alovela

বিডি নীয়ালা নিউজ(৪ই ফেব্রুয়ারী১৬)- কৃষি প্রতিবেদনঃ  ঘৃতকুমারী (Aloe vera) গাছ দেখতে সুদৃশ্য তাই বাহারী গাছ বা শোভা বর্দ্ধনকারী গাছ হিসেবে এর ব্যবহার বেশী। এটি Xanthorrheaceae পরিবার ভূক্ত গাছ। আনারস গাছের মত এ গাছের পাতা বের হয়। শিকড় থেকে গজানো কুশি দিয়ে গাছের বংশ বৃদ্ধি ঘটে। কুশি থেকে গজানো জন্মানো চারা দিয়েও বংশ বৃদ্ধি হয়। বাংলাদেশের প্রায় সর্বত্রই ঘৃত কুমারী জন্মায়। এ গাছ জলাবদ্ধতা সহ্য করতে পারে না বিধায় উচু জমিতে এর চাষ করা উচিৎ। রোপন করার ২/৩ মাসের মধ্যে ঘৃত কুমারী গাছের পাতা সংগ্রহ করার উপযোগী হয়। ঘৃত কুমারীর পুরু, মাংসাল পাতার পিচ্ছিল রস (ঔবষষ) ই গাছের গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। গাছ থেকে পাতা সংগ্রহ করে ধারাল ছুরি দিয়ে পাতার চামড়া তুলে ফেলে জেল (ঔবষষ) সংগ্রহ করতে হয়। অ্যালোভেরা বা ঘৃত কুমারীর ব্যবহারঃ ১. শারীরিক দূর্বলতা, গ্যাসট্রিক, আলসার ইত্যাদি পেটের পীড়া চিকিৎসায় দীর্ঘদিন আমাদের দেশে ঘৃত কুমারীর ব্যবহার হয়ে আসছে। প্রতিদিন সকালে ২ টেবিল চামচ এর রস (ঔবষষ) পানি দিয়ে মিশিয়ে খেতে হবে। এতে হজম শক্তি বাড়ে পরিপাকতন্ত্র সতেজ থাকে এবং কোষ্টকাঠিন্য দূর হয়।

২. প্রচন্ড গরমে ঘৃত কুমারীর রস শরীর ঠান্ডা রাখে। এ জন্য গরমের সময় বাজারে এর রস দিয়ে তৈরী শরবত বিক্রি হতে দেখা যায়। ৩. যাদের মাথা গরম থাকে তারা প্রতিদিন একবার ঘৃত কুমারীর নির্যাস (ঔবষষ) মাথার তালুতে নিয়মিত লাগালে মাথা ঠান্ডা থাকে। ৪. জিহ্বায় ঘা হলে এর পাতার দুপাশের ছাল ফেলে এক টুকরা পাতা জিহ্বার উপর রেখে দিলে ঘা সেরে যাবে। ৫. (ক) চুল পড়া বন্ধ অ্যালোভেরার রস ভাল কাজ করে। এর রস (জেল) মাথার তালুতে ঘসে এক ঘন্টা রেখে ধুয়ে ফেলতে হবে। এতে চুলপড়া বন্ধ হবে এবং নতুন চুল গজাবে। তা ছাড়া শ্যাম্পু করার আগে আধা ঘন্টা এর রস পুরো চুলে লাগিয়ে রাখলে ভাল কাজ করে।

(খ) মাথার খুসকী দূর করতে মেহেদী পাতার সঙ্গে ঘৃত কুমারীর রস মিশিয়ে চুলের গোড়ায় লাগাতে হবে।

৬. (ক) এর রস (জেল) সব ধরণের ত্বকের জন্যই উপকারী। এর কোন পার্শ প্রতিক্রিয়া নেই। এর (ঔবষষ) ত্বকের উজ্জলতা বাড়ায়, কোমল ও মসৃণ করে। (খ) ত্বকের রোদে পোড়া দাগ দূর করতে ঘৃত কুমারী দারুন কাজ করে। এর জেল (রস) ত্বকের পোড়া দাগের স্থানে হালকা করে লাগাতে হবে। শুকিয়ে গেলে ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। এতে অন্যান্য দাগও দূর হয়।

(গ) ঘৃত কুমারীর জেল মধুর সাথে মিশিয়ে সপ্তাহে ২ বার ব্যবহার করলে মুখের ব্রন ভাল হয়।(ঘ) তৈলাক্ত ত্বকে অ্যালো ভেরার জেল ব্যবহার করলে উপকার পাওয়া যায়। মুখ ধোয়ার পর মুখে মেখে রেখে দিতে হবে, এমনি শুকিয়ে যাবে। জেল ব্যবহারের পর মুখ ধোয়া যাবে না। ৭. ঘৃত কুমারীর রসে রয়েছে ২০ প্রকার খনিজ পদার্থ (Minerals), ১২ প্রকার ভিটামিন, ১৮ প্রকার এমাইনো এসিড এবং ২০০ প্রকার এনজাইম। তাই চিকিৎসা শাস্ত্রে এর রয়েছে ব্যাপক ব্যবহার। যেমন- কেটে গেলে বা পুড়ে গেলে এর রস ভাল কাজ করে। সর্দি, কাশি বা ঠান্ডা লাগায়, শরীরের মেদ কমাতে এবং মেয়েদের প্রজনন চিকিৎসায় ব্যবহার হয়ে থাকে। দাঁতের জেল পেষ্ট তৈরীতে এবং মুখের চিকিৎসায়ও ঘৃত কুমারীর জেল ব্যবহার হয়। কোলেষ্টারল ও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে এর জেল পাউডার ব্যবহার করা হয়। এনার্জি ড্রিংস তৈরীতেও ঘৃত কুমারীর জেল ব্যবহার করা হয়।

লেখকঃ কৃষিবিদ মোঃ নাজমুল করিম ।

সূত্রঃ কৃষিবার্তা

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে