download

বিডি নীয়ালা নিউজ(২২জানুয়ারি১৬)- সাহিত্য প্রতিবেদনঃ  প্রখ্যাত উপন্যাসিক ডন ডেলিলো রচিত ১৭তম উপন্যাস টমাস জেফারসনের জীবনী। টমাস জেফারসন ছিলেন একজন অস্তিত্ববাদী দার্শনিক। এই বই থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে জেন চিবাতারি নির্বাচন করেছেন এমন ১০টি বই যা এই বছরে পড়া উচিত।

১। ইনোসেন্টস অ্যান্ড আদারস:ডেইনা স্পাইয়োটা রচিত ইনোসেন্ট অ্যান্ড আদারস বইটিতে দুই মেয়ের বন্ধুত্বের গল্প বলা হয়েছে। ৮০’র দশকে লস অ্যাঞ্জেলসে বেড়ে ওঠা দুজনেরই ইচ্ছা সিনেমার নির্মাতা হওয়া। ম্যাডো আর ক্যারি নামের দুজনের মধ্যে সব ব্যাপারে মিল থাকলেও তাদের কিছু দৃষ্টিভঙ্গীর অমিল ছিল। ক্ষমতা, যৌনতা, ছবি নির্মাণ ও নৈতিকতায় দিক থেকে ভিন্নতা ছিল তাদের মধ্যে। এক সময় জেলি নামের এক নারীর চরিত্র নিয়ে সিনেমা নির্মাণ করতে চায়। জেলি চরিত্রটি একজন রহস্যময়ী বৃদ্ধা, যে নাকি তার শীতল কন্ঠ দিয়ে পুরুষদের প্রলুব্ধ করত। এবং পুরুষরাও তার ডাকে সাড়া দিত। কিন্তু একটি সময় ম্যাডো সিনেমাটির নির্মাণ বন্ধ করে দেয়। আর এর কারণ শুধু ক্যারিই জানতো। বইটির লেখক ডেইনা স্পাইয়োটার লেখায় সাধারণ জীবনের সুন্দর বর্ণনা পাওয়া যায়। ‘ইনোসেন্টস অ্যান্ড আদারস’ তার লেখা সেরা উপন্যাস।

২। জিরো কে: ডন ডেলিলোর লেখায় বিভিন্ন রঙের দেখা পাওয়া যায়। তিনি আমেরিকার একজন মহান উপন্যাসিক, যার সরল ভাষায় মানবতা, মৃত্যুর গভীরতা ও জীবনের বিভিন্ন দিক জড়িয়ে থাকে। ‘জিরো কে’ এই লেখকের সেরা বই হিসেবে বিবেচিত।  ডন ডেলিলো তার ১৭তম উপন্যাসটি জেফারি লকহার্টকে অনুসরণ করে তার কোটিপতি বাবা রোসকে নিয়ে লিখেছেন। রোসের দ্বিতীয় যুবতী স্ত্রী আরটিসের দুর্বল শরীর ধীরে ধীরে নষ্ট হতে থাকে। শুধুমাত্র চিকিৎসা বিজ্ঞানের উন্নতি তার শরীর ক্ষয়ে যাওয়া থাকে রক্ষা করতে পারে। একসময় বাবার সাথে সম্পর্ক ঠিক করার চেষ্টায় থাকা রোসের ছেলে তাকে সত্যিকারের অমরত্ব বোঝাতে চায়। সে প্রকৃতি দেখিয়ে বাবাকে বোঝাতে চায়, প্রকৃতির অন্য সব কিছুর মত আরটিসের শরীরও অমর হতে পারবে না।

৩। মাই নেম ইজ লুসি বারটনঃ ‘মাই নেম ইস লুসি বারটন’ বইটির লেখিকা এলিজাবেথ স্ট্রাউট তার লেখায় মা এবং মেয়ের ভালবাসার সম্পর্ক দেখিয়েছেন। লুসি নামের একটি মেয়ের হাসপাতালে থাকাকালীন সময়ের গল্প বলা হয়েছে উপন্যাসটিতে। লুসি বারটন লেখিকা স্ট্রাউটের এক অনবদ্য সৃষ্টি। লেখিকা হতে চাওয়া লুসি নামের মেয়েটি তার স্বামী ও দুই মেয়েকে হারিয়েছে। হাসপাতালে সাধারণ একটি অপারেশনের পর ধীরে ধীরে সুস্থ হচ্ছিল লুসি। তার সাথে তার মায়ের দীর্ঘদিন কোন যোগাযোগ ছিল না। একদিন লুসির মা তাকে দেখতে হাসপাতালে আসে। ভদ্রতার খাতিরে আলাপের এক পর্যায়ে লুসি এবং তার মা দেখতে পেল তাদের মধ্যে একটি চমৎকার অজানা সম্পর্ক রয়েছে। একটি সময়ে দুজনই নিজেদের নানা অজানা কথা একে অপরের সাথে ভাগাভাগি করে নিতে থাকে। এমন এক গল্পের উপন্যাস ‘মাই নেম ইস লুসি বারটন’।

৪। অ্যা ডাউটার ওমেনাকঃ ইথান কেনিন রচিত উপন্যাস ‘অ্যাডাউটার ওমেনাক’। ১৯৫০ সালে মিশিগানে জন্ম নেয় অস্বাভাবিক মনের অধিকারী মাইলো আন্দ্রেট। গনিতে অসাধারণ প্রতিভা ছিল তার। হান্স বোরল্যান্ড নামের বিখ্যাত গনিতবিদের সাথে কাজ করতো সে। সে তার চেষ্টা ও দক্ষতা দিয়ে মানুষের মন চিহ্নিত করার সরঞ্জাম আবিষ্কার করে। বইটির লেখক ইথান কেনিন মাইলোর মানসিক দিকটিকে অসাধারণভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন। ৩২ বছর বয়সে গনিতের একটি বিরাট সমস্যার সমাধান খুঁজে পায় সে। এটি তার ক্যারিয়ার উন্নত করলেও একসময় তার ব্যক্তিগত জীবন দূরে সরতে থাকে। কেনিনের লেখা সপ্তম উপন্যাস ‘অ্যা ডাউটার ওমেনাক’। অসাধারণ লেখনীর অধিকারী এই লেখকের এযাবতকালীন সেরা উপন্যাস এটি।

৫। অ্যাট দ্য এক্সিস্ট্যান্টালিস্ট ক্যাফেঃ ‘অ্যাট দ্য এক্সিস্ট্যান্টালিস্ট ক্যাফে’ বইটি সারাহ বেকওয়েল রচিত চমৎকার একটি উপন্যাস। এই বইটি মানুষের আধুনিক মন মানসিকতা, চিন্তাধারা ও অস্তিত্ববাদের গল্প নিয়ে লেখা। এই লেখিকা তিনটি জীবনীমুলক উপন্যাস লিখেছেন। ২০১০ সালে তিনি লেখায় অবদানের জন্য জাতীয় পুরস্কার পেয়েছেন। সারাহ বেকওয়েল ‘অ্যাট দ্য এক্সিস্ট্যান্টালিস্ট ক্যাফে’ বইয়ে জীবনের দর্শনের গভীরে নিয়ে গিয়ে জীবনকে অন্যরূপে দেখিয়েছে। বইটি পড়ার পর একটি প্রশ্ন আমাদের ভাবতে বাধ্য করবে, ‘আমরা কে, এবং আমরা কিভাবে বেঁচে আছি?’

৬। দ্য কুইন অফ দ্য নাইটঃ আলেকজান্ডার চি রচিত উপন্যাস ‘দ্য কুইন অফ দ্য নাইট’। ১৯ শতকে প্যারিসের কাল্পনিক একটি ভূতুড়ে বিষয় নিয়ে বইটির কাহিনী। মিনেসোটার মেয়ে লিলিয়েট বার্ন একটি অভিশপ্ত কন্ঠের অধিকারী ছিল। একসময় অনাথ লিলিয়েট প্যারিসে রওনা দেয়। যাত্রাপথে সে একজন পতিতা, ঘোড়াচালক, একজন রানীর দাসি, এবং সবশেষে একজন অপেরা গায়িকার দেখা পায়। এমন গল্পে এগিয়ে যায় আলেকজান্ডার চি’র দ্বিতীয় উপন্যাসটি।

৭। দ্য ইয়েডঃ পল গোল্ডবারের প্রথম উপন্যাস ‘দ্য ইয়েড’এর গল্পের শুরু স্টালিনের মৃত্যুর আগের সপ্তাহে। ১৯৫৩ সালে মস্কোতে তখন সাম্প্রদায়িক সহিংসতা চলছিলো। সরকারের তিনজন নিরাপত্তা বাহিনীর লোক মাঝরাতে জিয়ুস থিয়েটারের এক অভিনেতা সোলোমন শিমোনোভিচ লেভিনসনকে গ্রেফতার করতে বের হয়। লেভিনসন বৃদ্ধ হলেও একজন অভিজ্ঞ যোদ্ধা ছিলেন। তার চমকপ্রদ উন্মাদনায় ভরপুর মেধা দিয়ে কিভাবে সরকারের পতন ঘটে এমন কাহিনী নিয়ে এগিয়ে যায় ‘দ্য ইয়েড’ বইয়ের গল্প।

৮। মোস্ট ব্লেসড অফ দ্য প্যাট্রিয়ারকসঃ আনিতি গোর্ডন-রিড এবং পিটার অনুফের যৌথ রচিত উপন্যাস ‘মোস্ট ব্লেসড অফ দ্য প্যাট্রিয়ারকস’। এই উপন্যাসিকেরা বিভিন্ন সময়ে বই লিখে পুরস্কার পেয়েছেন। পিটার অনুফ টমাস জেফারসনের অন্যতম শিষ্য। তার রচিত সব উপন্যাস বইপ্রেমিদের কাছে প্রশংসিত হয়েছে। এই বইটিতে তারা তাদের প্যারিসে থাকাকালীন সময়ের কথা উল্লেখ করেছেন। দাসপ্রথা, মানবতা, ধর্ম ও নানা বিষয় উঠে এসেছে এই উপন্যাসে।

৯। স্পেন ইন আওয়ার হার্টসঃ ‘স্পেন ইন আওয়ার হার্টস’ বইটির লেখক অ্যাডাম হক্সচাইল্ড। তিনি এর আগে স্প্যানিশ সিভিল যুদ্ধ নিয়ে বই লিখেছিলেন। তার লেখায় রাজনৈতিক অস্থিরতা ও সামাজিক বিভিন্ন অসঙ্গতি তুলে ধরেন তিনি। জার্মানির নাৎসি বাহিনী নিয়েও তার লেখা রয়েছে। তার লেখার বিশেষত্ব হচ্ছে সমাজের নানা সমস্যা ও রাজনীতি পটভুমি এবং যুদ্ধের বিভিন্ন বিষয়। এই লেখন উপমার সাহায্যে অসঙ্গতিগুলো ফুটিয়ে তোলেন অসাধারণভাবে। ‘স্পেন ইন আওয়ার হার্টস’ বইটিতেও এমন কাহিনী লিখেছেন তিনি।

১০ঃ লাডিভাইনঃ মেরি অ্যানডায়া লিখেছেন ‘লাডিভাইন’ বইটি। জন্মসুত্রে ফ্রান্সের নাগরিক এই লেখিকা বিভিন্ন সময়ে নানা পুরস্কার জিতেছেন বই লেখায় তার অসামান্য অবদানের জন্য। ‘লাডিভাইন’ বইটি ফরাসি ভাষায় লেখা। জর্ডান স্টাম্প নামের একজন বইটি ইংরেজীতে অনুবাদ করেছেন। বইয়ের কাহিনীতে একটি মেয়ে প্রতিমাসে তার মা লাডিভাইনের সাথে গোপনে দেখা করতে যায়। সে তার মায়ের পরিচয় তার পরিবারের কাছে লুকিয়ে রাখে। লাডিভাইনের প্রতিবেশিদের বলা হয়েছিলো তার যেন তার সাদা চামড়ার মেয়ের সঙ্গে কথা না বলে। একসময় মিথ্যার দুনিয়ায় থাকা মেয়ের জীবনে নেমে আসে নানা সমস্যা। তার স্বামী তাকে ছেড়ে চলে যায়। এর অনেক বছর পর সেই মেয়েটি তার প্রেমিকের হাতে খুন হয়। এমন কাহিনীর উপন্যাস ‘লাডিভাইন’।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে