7-2

বিডি নীয়ালা নিউজ(১৫ই ফেব্রুয়ারী ১৬) মারুফ সরকার (সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি): সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার সিমলা ডিগ্রি কলেজের শিক্ষা ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়েছে। এ কলেজে শিক্ষার্থীর চেয়ে শিক্ষক সংখ্যা বেশীসহ নানা বিষয়ে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগে প্রকাশ, উক্ত কলেজের শিক্ষকরা যথানিয়মে ছাত্র/ ছাত্রীদের ক্লাশ না নেয়ায় ওই কলেজের শিক্ষা ব্যবস্থার করুণ দশার সৃষ্টি হয়েছে। এ কলেজে এমন তথ্য সংগ্রহকালে দৈনিক যুগান্তর পত্রিকার সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি ও দৈনিক আজকের সিরাজগঞ্জ পত্রিকার সম্পাদক জেহাদুল ইসলামকে ওই কলেজের একজন শিক্ষক হত্যার হুমকী দিয়েছেন। তিনি রোববার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে ওই কলেজে যান এবং দেখতে পান ওই কলেজে কোন শিক্ষার্থীর উপস্থিতি নেই। অধ্যক্ষ অসুস্থ্যতার জন্য ছুটি নিয়ে ঢাকায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এমনকি দায়িত্বপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আখিরা জিনাত মহল ৩দিন ধরে ছুটি না নিয়ে তিনিও ব্যক্তিগত কাজে ঢাকায় রয়েছেন। এ কলেজের মোট শিক্ষকের সংখ্যা ২৮ ও কর্মচাররি সংখ্যা ১২জন হলেও সরেজমিনে ১৬জন শিক্ষক ও ৪জন কর্মচারীকে উপস্থিত পাওয়া যায়। বাকি শিক্ষক কর্মচারিরা কেন অনুপস্থিত তার কোন সদুত্তর কেউ দিতে পারেননি। এভাবেই শিক্ষকরা একে অপরের সাথে যোগসাজসে চলেন বলে স্থানিয়রা জানান। অফিস সহকারী লুৎফর রহমান ও ইতিহাস বিভাগের শিক্ষক আক্কাস আলীর কাছে দায়িত্বপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ কোথায় আছেন জানতে চাইলে তারা বলেন, কিছুক্ষন আগে তিনি বাইরে গেছেন। পরে মোবাইল ফোনে দায়িত্বপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের সাথে কথা বললে তিনি জানান, গত শুক্রবার থেকে ব্যক্তিগত কাজে তিনি ঢাকায় রয়েছেন। এদিকে সরকার যখন শিক্ষা ব্যবস্থার উপর অধিক গুরুত্ব দিচ্ছে ঠিক তখনই এমন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেরও দেখা মিলছে। এতে করে সরকারের লক্ষ্য তো পুরন হবেইনা বরং শুধু অর্থ অপচয়ই হচ্ছে। এ কলেজের তিনজন শিক্ষক মোঃ আক্কাস আলী, সোহরাব আলী ও শফিকুল ইসলাম প্রায়ই নিজ কলেজের ক্লাস ফাঁকি দিয়ে সিরাজগঞ্জ শহরের রাশিদাজ্জোহা সরকারী মহিলা কলেজে অনারিয়ামের বিনিময়ে ক্লাস নিয়ে থাকেন বলে এলাকার অনেকেই জানান। এমনিতেই এ কলেজের ভঙ্গুর দশা তার উপর নিজ কলেজ রেখে অন্য কলেজে ক্লাস নেয়ায় এলকাবাসীর মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। কলেজে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি সম্পর্কে স্থানীয়রা জানান, শিক্ষার্থীদের মাঝে মধ্যে দেখা গেলেও তার সংখ্যা ৮/১০জনের বেশী নয়। অবশ্য শিক্ষকরা বলেন, আজ চারটি ক্লাস নেয়া হয়েছে এবং ২৪জন শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলো। প্রশ্ন দেখা দিয়েছে শিক্ষকের সংখ্যা ২৮জন ও ১২জন কর্মচারীর বিপরীতে শিক্ষার্থীর সংখ্যা যদি ২৪জন হয় কিভাবে ওই প্রতিষ্ঠানটি চলতে পারে ? এ বিষয়ে সিমলা ডিগ্রি কলেজের গভর্নিং বডির দুই সদস্য জহুরুল ইসলাম ও প্রাক্তন অধ্যক্ষ আনিসুর রহমান শিক্ষার্থীর সল্পতা এবং শিক্ষকদের অনিয়মিত হাজিরার বিষয়ে সত্যতা স্বীকার করে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে কলেজের বেশ কিছু অনিয়ম দেখা দিয়েছে। তবে  নিয়মিত গভর্নিং বডির কোন মিটিং না হওয়ায় বিষয়গুলো উত্থাপন করা যাচ্ছেনা। গভর্নিং বডির মিটিং হলে বিষয়গুলো তুলে ধরা হবে বলে তিনি জানান। ওই কলেজের ফিজিক্যাল ইন্সট্রাক্টর আমজাদ হোসেন এ তথ্য সংগ্রহের সময় হঠাৎ উত্তেজিত ও মারমূখী হয়ে সংবাদ সংগ্রহে সাংবাদিক জেহাদুল ইসলামকে বাধা প্রদান এবং দেখে নেয়ার হুমকী প্রদান করেন। এমনকি কোন নেতীবাচক সংবাদ পত্রিকায় প্রকাশ হলে প্রাননাশের হুমকীও প্রদান করেন। এ ব্যাপরে সিরাজগঞ্জ সদর থানায় ওই ফিজিক্যাল ইন্সট্রাক্টর আমজাদ হোসেনের বিরুদ্ধে একটি জিডি করা হয়েছে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে