আসাদুজ্জামান পাভেল, ডিমলা (নীলফামারী) প্রতিনিধি: নীলফামারীর ডিমলায় ৫ম শ্রেনীর ছাত্রীকে শ্লীলতাহানি ও ধর্ষন চেষ্টা মামলায় আসামিকে আত্নসমর্পনের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। অভিযুক্ত ডিমলা উপজেলার নাউতারা ইউপি চেয়ারম্যান আশিক ইমতিয়াজ মোর্শেদ মনি ও তার বড় ভাই নাউতারা মডেল স্কুল এন্ড কলেজের ( প্রাইভেট প্রতিষ্ঠান) অধ্যক্ষ মাহামুদুল হাসান নয়নের আগাম জামিন না দিয়ে ২ সপ্তাহের মধ্যে নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করার জন্য নির্দেশ দেন আদালত। গত ১৯ মে মহামান্য হাইকোর্ট বিভাগের এনেক্স ভবনের ৫ নং আদালতের বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসাইন ও বিচারপতি এস এম মজিবুর রহমানের এক দ্বৈত বেঞ্চে এ আদেশ প্রদান করেন।

মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা যায়, গত ৩ মে ৫ম শ্রেণির এক ছাত্রীকে দীর্ঘদিন থেকে অনৈতিক প্রস্তাব, শ্লীলতাহানি ও ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে উপজেলার নাউতরা ইউপি চেয়ারম্যান আশিক ইমতিয়াজ মোর্শেদ মনি ও তার বড় ভাই নাউতরা মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের (প্রাইভেট প্রতিষ্ঠান) অধ্যক্ষ মাহামুদুল হাসান নয়নকে আসামি করে ডিমলা থানায় মামলা হয়। যার মামলা নং জি আর ৯০/২২ । আসামীদের হাইকোর্টের মামলার সিরিয়াল নং ৬০, টেন্ডার নং ২৭৭৯৩। থানায় মামলা দায়ের হওয়ার পর ইউপি চেয়ারম্যান ও তার ভাই গা ঢাকা দিয়েছে। সরকারিভাবে গত ২২শে এপ্রিল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের নির্দেশ থাকলেও নাউতরা মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ ২৮শে এপ্রিল পর্যন্ত বিভিন্ন অজুহাতে তার প্রতিষ্ঠানটি চালু রাখেন। গত ২৮শে এপ্রিল ক্লাস পরীক্ষা চলাকালীন সময় ৫ম শ্রেণির ঐ ছাত্রীর পরীক্ষার রুমে গিয়ে অধ্যক্ষ মাহামুদুল হাসান নয়ন ছাত্রীটি হিজাব পরে আসলে হিজাবের প্রতি কুটক্তি করে হিজাব খোলার নামে শরীরের বিভিন্ন স্পর্শকাতর স্থানে হাত দেয়। এতে ছাত্রীটি কান্নায় ভেঙে পড়লে পরীক্ষা শেষে তাকে অফিস রুমে নিয়ে এসে অধ্যক্ষ নয়ন ছাত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন। এ সময় সে কান্না করলে বিষয়টি কাউকে না বলার জন্য বিভিন্নভাবে হুমকি দেন অধ্যক্ষ। ছাত্রীটির বাবা গাইবান্ধার জেলার গোবিন্দগঞ্জে চাকরি করেন। গত ৩০ এপ্রিল ছাত্রীটির বাবা বাড়ি আসলে ছাত্রীটির মা তার বাবাকে বিষয়টি খুলে বলেন। ছাত্রীর বাবা স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যাক্তিসহ ঘটনাটি ইউপি চেয়ারম্যানকে অবগত করেন।

স্থানীয়রা জানায়, ১ মে রাতে বিষয়টি নিয়ে আপস মীমাংসার জন্য ইউপি চেয়ারম্যান ছাত্রীটির পরিবারের লোকজনসহ গন্যমান্য ব্যাক্তিদের ইউনিয়ন পরিষদে নিয়ে যায় কিন্তু রাত ৩টা পর্যন্ত ঘটনাটি সমাধান না করে টালবাহানা করে পরের দিন সকাল ১০ টায় আপোষ করার কথা বলে উল্টো ঘটনাটি ধাপাচাপা দিতে ছাত্রীর অভিভাবকদের বিরুদ্ধে এলাকায় মানববন্ধন করায়। ইউপি চেয়ারম্যান ঘটনাটি ভিন্নভাবে উপস্থাপনের মাধ্যমে ছাত্রীটির পরিবারকে সমাজে হেয়প্রতিপন্ন করার পাঁয়তারা করে। চেয়ারম্যান ও তার লোকজনের কারণে পরিবারটি চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। এদিকে মামলা করার পর ২ নং আসামী আশিক ইমতিয়াজ মোর্শেদ মনি চেয়ারম্যানের ক্ষমতাবলে বাদী ও তার পরিবারের উপড় মামলা প্রত্যাহারের জন্য বিভিন্ন প্রকার ভয়ভীতি ও হুমকি দিয়ে আসছে যার কারনে বাদী ও তার পরিবার চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। আসামীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্ত মুলক শাস্তির জোড় দাবী জানান এলাকাবাসী।
জানতে চাইলে ডিমলা থানার অফিসার ইনচার্জ লাইছুর রহমান বলেন, আসামীদের গ্রেফতারে পুলিশী অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে