না দেখার ভান করতেন।

র‍্যাব ১১-এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আলেপ উদ্দিন বলেন, ‘আজ বৃহস্পতিবার সকালে আমরা খবর পাই যে সিদ্ধিরগঞ্জের অক্সফোর্ড স্কুলের একজন শিক্ষক কিছু ছাত্রীকে যৌন হেনস্তা করেছেন। তার মোবাইল ফোন নিয়ে সার্চ করে আমরা হতবাক হয়ে যাই। ২০ জনেরও বেশি ছাত্রীর ভিডিও তার মোবাইল ও ল্যাপটপে রয়েছে। কোচিংয়ের নামে নিজের ফ্ল্যাটে নিয়ে এসব করে ভিডিও ছবি ধারণ করে ব্ল্যাকমেইল করতেন। এরপর যৌন নিপীড়নের ভিডিও ও স্থিরচিত্র তা মোবাইল ও ল্যাপটপে সংরক্ষণ করে রাখতেন। আমরা প্রধান শিক্ষককেও গ্রেপ্তার করেছি। কারণ তিনি এ বিষয়টি জানা সত্ত্বেও কোনো ব্যবস্থা নেননি বলে প্রমাণ মিলেছে।’

র‍্যাব কর্মকর্তা জানান, সহকারী শিক্ষক আরিফুল পাঁচ বছর ধরে অপকর্ম করে আসছেন তা জানতেন প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলাম জুলফিকার। এজন্য তাঁকেও গ্রেপ্তার করা হয়।

ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করে অভিভাবক ও স্থানীয়রা। এ সময় অনেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি বন্ধ করে দেওয়ার দাবিও জানায়। তবে কয়েকশ কোমলমতি শিশু শিক্ষার্থীর এই প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ হলে সন্তানদের শিক্ষাকার্যক্রম ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা করে অভিভাবকদের অনেকে।

পিবিএ/এএইচ

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে