cemical

বিডি নীয়ালা নিউজ(৭ই ফেব্রুয়ারী ১৬) মারুফ সরকার (সিরাজগনজ প্রতিনিধি): উত্তরাঞ্চলের  শস্যভান্ডার খ্যাত চলনবিলকে ঘিরে সিরাজগঞ্জে গড়ে উঠেছে নামে বেনামে হাজার হাজার ছোট বড় এবং মাঝারি ধরনের অটো রাইচ মিল বা চাল কল। এখানকার উৎপাদিত চাল রাজধানীসহ সারা দেশের বিভিন্ন স্থানে রফতানি হয়। এসব অটো রাইচ মিলগুলোতে পরিস্কার ঝকঝকে ও সুগন্ধি করার জন্য এক শ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ী চালে রাসায়নিক পদার্থ মিশাচ্ছেন। ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থ মেশানো চাল দীর্ঘদিন ধরে বাজারজাত করে আসছে অসাধু চাল ব্যবসায়ীরা। মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর এ কর্মকান্ড প্রতিরোধে প্রশাসন বা কর্তৃপক্ষের কোনো কার্যকর ব্যবস্থা বা ভূমিকা নেই। বর্তমানে রাসায়নিক পদার্থ মেশানো চালে বাজার সয়লাব। সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার শিয়ালকোল জাহাঙ্গীরের রাজীব অটো চাল কল, কালিয়া হরিপুর হাজী আকবর আলী তালুকদার অটো রাইচ মিল, আসিফ সেমি অটো রাইচ মিল, আরএস অটো রাইচ মিল, অন্ত সেমি অটো রাইচ মিল, দিনা চাল কল, সোনালী চাল কল, হাজী মোতালেবের সলঙ্গায় অটো রাইচ মিলসহ প্রায় মিলগুলোতেই সরেজমিনে ঘুরে জানা যায়। চীন থেকে আমদানীকৃত কম্পিউটারের মাধ্যমে এসব অটো রাইচ মিলগুলোতে ডিসটোনার মিলে পাথড় বাছাই, গ্রেটার মিলে ক্ষুদ বাছাই, সিল্কি মিলে চালের গুড়া, পরিস্কার ও ময়েশ্চার বাছাই এবং কালার শুটার মিলে মরা চাল বাছাই করা হয়। এছাড়াও খাওয়ার অনুপযোগী চাল সুগন্ধি ও পরিস্কার করতে এক শ্রেণীর চাল কল মালিকরা চালে সোডিয়াম হাইড্রোক্সাইডসহ বিভিন্ন ক্যামিকেল ব্যবহার করছেন। মোটা চাল বিআর ২৮ কয়েকবার ছাট দিয়ে চিকন করা হচ্ছে। এ চাল সুন্দর, চিকন ও ঝকঝকে দেখাতে কল মালিকরা চালে সোডিয়াম হাইড্রো, ফিটকারী, টুথপেষ্ট, বরিক পাউডার ও ময়দাসহ বিভিন্ন রাসায়নিক পদার্থ চালে দেওয়া হচ্ছে। এসব মেশানোর ক্ষেত্রে হ্যাসকিং মিল মালিকরা নিজস্ব পদ্ধতি ব্যবহার করেন। রাজীব অটো রাইচ মিলের স্বত্বাধিকারী জাহাঙ্গীর আলম ও তালুকদার অটো রাইচ মিলের ম্যানেজার লিটন, মনিরুজ্জামান চাল ছাটাই ও ক্যামিকেল দেয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, সরকারীভাবে টিআর, কাবিখাসহ বিভিন্ন প্রকল্পের বরাদ্দকৃত খাওয়ার অনুপযোগী মোটা, গন্ধযুক্ত, পোকা, পাথর, মরা কালো চালসহ বিভিন্ন প্রকারের চাল ব্যাপারীরা আমাদের মিলে শুধু যাচাই-বাছাই ও পরিস্কার করার জন্য আনেন। সেগুলো আমরা প্রতি কেজি ৭০ পয়সা হিসেবে শুধু পরিস্কার করে দেই। আর পরিস্কার করার পর অবশিষ্ট বিষ্টা বিভিন্ন ফিড মিলে চলে যায়। সিভিল সার্জন ডা. পীতাম্বর রায় বলেন, কোন পণ্যের ময়লা দূর করতে বা সাদা রং করতে সোডিয়াম হাইড্রো ব্যবহার করা হয়। এটা মানব দেহের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর পদার্থ। এ পদার্থ মিশ্রিত কোন খাদ্যদ্রব্য দীর্ঘদিন খেলে মানুষের মুখের জ্বালা-পোড়া ও পাকস্থলিতে এসিড বাড়ায়। পাকস্থলিতে বিভিন্ন রোগসহ ক্যান্সারও হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. জাহিরুল ইসলাম বলেন, আমি নতুন এসেছি। এবিষয়ে তেমন কোন কিছুই জানা নেই। তবে অবশ্যই বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখা হবে। জেলা প্রশাসক মো. বিল্লাল হোসেন এবিষয়ে বলেন, তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে অবশ্যই আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে