জাতিসংঘ মহাসচিবের নেতৃত্বে জলবায়ু অভিযোজন অর্থায়নকে মোট জলবায়ু অর্থায়নের ৫০ শতাংশে উন্নীত করার আহ্বান জানিয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়রের আতিকুল ইসলাম।

তিনি বলেন, জলবায়ু সংকট মানুষকে তাদের বাড়িঘর থেকে দূরে ঠেলে দিচ্ছে। এ সংকট মোকাবিলায় জলবায়ু অভিযোজনে আরও জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ দরকার। এছাড়া জলবায়ু তহবিলের অন্তত ৫০ শতাংশ ঢাকার মতো জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চল ও দ্রুত বর্ধনশীল শহরের জন্য বরাদ্দ প্রয়োজন।

বুধবার (১৮ মে) যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে জাতীসংঘ কার্যালয়ে নিরাপদ অভিবাসন নিশ্চিতে আয়োজিত এক আন্তর্জাতিক বৈঠকে এ আহ্বান তিনি জানান।

বৈঠকে মেয়র আতিক বলেন, ক্রমবর্ধমান জলবায়ু পরিবর্তনে বাংলাদেশের অন্যান্য অঞ্চলে বন্যা, ঘূর্ণিঝড় ও উপকূলীয় এলাকায় সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়ার কারণে প্রতিদিন দুই হাজার লোক ঢাকায় আসছে। জলবায়ু উদ্বাস্তু বাড়ার পাশাপাশি মিয়ানমারে সহিংসতা থেকে পালিয়ে আসা এক মিলিয়নের বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশ এরই মধ্যেই একটি গুরুতর মানবিক সংকটের সম্মুখীন হচ্ছে। রোহিঙ্গা শরণার্থীরা আরও ভালো সুযোগের সন্ধানে ঢাকার মতো শহরের দিকে চলে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, ঢাকা নিজেও জলবায়ু বিপজ্জনক একটি শহর। বিশেষত বন্যা ও তাপের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। যা মানুষের স্বাস্থ্যের ওপর মারাত্মক বিরূপ প্রভাব ফেলে।

ডিএনসিসি মেয়র বলেন, দুই কোটি মানুষের এই শহরে ৪০ শতাংশ মানুষ অনানুষ্ঠানিক বসতি স্থাপন করেছে ও ৭০ শতাংশ অনানুষ্ঠানিক বসতি স্থাপনকারীরা এরই মধ্যেই তাদের জীবনে পরিবেশগত বিরূপ প্রভাব অনুভব করছে। শহরের সবাই সম্ভাব্য জলবায়ু প্রভাবের সম্মুখীন। সাধারণত দেখা যাচ্ছে, শহরগুলোই জলবায়ু উদ্বাস্তু এবং অভিবাসনের প্রথম সারিতে রয়েছে। একটি সংখ্যার মানুষ শহরে অভিবাসনে বাধ্য হচ্ছে। যারা অন্যদের জন্য ঝুঁকি কারণ। তাই আমি এরই মধ্যে সি৪০ সিটিস ও এমএমসি সদস্য হিসেবে অন্য মেয়রদের সঙ্গে নিয়ে কপ-২৬ জলবায়ু পরিবর্তনে সংকট নিরসনে জোরারোপ করেছি। জলবায়ু ও অভিবাসনে বিশ্বব্যাপী শহরগুলো নেতৃত্ব দিচ্ছে।, কিন্তু তারা একা এই চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করতে পারে না।

গ্লোবাল কমপ্যাক্টের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে কিছু অগ্রাধিকার রয়েছে জানিয়ে আতিকুল ইসলাম বলেন, আমার জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক সমকক্ষদের জন্য জোর দিতে চাই। আমাদের অভিবাসনকে জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে অভিযোজনের একটি রূপ হিসেবে স্বীকৃতি দিতে হবে। যারা উদ্বাস্তু তাদের অধিকার এবং মর্যাদা রক্ষায় ব্যবস্থা নিতে হবে। পাশাপাশি ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলো থেকে সরিয়ে নিরাপদ স্থানে স্থানান্তরের সুযোগ দিতে হবে। এ ছাড়া আমাদের এই কর্মগুলোর সঙ্গে বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান বাড়াতে হবে। বিভিন্ন ক্ষেত্রে দক্ষতা বাড়িয়ে বিশেষ করে সবুজ খাতে অভিবাসীদের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে এবং আমাদের অর্থনীতিতে তাদের অবদান বাড়াতে হবে।

তিনি বলেন, এটি অর্জনের জন্য অপরিহার্যভাবে শহর এবং মেয়রদের জলবায়ু এবং অভিবাসন সম্পর্কিত প্রাসঙ্গিক নীতি উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় আরও জড়িত হওয়া এবং পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন। যার মধ্যে রয়েছে জাতীয় জলবায়ু, অভিবাসন, এবং উন্নয়ন নীতিগুলো। যেমন- এনডিসি, অভিবাসন ও স্থানান্তরিত জনগণের জন্য জাতীয় কৌশল প্রণয়ন।’

Jag/N

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে