মাহফুজার রহমান মন্ডল

 

আন্তর্জাতিক বাজারে ভাষার মুল্য অনেক যা আজ অনেকে পেশা হিসেবে নিচ্ছেন  আবার অনেকে বিভিন্ন দেশে ভ্রমণের জন্য কয়েকটি ভাষা শিখে নিচ্ছেন। এতে ইংরেজীর পরে ফ্রেন্স, চাইনিজ, জাপানিজ, কোরিয়ান, জার্মানি ও স্প্যানিশ ইত্যাদি ভাষা বিশ্ব বাজারে স্থান পাচ্ছে। ভাষার জন্য বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছে, তার মধ্যে ছাত্রের বৃত্তি প্রদান একটা অন্যতম বিষয়। যাই হোক আমরা আজ এই ভাষাগুলো শিশুদের মত প্রাথমিকভাবে শিখছি। শিশুদের বয়স যখন ২ থেকে ৪ বছর বাবা-মা তাদের মুখের বুলি দিয়ে মাতৃভাষাটা চর্চার হাতে খড়ি হিসাবে দিয়ে থাকে।এরপর মাতৃভাষার সাথে সাথে অন্যান্য আরো ভাষার প্রতি শিশুদের আকৃষ্ট করতে স্কুল প্রতিনিধী ও অবিভাবক উভয়ে চেষ্টা করে। কিন্তু এটা লক্ষ করা যায় বেশির ভাগ উচ্চবিত্ত শ্রেণীর মধ্যে। যাই হোক ভাষা একটা মাধ্যম যা জানা থাকলে বহিঃবিশ্বের সাথে যোগাযোগ সহজ হয়ে ওঠে ।

কিন্তু বাংলা ভাষা পাকিস্থানিদের নিকট এত ভারি মনে হয়ে ছিল যে ১৯৪৮-এর ২১ মার্চে তৎকালীন রেসকোর্স ময়দান বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের বিশাল জনসভায় জিন্নাহ আলীর কণ্ঠে যখন ভেসে আসে উর্দুই হবে পাকিস্থানের রাষ্ট্রভাষা তখন যদি বাংলার সন্তানেরা এটা মেনে নিত, আজ হয়ত জীবিকার টানেই হোক আর ভ্রমনের টানেই হোক আমাদেরকে আন্যান্য ভাষার মত আজ নিজ ভাষাটিকে রপ্ত করতে হত। ভাগ্যিস এদেশে জন্ম হয়েছিল, সালাম, রফিক, শফিক, জব্বার ও বরকতদের মত বীর সন্তান এবং তাদের রক্তের বিনিময়ে আজকে বয়স্কদেরকে আর শিশুদের মত বাংলা ভাষা রপ্ত করতে হয় না। সেই ১৯৫২ সালের ফসল আমরা আজ ঘরে ঘরে তুলে শান্ত থাকিনি পরবর্তীতে দেশের বুকে লাল সবুজের পতাকাটাকে ছিনিয়ে এনেছি। সেই ১৯৭১ সালের ভয়াবহ দিন-রাত গুলো একত্রিত করে দামাল ছেলেরা পাকিস্থানীদের কুকুরের মত তাড়া করে বিদায় করে দিয়েছিল। তার পরেও এ প্রজন্ম থেমে থাকেনি। ১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর ইউনেস্কোর দেওয়া আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতিটাকে তারা ফসলের মত ঘরে তুলেছে।

বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় ২১ নিয়ে ছড়াছড়ি, যে যেভাবে পারছে আমাদের এই দিনটিকে সবাই বরণ করে নিচ্ছে, লেখা লেখির মধ্যে বিভিন্ন বিষয় ফুটে উঠেছে,যার বেশীর ভাগ বিষয়গুলো সরকার স্বাদরে গ্রহণ করছে। যেমন, বিডি নীয়ালা নিউজ, বিডি নিউজ ২৪ ডট কম, বিবিসি বাংলা, প্রথম আলো, বাংলাদেশ প্রতিদিন, জনকন্ঠ, যুগান্তর, গাজীপুর বার্তা ইত্যাদি পত্র পত্রিকা শিরনাম হিসাবে রাত ১২টা ১মিনিটের পর রাষ্ট্রপতি ও পরে প্রধানমন্ত্রী মিনারের বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন, পরে বিরোধী দলীয় নেতা-নেত্রী এবং পরে অন্যান্যরা।

আবার কিছু কিছু নিউজ পোর্টালে দেখা যায় বিএনপি নেতা-নেত্রীদের শহীদ মিনারে যেতে বাধা, কিন্তু পরবর্তীতে দেখা যায় তারা এসেছিল।  তবে প্রতিবারের মত অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলোর সাথে সাধারণ মানুষের ঢল নেমেছিল।

অনেক ইলেকট্রনিক মিডিয়া দেখা যায় সাধারণ মানুষের মধ্যে কিছু শিক্ষিত মানুষ শহীদ মিনারে এসেছে কিন্তু কেন এই বিশেষ দিনটি তারা বলতে পারে না। তাহলে কি আমরা যারা নতুন প্রজন্মে তারা ভাল করে বাংলা সংস্কৃতি চর্চা থেকে বিরত থাকছি? এর প্রতিবন্ধকতা কোথায়?

গতকাল প্রথম আলোয় প্রকাশিত হলো-“সব স্তরেই বাংলা এখন উপেক্ষিত” এখানে বাংলা ব্যবহার নিয়ে উদ্যোগের কথা বলা হয়েছে, এছাড়া বাংলাদেশ প্রতিদিন (২১/০২/১৬ইং) এ ভাষা সৈনিকদের পরিবারের মনের কথাগুলো সুন্দর করে উত্থাপিত হলো। সেখানে তারা বলছেন ২১ আসলে আমাদের কদর বাড়ে আর ২১ চলে গেলে আমাদের কথা বলার কোন লোক থাকেনা। এখানে একজনের নাম উল্লেখ করব- শহীদ রফিকের ভাই খোরশেদ আলম মনের খোবে বলেছেন- ‘প্রতিবছর ২১শে ফেব্রুয়ারিতে যে পরিমাণ টাকা খরচ করে শহীদ মিনারে ফুল দেওয়া হয়, তার ৫০ ভাগের ১ ভাগ টাকা পেলেও শহীদ পরিবারে আমরা অনেক ভালো থাকতে পারি’।

যাই হোক ২১ আমাদের সাথে থাকবে এটা হারাবার নয়, এটাকে নিয়ে বাড়াবাড়ি করা ঠিক না। আমরা বাঙ্গালী, আমদের গৌরব, আমাদের অহংকারসহ প্রত্যেক নাগরিকের প্রতি আমর আহব্বান ভাষা সৈনিক পরিবারগুলো যেন কোন ক্ষতি না হয় বা ভালো করে চলতে পারে এটা নিশ্চিত করা। পাশাপাশি নতুন প্রজন্ম যেন ২১ টাকে ভাল করে চিনে তার ব্যবস্থা করা।

 

সম্পাদক-

বিডি নীয়ালা নিউজ

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে