1475921290-700x445

নীলফামারী প্রতিনিধিঃ সৈয়দপুরের সাথে রাজধানীসহ দক্ষিণ ও উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় রয়েছে আকাশ,রেল ও সড়ক পথের যোগাযোগ ব্যাবস্থা। আছে এ শহরে আর্ন্তজার্তিক মানের আবাসন সুবিধা। এ সুবিধা দ্বারা সৈয়দপুরের সুবিশাল গ্যালারিবিহীন স্টেডিয়ামে বিভিন্ন প্রান্তের ফুটবল ও ক্রিকেট দল আসত।

কানায়-কানায় পূর্ণ হতো দর্শকে। ক্রীড়াহীন এ স্টেডিয়ামটি এখন পোকা মাকড়ের বসতি আর গো-চারণ ভূমিতে পরিণত হয়েছে। তবে উদ্যোগ নিলে এ অনঞ্চলে সৃষ্টি হতো উন্নত ক্রীড়াঙ্গন। যোগ হতো দেশের ক্রীড়াঙ্গনে আরো একটি আন্তজার্তিক ভেন্যু। পাশাপাশি প্রত্যন্ত এলাকায় লুকিয়ে থাকা মেধাবীরা সুযোগ পেয়ে দেশের ক্রীড়াঙ্গনকে সমৃদ্ধ করে সুনাম বয়ে আনত বলে মনে করছেন স্থানিয় ক্রীড়াবিদ ও সচেতন রাজনিতিকরা।

শহরের দিনাজপুর সড়কে ঢাকা কোচস্ট্যান্ড সংলগ্ন পৌর ১১ নং ওয়ার্ডে কুন্দল দহলা এলাকায় ১৯৮০ সালে প্রায় ১২ একর জমি প্রাচীর দিয়ে ঘিরে এ উপজেলাবাসীর খেলাধুলার জন্য স্টেডিয়ামটি নির্মিাণ করেন। এরপর হতেই এখানে উপজেলা ক্রিড়া পরিষদের উদ্যগে ফুটবল লীগ,এ্যাথলেট প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হতো।

এছাড়া এলাকাবাসীর উদ্যগে ১৯৯৫ সালে ঢাকা গাজিপুরের ব্রার্দাস ইউনিয়নসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তের ১৬ টি অতিথি দল নিয়ে আফতাব-জহীর নামে একটি গোল্ডকাপ অনুষ্ঠিত হয়েছিল। সে প্রতিযোগিতায় ঢাকার অতিথি দলটি দেখেছে এ উপজেলার হাজার-হাজার ফুটবল প্রেমির উম্মাদনা।

এরপর সে প্রতিযোগিতা নিয়মিত আর হয়নি। বর্তমানে মাঠটি পরিচর্যা না হওয়ায় কোন ক্লাবই অনুশিলন করতে আসেন না। এভাবে এ জনপদের ফুটবল ও ক্রিকেট খেলা ও খেলোয়াড় প্রায়ই হারিয়ে যেতে বসেছে।

অথচ সৈয়দপুরের খেলোয়াড়দের নিয়ে গড়া হতো নীলফামারী জেলা ক্রিকেট দল। দির্ঘদিন ধরে চলায় এটি ঐতিহ্যে পরিণত হয়েছিল। আর অন্যন্য ইভেন্টেতো এ উপজেলার এ্যাথলেটরা জানে না। অথচ ১৯৯১ সালে ক্রীড়া সংস্থার উদ্যোগে স্থানিয় ক্লাবদের নিয়ে এ্যাথলেট এর ২৫টি ইভেন্টে প্রতিযোগিতা হয়েছিল। পরে আর এ প্রতিযোগিতাও আর হয়নি। এভাবে দিনের পর দিন কোন খেলাধুলা না হওয়ায় হুমকিতে পড়েছে এ জনপদ হতে সকল খেলাধুলা। স্টেডিয়ামে গিয়ে দেখা যায়, ৮০-১২০ মিটারের মাটটিতে দেড়ফুট উচ্চতার ঘাস। একই মাপের উভয়দিকের ২টি আউটফিল্ডের অবস্থা আরো ভয়ংকর।

জঙ্গলে ভরে গেছে। আর এর আড়ালে চলে তরুণদের জুয়া ও নেশার আড্ডা। যেন দেখার কেউ নেই। অথচ যোগাযোগ ব্যাবস্থায় এ শহরের বিমান বন্দরে ঢাকা হতে প্রতিদিন ৭টি ফ্লাইট ওঠা নামা করে। আকাশ পথের দূরত্ব আধ ঘন্টা। ট্রেনে খুলনা,যশোর,ঢাকাসহ সকল রেল এলাকায় যাওয়া-আসা। আবার বাসে বরিশালসহ দেশের সকল এলাকায় সহজ যাতাযাত ব্যাবস্থা থাকায় এ স্টেডিয়ামে সহজেই বিদেশি দল আসতে পারবে। আর এ কারণে উপজেলার ক্রীড়ামোদিসহ রাজনীতিবিদরা এ স্টেডিয়ামকে আন্তজার্তিক এ স্টেডিয়াম করার জন্য সর্বমহলে দাবি উঠেছে। এ উপজেলার প্রবীণ রাজনিতিক ও সাবেক পৌর চেয়ারম্যান আলহাজ বখতিয়ার কবির বলেন, উত্তর বঙ্গেও ১৬ জেলার চেয়ে আমরা মাঠ ও যোগাযোগ ব্যবস্থা,আবাসন ও নিরাপত্তা সুবিধায় এগিয়ে আছি। তাই এটি আমাদের প্রাণের দাবি।

বাংলাদেশ এ দলের সাবেক উইকেট কিপার মুহাম্মদ মুখতার সিদ্দিকি বলেন, দীর্ঘদিন ঢাকার মাঠে খেলেছি। সৈয়দপুরকে ক্রিকেট নিয়েই চিনত। এখন এ অবস্থা আর নেই। শুধু মাঠ আর খেলার অভাবে। এরপরেও এতবড় গ্রাউন্ডের স্টেডিয়াম উত্তরাঞ্চলে দ্বিতীয়টি নেই। অথচ কতৃপক্ষ এ নিয়ে কোন পদক্ষেপ নেন না।

এলাকাবাসী জানান, এখানে শুধু মহান স্বাধীনতা ও বিজয় দিবস উদযাপন হয়। আর খেলা বলতে প্রাথমিক ও উচ্চ বিদ্যালয়গুলোকে নিয়ে বঙ্গবন্ধু এবং বঙ্গমাতা প্রতিযোগিতা ছাড়া আর কোন খেলাই হয় না। এ স্টেডিয়ামে ফুটবল খেলে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী দলে বগুড়া এড়িয়া দলে খেলছেন ফেরদৌস হাসান বাপ্পি। তিনি জানান, বাংলাদেশে এত বড় মাপের মাঠ কোথাও নেই। তাই অন্যন্য সকল সুবিধা সৃষ্টি করে এটি আর্ন্তজাতিক হলে উত্তরাঞ্চলের ক্রীড়া উন্নয়নে বিপ্লব ঘটবে।

উন্নয়নের শতভাগ সম্ভাবনা থাকলেও মাঠটির জরাজীর্ণ দশা নিয়ে সৈয়দপুর উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার ফুটবল আহবায়ক মো. জোবায়দুল হক শাহীন বলেন, বাংলাদেশ অলম্পিক এসোশিয়েসন হতে বছরে মাত্র ৬৫ হাজার টাকা আসে।

এ টাকা দিয়ে খেলা ছাড়া অন্যন্য কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। তবে ফুুটবল ও ক্রিকেট লীগ শুরু করার পরিকল্পনা রয়েছে। আর এ সময় মাঠটি পরিস্কার করা হবে। মাঠটিকে শুধু জীর্ণদশা থেকে নয়। নীলফামারী-৪ আসনের সাংসদ আলহাজ শওকত চৌধুরী বলেন, ভৌগলিক ও অন্যন্য প্রস্ততকৃত সুবিধার ক্ষেত্র হতেই এ স্টেডিয়ামটি আন্তজার্তিক মানের পাওয়ার দাবি রাখি। তাই এ বিষয়টি নিয়ে অবশ্যই সংসদে অবশ্যই প্রস্তাব পেশ করব।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে