biggan

ডেস্ক রিপোর্টঃ দেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের উন্নয়নে চীনের কাছে সহযোগিতা চাইবে বাংলাদেশ। এরই অংশ হিসেবে শিগগিরই চীনের সঙ্গে একটি চুক্তি করতে যাচ্ছে সরকার। ওই চুক্তি অনুযায়ী, ১৫ বছর মেয়াদে এক হাজার কোটি (১০ বিলিয়ন) ডলারের একটি তহবিল গঠন হতে পারে।

চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিংপিং ১৪ ও ১৫ অক্টোবর বাংলাদেশ সফর করবেন। সফরকালে সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগের তরফ থেকে এক হাজার কোটি ডলারের একটি ‘ফ্রেম ওয়ার্ক এগ্রিমেন্ট ফর আইসিটি সেক্টর’-এর প্রস্তাব দেওয়া হবে। ওই প্রস্তাবের বিস্তারিত এরই মধ্যে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। সেখান থেকে তা প্রধানমন্ত্রীর দফতরে পাঠানো হবে। প্রধানমন্ত্রী অনুমোদন দিলেই তা পেশ করা হবে চীনের প্রেসিডেন্টের কাছে।

১০ বছরকে ৩ ধাপে ভাগ করে ফ্রেম ওয়ার্ক এগ্রিমেন্টের প্রস্তাবনা তৈরি করা হয়েছে। সেই অনুযায়ী স্বল্প, মধ্যম ও দীর্ঘ- এই তিন মেয়াদে ‍চুক্তি বাস্তবায়ন হওয়ার কথা। এই প্রস্তাবনার মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্ব পাবে সাইবার নিরাপত্তার বিষয়টি। এ ছাড়া প্রাতিষ্ঠানিক উন্নয়নও বেশ গুরুত্ব পাবে। অন্যদিকে চীনের কাছে অবকাঠামো নির্মাণ, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সসহ প্রযুক্তিগত সহায়তাও চাওয়া হবে।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ফ্রেম ওয়ার্ক এগ্রিমেন্ট ফর আইসিটি সেক্টর- এটা আমাদের প্রস্তাব। আমরা এরই মধ্যে তা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি। এটা পরবর্তী ১৫ বছরের জন্য। এটা মোটেও উচ্চাভিলাষী কোনও প্রস্তাব নয়। আমরা ২০৩০ সালে যখন আপার মিডল ইনকামের দেশ হবো, তখন এক হাজার কোটি ডলার আসলে কিছু নয়। আমরা ১৫ বছরের জন্য এক হাজার কোটি ডলার চেয়েছি।’

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট গোল অর্জনের ক্ষেত্রে যেসব উপাদান জড়িত, সেগুলোর সঙ্গে তথ্যপ্রযুক্তি সম্পর্কিত। যেমন ইনোভেশন, আইটি ইত্যাদি। প্রথমধাপে করা হবে স্কিলড এনহ্যান্সমেন্ট। দ্বিতীয় ধাপে টেকনোলজি ইকুইপমেন্ট অ্যাডাপ্ট করা হবে। আর তৃতীয় ধাপে কাজ হবে গবেষণা ও উন্নয়ন বিষয়ে। তিনটা জায়গায় ফ্রেম ওয়ার্ক এগ্রিমেন্টটা করা হবে।’

পলক বলেন, ‘আমরা চীনকে বলবো, দেখো আমাদের পরিকল্পনা আছে, আমরা স্টেপ বাই স্টেপ এগুবো। আমাদের এক হাজার কোটি ডলার দাও।’

এর বাইরেও আরও ১০০ কোটি ডলার চাওয়া হয়েছে চীনের কাছে। সেই টাকা দিয়ে আইটি কর্নার ও ইনফরমেশন সেন্টার গড়ে তোলা হবে। এগুলো মূলত এডুটেইনমেন্ট ও ১০ হাজার কম্পিউটার ল্যাব ইত্যাদির জন্য। দেশের যেসব স্থানে ফ্রি ওয়াইফোই জোন হবে (সারাদেশে ১ লাখ ওয়াইফাই হটস্পট তৈরি করা হবে) সেখানে স্থাপন করা হবে এই ইয়ুথ কর্নার বা ল্যান্ডিং ইনফরমেশন সেন্টার। ইয়ুথ কর্নারে স্থাপন করা হবে ইন্টারনেট কিয়স্ক ও একটা বড় এলইডি টিভি। ইন্টারনেট কিয়স্কে থাকবে উচ্চগতির ইন্টারনেট। সেই কিয়স্ক ব্যবহার করে তরুণরা অনলাইনে ‍দুনিয়া ভ্রমণ করতে পারবে।

এ বিষয়ে জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, ‘আমরা চলতি বছরের কাজের জন্য আলাদা করে ১০০ কোটি ডলার চেয়েছি। দেশের যেসব স্কুল, কলেজ ও অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ডিজিটাল ল্যাব নেই, সেসব জায়গায় ল্যাব তৈরি করতে চাই। ইয়ুথ কর্নার হবে একটি পরিপূর্ণ এডুটেইনমেন্ট প্যাকেজ। এই এলইডি স্ক্রিনে ক্রিকেট, ফুটবল ইত্যাদি খেলা লাইভ সম্প্রচার করা হবে। এছাড়া এই স্ক্রিনে ইন্টারনেট, সাইবার বুলিং, ইভটিজিং ইত্যাদি নিয়ে কিছু ভিডিও প্রচার করা হবে। বিনোদন এবং শিক্ষা- এই দুটো বিষয় এক সঙ্গে প্রচার করা হবে বলেই আমরা বলছি ইয়ুথ কর্নারটি হবে এডুটেইনমেন্ট কর্নার। এগুলো দিয়ে তরুণদের নৈতিকতা, মূল্যবোধ ইত্যাদি শেখানো হবে।’

বি/টি/এন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে