ডেস্ক রিপোর্টঃ রাজধানীর হাতিরঝিল প্রকল্পের ওপর নির্মিত তৈরি পোশাক উৎপাদন ও রফতানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএ ভবন আগামীকাল বুধবার উত্তরায় স্থানান্তর করা হচ্ছে।  ভবনটি সরাতে গত বছরের ১১ এপ্রিল শেষবারের মতো সময় বেঁধে দেন হাইকোর্ট। এ সময়সীমা মেনেই কারওয়ানবাজার থেকে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে বিজিএমইএ ভবন। ২০১৯ সালের ১২ এপ্রিলের মধ্যে বর্তমান ভবন খালি করে দেওয়া হবে এই মর্মে বিজিএমইএ’র পক্ষ থেকে আদালতের কাছে মুচলেকা দেওয়া হয়েছিল।

আগামিকাল সকাল সাড়ে ১০টায় বিজিএমইএ নতুন ভবন উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বিজিএমইএর নতুন অফিসের উদ্বোধন করবেন তিনি।

ভবন নির্মাণের কাজ অসম্পূর্ণ রেখেই সমিতির মূল অফিস স্থানান্তরের কাজ শুরুর বিষয়ে জানতে চাইলে বিজিএমইএ সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান বলেন, নানা আনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়ে আগামীকাল বুধবার সকাল সাড়ে ১০টায় গণভবন থেকে প্রধানমন্ত্রী নতুন ভবনের উদ্বোধন করবেন। আমরা ১২, ১৩ ও ১৪ এপ্রিল বর্তমান কার্যালয়ের জিনিসপত্র উত্তরার নতুন ভবনে স্থানান্তর করব। ১৫ এপ্রিল থেকে আমরা নতুন ভবনে অফিস করব। বিজিএমইএর সদস্য প্রতিষ্ঠানকে কাঁচামাল আমদানির প্রাপ্যতা সনদ (ইউডি) উত্তরার নতুন ভবন থেকে নিতে হবে। তিনি জানান, নতুন ভবনের নির্মাণ ব্যয় ২৫০ কোটি টাকা।

দুই টাওয়ারসমৃদ্ধ বিজিএমইএ নতুন বহুতল ভবনটি উত্তরার ১৭ নম্বর সেক্টরে অবস্থিত। নতুন ভবনটি হবে ১৩ তলা বিশিষ্ট। এরই মধ্যে ভবনের বেইসমেন্টসহ ভবনের পাঁচতলা পর্যন্ত কাজ শেষ হয়েছে। সেখানে মোট জায়গার (স্পেস) পরিমাণ ৪ লাখ ৬৪ হাজার বর্গফুট। তার মধ্যে ৩ লাখ বর্গফুট নিজেদের ব্যবহারের জন্য রাখছে বিজিএমইএ। বাকি জায়গা ২৩টি প্রতিষ্ঠান কিনেছে। তবে এখনো ৫০ হাজার বর্গফুট জায়গা বিক্রির জন্য রয়েছে। ৪০ হাজার বর্গফুটের একটি প্রদর্শনী কেন্দ্র, ৭৫০ জন মানুষ ধারণক্ষমতার আধুনিক মিলনায়তন, দুটি সেমিনার কক্ষ এবং সংগঠনের সদস্যদের জন্য সুইমিংপুলসহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা থাকবে।

সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, বেসমেন্টসহ ভবনের পাঁচতলার ছাদ নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে । নিমার্ণাধীন ভবনের মধ্যে শুধুমাত্র তৃতীয় ও চতুর্থ তলাকে ব্যবহার উপযোগী করা হয়েছে। এখান থেকে বিজিএমইএর সদস্য প্রতিষ্ঠানকে কাঁচামাল আমদানির প্রাপ্যতা সনদ (ইউডি) নিতে হবে। লেকসাইট ভিউয়ের সাড়ে পাঁচ বিঘা জমির ওপর নির্মিত ভবনটির সংযোগ সড়কগুলোর এখনো চলাচলের অনুপযোগী ।

বিজিএমইএ ভবন নিয়ে আদালতে রিটকারী আইনজীবী মনজিল মোরসেদ বলেন, সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের নির্দেশনা অনুযায়ী আগামী ১২ এপ্রিলের মধ্যে এই ভবন ভেঙে ফেলতে হবে। বিজিএমইএ কর্তৃপক্ষ এই ভবন নিজ দায়িত্বে ভেঙে ফেলার নির্দেশ রয়েছে আদালতের। আর যদি তারা নিজ দায়িত্বে না ভাঙে, তাহলে রাজউককে এই ভবন ভাঙার নির্দেশ দেওয়া আছে। এই ভবন ভাঙতে রাজউকের কার্যক্রমের সব খরচ বহন করতে হবে বিজিএমইএকে। এদিকে নির্মাণকারী সংস্থার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, উত্তরায় ১৩তলা বিশিষ্ট নতুন ভবনের পুরো কাজ শেষ হতে আরো দুই বছর সময় লাগতে পারে। এছাড়া নতুন ভবনে যাওয়ার সংযোগ সড়কটিও এখনো চলাচল অনুপযোগী।

উল্লেখ্য ১৯৯৮ সালের ২৮ নভেম্বর তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিজিএমইএ ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। ভবন নির্মাণ শেষ হলে ২০০৬ সালের ৮ অক্টোবর বিজিএমইএ ভবন উদ্বোধন করেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া।

P/B/A/N.

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে