1475518342
ডেস্ক রিপোর্টঃ
ভোট করলে পদ ছাড়তে হবে প্রশাসকদের *কোনো জনপ্রতিনিধিই পদে থেকে ভোট করতে পারবেন না
জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ভোটে অংশ নিতে এমপি ও জেলা পরিষদ প্রশাসককে বিদ্যমান পদ ছাড়তে হবে। এই বিধান সংযোজন করে জেলা পরিষদ অধ্যাদেশ সংশোধন করা হয়েছে। এই সংশোধনী আইন করার জন্য জেলা পরিষদ আইন সংশোধন অধ্যাদেশ অনুমোদন করেছে মন্ত্রিসভা। এর আগে অধ্যাদেশ আকারে জারিকৃত সংশোধনীতে ওই বিধান ছিল না। সেখানে অপরাপর জনপ্রতিনিধির কথা উল্লেখ ছিল।  মন্ত্রিসভা ‘ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন’ আইন যা অধ্যাদেশ আকারে জারি করা হয়েছিল সেটিও আইন করার অনুমতি দিয়েছে।
গতকাল সোমবার সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার নিয়মিত সাপ্তাহিক সভায় এ অনুমোদন দেয়া হয়। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। মন্ত্রিসভার সদস্যবৃন্দ, মন্ত্রিপরিষদ সচিব, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আবুল কালাম আজাদ ও সংশ্লিষ্ট সচিবরা সভায় উপস্থিত ছিলেন। স্থানীয় সরকার মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, সংসদের চলতি অধিবেশনেই জেলা পরিষদ সংক্রান্ত আইনটি পাস করার ইচ্ছা রয়েছে। আইন পাসের পর জেলা পরিষদ নির্বাচন আগামী ডিসেম্বর মাসে এ নির্বাচন হতে পারে।
এদিকে নির্বাচন কমিশন ইতিমধ্যে এ আইনের অধীন নির্বাচনী বিধিমালা তৈরির কাজ শুরু করেছে। ৬১ জেলা পরিষদের সীমানা নির্ধারণের কাজও শেষ হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব আব্দুল মালেক।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, জেলা পরিষদ সংশোধন অধ্যাদেশ-২০১৬’র খসড়ায় আনা সংশোধনীটি হচ্ছে নির্বাচনে ইচ্ছুক জেলা প্রশাসকদের পদত্যাগ সংক্রান্ত। সরকার কর্তৃক নিয়োগপ্রাপ্ত বর্তমান জেলা প্রশাসকরা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করতে চাইলে তাদের প্রশাসকের পদ থেকে পদত্যাগ করতে হবে। আগে এই বিধিটি অধ্যাদেশে ছিল না। এটি সংযুক্ত করা হয়েছে। একই সঙ্গে এমপিরাও যদি কেউ নির্বাচন করতে চান তাদেরকে পদত্যাগ করেই করতে হবে।
গত ২৯ আগস্ট ‘জেলা পরিষদ সংশোধন অধ্যদেশ-২০১৬’ এর খসড়ায় নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন দেয় মন্ত্রিসভা। আইন অনুযায়ী আয়তন  ও জনসংখ্যার ভিত্তিতে জেলা পরিষদকে ১৫টি ভাগ করা হয়েছে। একভাগে একজন করে সদস্য এবং প্রতি তিনটি ভাগে একজন করে সদস্য সংরক্ষিত আসন বিবেচনায় নির্বাচিত হবেন।
আইনের ১০ (ক) ধারায় বলা হয়েছে, জেলা পরিষদের কোনো সদস্য ফৌজদারি মামলায় চার্জশিট প্রাপ্ত হলে, গ্রেফতার হলে অথবা তার নামে ওয়ারেন্ট জারি হলে তিনি বরখাস্ত হবেন। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়কে এই বরখাস্তের কর্তৃত্ব দেয়া হয়েছে।
আইনে বলা হয়েছে, জেলা পরিষদ হবে ২১ সদস্যের। যার মধ্যে একজন চেয়ারম্যান, ১৫ জন সদস্য ও ৫ জন সংরক্ষিত মহিলা সদস্য। তারা নির্বাচিত হবেন সিটি করপোরেশনের মেয়র ও কাউন্সিলর, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান, ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও মহিলা সদস্য, পৌরসভার মেয়র এবং কাউন্সিলর এবং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যদের ভোটে।
আইনে বলা হয়েছে, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের নির্বাহী ক্ষমতা থাকবে চেয়ারম্যানের কাছে। তবে তার অনুপস্থিতিতে কাউন্সিলরদের মধ্যে থেকে একজন বা সরকারি কর্মকর্তারাও চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করতে পারবেন। সরকার গেজেট করে সরকারি কোনো কর্মকর্তাকেও এ দায়িত্ব দিতে পারবে।
পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন: পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন (সংশোধন) আইন ২০১৬ গতকাল মন্ত্রিসভা চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে। এ আইন সংশোধনের মধ্যদিয়ে কমিশনের চেয়ারম্যানের ক্ষমতা কমানো হচ্ছে। আগে চেয়ারম্যানের একক সিদ্ধান্তে কমিশনের কার্যক্রম পরিচালিত হতো। এখন সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যদের সিদ্ধান্তই কমিশনের সিদ্ধান্ত বলে গণ্য হবে। এছাড়াও আগে কমিশনে সদস্য ছিলেন সাতজন। এখন সদস্য সংখ্যা বেড়ে আটজন হয়েছে। আগে চেয়ারম্যানসহ তিনজন মিলে কোরাম হতো। এখন চারজন মিলে কোরাম হবে।
জানা যায়, আপিল বিভাগের একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি, পার্বত্য আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান, সংশ্লিষ্ট তিন পার্বত্য জেলা সার্কেলের তিন রাজা, বিভাগীয় কমিশনার মিলে এই কমিশনের সদস্য হবেন। তিন পার্বত্য জেলা সার্কেল হলো— বান্দরবানের মং, রাঙামাটির চাকমা, খাগড়াছড়ির ত্রিপুরা।
ই/ন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে