আজ ৫ অক্টোবর, বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের ওয়ানডে অধিনায়ক, নড়াইল এক্সপ্রেস-খ্যাত মাশরাফি বিন মর্তুজার শুভ জন্মদিন। এই দিনেই তিনি মায়ের কোল আলোকিত করে পৃথিবীতে এসেছিলেন। এরই মধ্য পার করেছেন জীবনের ৩৬টি বছর। পদার্পণ করছেন ৩৭তম বছরে। একইসঙ্গে, মাশরাফির ছেলে সাহেল মর্তুজারও জন্মদিন আজ। ২০১৪ সালের এইদিনে সাহেল মাশরাফির স্ত্রী সুমনা হক সুমির কোল আলোকিত করে পৃথিবীতে আসে। বাবা ও ছেলের একইদিনে জন্মদিন হওয়ায় টাইগার ভক্তদের মাঝে অনেকটা ভিন্ন আমেজ সৃষ্টি করেছে। ‘ডেইলি বাংলাদেশ’ পরিবারের পক্ষ থেকে বাপ-বেটা দু’জনকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা।

জম্ম ও পরিচয়:

মাশরাফি বিন মর্তুজা ১৯৮৩ সালের ৫ অক্টোবর সবুজ শ্যামল নড়াইলের চিত্রা নদীর ধারে জম্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম গোলাম মুর্তজা স্বপন। মায়ের নাম হামিদা বেগম বলাকা। দুই ভাইয়ের মধ্যে মাশরাফি বড়। ছোট ভাই সিজার মাহমুদও ক্রিকেট নিয়েই সময় কাটান। মাশরাফি নামে পরিচিত নড়াইলের সেই দুরন্ত কিশোরটি ছোটবেলা থেকে কৌশিক নামেই এলাকার সবার কাছে পরিচিত ছিলেন। ছোটবেলা থেকেই ক্রিকেটের প্রতি অদ্ভুত এক ভালোবাসা কাজ করতো। এমনও অনেক দিন গেছে যে নাওয়া-খাওয়া ভুলে সারাদিন খেলার মাঠেই পড়ে ছিলেন দুরন্ত সেই কিশোর। এ জন্য অবশ্য বাবা মায়ের কাছ থেকে শাস্তিও কম পেতে হয়নি তাকে। তবে বাবা মায়ের শাসনের পাশাপাশি প্রিয় মামার সাহায্যই পেয়েছিলেন সব সময়। তাই তো ক্রিকেটটাকে এক মুহূর্তের জন্যও দূরে ঠেলে দিতে হয়নি তাকে। তাই তো তিনি একমাত্র ক্রিকেটার যিনি প্রথম শ্রেণির কোনো ম্যাচ না খেলেই টেস্টে অভিষিক্ত হন।

অভিষেকে চমক:

ঢাকার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে ২০০১ সালের ৮ নভেম্বর শুরু হওয়া জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে অভিষেকেই নিয়েছিলেন ৪ উইকেট। একই বছর ২৩ নভেম্বর ওয়ানডে ক্রিকেটে মাশরাফির অভিষেক হয় ফাহিম মুনতাসির ও তুষার ইমরানের সঙ্গে। অভিষেক ম্যাচে মোহাম্মদ শরীফের সঙ্গে বোলিং ওপেন করে তিনি ৮.২ ওভারে ২৬ রান দিয়ে নেন ২টি উইকেট। ওয়ানডে ও টেস্ট ক্রিকেটে দুই ফরম্যাটেই গ্রান্ট ফ্লাওয়ার ছিলেন মাশরাফির প্রথম শিকার! সেই যে শুরু পথচলা, এরপর নানা চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে ১৯টি বছর পার করে ফেলেছেন ক্যারিয়ারের।

ইনজুরি ও মাশরাফি:

ইনজুরি যেন তার আজন্ম সঙ্গী। ক্যারিয়ারের শুরু থেকে যেভাবে ইনজুরিতে কাটিয়েছেন- তাতে করে বাংলাদেশ হারিয়েছে তার গুরুত্বপূর্ণ ক্যারিয়ারের দিনগুলো। এপর্যন্ত চোটের কারণে ছিটকে গেছেন ১২বার। হাঁটুতে অস্ত্রোপচার হয়েছেন সাতবার। প্রবিারই তিনি ফিরেছেন, জয় করেছেন সব প্রতিকূলতা। হারিয়েছেন পাকিস্তান, ভারত, দক্ষিণ আফ্রিকা কিংবা ইংল্যান্ড। যত শক্তিশারী হোক না কেন প্রতিপক্ষ। ক্যাপটেন ম্যাশ লড়েছেন প্রবল বিক্রমে। ম্যাশের জাদুর কাটিতে জ্বলে উঠেছে টাইগারররা। ফলে নতুন পরিচয়ে বাংলাদেশকে চিনেছে বিশ্ববাসী।

জনপ্রিয়তা:

৫ অক্টোবর, ১৯৮৩। নড়াইলের চিত্রা পাড়ের গোলাম মুর্তজা ও হামিদা রহমানের ঘর আলো করে আসে তাদের প্রথম সন্তান। ডাকনাম কৌশিক। এই হলো তাকে আদর করে ডাকার নাম। সময়ের সাথে মাশরাফি বিন মর্তুজা নামে ক্রিকেটবিশ্বে যার সরব উপস্থিতি। বাংলাদেশের ওয়ানডে ক্যাপ্টেন ছিলেন। সম্ভবত বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলোয়াড় শুধু নয়, মানুষও। ৩৬ পেরিয়ে ৩৭ এ পা।

বাংলাদেশের ক্রিকেটকে অনন্য এক উচ্চতায় পৌঁছে দেওয়ার পেছনের কারিগর যেন এই মাশরাফি। তাই তো পেয়েছেন কোটি কোটি মানুষের ভালোবাসাও। শত বছর বেঁচে থাকুক মাশরাফি। হাজারো তরুণ ক্রিকেটারের অনুপ্রেরণা হয়ে। হাজারো ক্রিকেট ভক্তের ভালোবাসা নিয়ে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে