ডেস্ক রিপোর্টঃ ডা. সানসিলা জেবরিন, ডাক নাম প্রিয়াংকা। জন্ম ১৯৯৩ সালের ২২ জুন। সে হিসাবে বয়স ২৫ বছরের কিছু বেশি। তিনিই একাদশ নির্বাচনে বিএনপির সর্বকনিষ্ঠ প্রার্থী। শুধু বিএনপিই নয়, ডা. সানসিলা একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৩০০ আসনে যারা বিভিন্ন দল থেকে মনোনয়ন পেয়েছেন, তাদের মধ্যে সর্বকনিষ্ঠ প্রার্থী।

পেশায় চিকিৎসক সানসিলা প্রার্থী হয়েছেন শেরপুর-১ আসনে। এ আসনে তিনি বিএনপির একক মনোনয়ন পেয়েছেন। এ আসনে ডা. সানসিলার প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের হেভিওয়েট প্রার্থী জাতীয় সংসদের হুইপ মো. আতিউর রহমান আতিক। তিনি এ আসনের টানা চারবারের এমপি ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি।

চারবারের এমপির সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা উপভোগ করছেন তরুণ ডা. প্রিয়াংকা। এ বিষয়ে তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, এ আসনে ধানের শীষের জনপ্রিয়তা অনেক বেশি। তবে এখানে আওয়ামী লীগের একজন হেভিওয়েট প্রার্থী রয়েছেন। একজন সর্বকনিষ্ঠ প্রার্থী হিসেবে হুইপ আতিউর রহমানের বিপক্ষে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করব। এ জন্য নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করছি। আমি মনে করি, রাজনীতিতে হারজিত থাকবেই। নির্বাচন যদি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয়, তবে ধানের শীষের জয় হবেই।’

ডা. সানসিলা শেরপুর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ডা. হযরত আলীর মেয়ে। এ আসনে বিএনপির মূল প্রার্থী ছিলেন হযরত আলী। তিনিসহ বিএনপির তিন প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল হওয়ায় ভাগ্য সুপ্রসন্ন হয় সানসিলার।

সানসিলা স্থানীয়দের কাছে ডা. প্রিয়াংকা নামে পরিচিত। রাজনীতিতে আনকোরা প্রিয়াংকা চিকিৎসক হিসেবে বেশ সুনাম কুড়িয়েছেন। তিনি ধানমণ্ডির আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতালের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের প্রভাষক।

নির্বাচন কমিশনে জমা দেয়া ডা. সানসিলার তথ্যানুযায়ী-তার জন্ম ১৯৯৩ সালের ২২ জুন। তিনি ২০০৮ সালে এসএসসি পাস করেন। এইচএসসি পাস করেন ২০১০ সালে। আর এমবিবিএস পাস করেন ২০১৬ সালে।

চার ব্যাংকের ঋণখেলাপির দায়ে প্রিয়াংকার বাবা হযরত আলীর মনোনয়নপত্র বাতিল হয়। হযরত আলী দীর্ঘদিন ধরে এ আসনে ধানের শীষের প্রতীকে নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিয়ে আসছিলেন। কিন্তু তিনি ডজনখানেক বিভিন্ন মামলার আসামি হয়ে প্রায় তিন মাস ধরে কারাগারে আটক রয়েছেন। হযরত আলীর প্রার্থিতা আটকে যেতে পারে, বিষয়টি আঁচ করতে পেরে বিএনপির হাইকমান্ড এ আসনে ডামি প্রার্থী হিসেবে তার মেয়ে ডা. প্রিয়াংকাকে মনোনয়ন দেয়।

এদিকে এই আসনে দীর্ঘ ২২ বছর পর দলীয় প্রার্থী পেলেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। সর্বশেষ ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির ষষ্ঠ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এ আসনে বিএনপি থেকে মো. নজরুল ইসলাম ধানের শীষের প্রতীক নিয়ে নির্বাচিত হয়েছিলেন। এর পর একই বছর ৭ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির নজরুল ইসলাম পুনরায় প্রার্থী হলেও নির্বাচিত হতে পারেননি।

এর পর থেকে এ আসনটি হাতছাড়া হয়ে যায়। ১৯৯৬, ২০০১, ২০০৮ ও ২০১৪ সালের নির্বাচনে এ আসনে এমপি হন আওয়ামী লীগের আতিক। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়ের পর আতিককে সংসদের হুইপ করা হয়।

এবার ধানের শীষের প্রার্থী পেয়ে খুশি এই আসনের বিএনপির নেতাকর্মীরা। নেতাকর্মীদের দাবি-ডা. প্রিয়াংকা বিভিন্ন সময় তার নির্বাচনী এলাকায় চরাঞ্চলের দুস্থ মানুষকে ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পের মাধ্যমে সেবা দিয়েছেন।

এর আগে জোটের রাজনীতির সমীকরণে এ আসনে বিএনপিকে ছাড় দিতে হয় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়া জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ কামারুজ্জামানকে। ২০০১ ও ২০০৮ সালের পর পর দুবার এ আসেন বিএনপি তথা ৪-দলীয় জোট প্রার্থী হিসেবে দাঁড়িপাল্লা প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়া জামায়াত নেতা মুহাম্মদ কামারুজ্জামান।

এ আসনে বিএনপির প্রার্থী পেয়ে একাট্টা বিএনপি। তারা সবাই ডা. প্রিয়াংকার জন্য মাঠে নেমেছেন।

J/N.

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে