01.Supreme-Court-of-Bangladesh-300x199

বিডি নীয়ালা নিউজ(১ই মার্চ১৬)-ঢাকা প্রতিনিধিঃ নারায়ণগঞ্জে চাঞ্চল্যকর সাত খুনের মামলায় বিচারকাজ শুরু হওয়ার আগে আদালতকক্ষ থেকে সাংবাদিকদের বেরিয়ে যেতে বলা ঠিক হয়নি সরকারি আইনজীবীর (পিপি)।

আইনে প্রকাশ্য আদালতে বিচারব্যবস্থা চলবে বলে উল্লেখ থাকলেও গতকাল সোমবার নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতে সাংবাদিকদের থাকতে দেওয়া হয়নি বিচারকের নির্দেশনার দোহাই দিয়ে।

আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক বলেন, এটা রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি (পিপি) বলতে পারেন না।  আইনজীবীরাও একই কথা বলেন। যদিও পিপি সাংবাদিকদের বলেন, আদালতেরই নির্দেশনা ছিল। তবে আদালত প্রকাশ্যে কোনো আদেশ  দেননি বলে সাংবাদিকরা জানান।

গতকাল নারায়ণগঞ্জে সাত খুনের মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য দিন ধার্য ছিল । কারাগারে থাকা ২৩ আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়। আদালতের কার্যক্রম শুরু হওয়ার আগে পিপি ওয়াজেদ আলী খোকন বলেন, সাক্ষ্যগ্রহণের কার্যক্রম চলাকালে বাদী, আসামি ও আইনজীবী ছাড়া আর কেউ এজলাসকক্ষে থাকতে পারবেন না বলে আদালতের নির্দেশনা রয়েছে। এ মামলার প্রধান আসামি নূর হোসেনের আইনজীবী ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক খোকন সাহাও একই কথা বলেন।

এরপর গণমাধ্যমকর্মীদের আদালতের এজলাসকক্ষ থেকে বের করে দেয় পুলিশ। সাংবাদিকরা এজলাসকক্ষের বাইরে অবস্থান নেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, ‘এটা পিপি বলতে পারেন না। পিপির এ ক্ষমতা নেই। আদালত (বিচারক) ইচ্ছে করলে বলতে পারেন, যদি মনে করেন বিচারপ্রক্রিয়া গুপ্ত কক্ষে হবে।’

আইনেও বিচারপ্রক্রিয়া প্রকাশ্যে করার বিধান রয়েছে। ফৌজদারি কার্যবিধির ৩৫২ ধারায় বিচারপ্রক্রিয়ার বিধান সম্পর্কে বলা হয়েছে, ‘কোনো অপরাধের তদন্ত বা বিচারের উদ্দেশ্যে যে স্থানে কোনো ফৌজদারি আদালতের অধিবেশন বসে সেই স্থানকে উন্মুুক্ত আদালত বলিয়া গণ্য করিতে হইবে এবং যতক্ষণ পর্যন্ত সেখানে সুবিধাজনক স্থান সংকুলান হয় ততক্ষণ পর্যন্ত সেখানে সর্বসাধারণের প্রবেশাধিকার থাকিতে পারে।

তবে শর্ত থাকে যে, প্রিসাইডিং জজ বা ম্যাজিস্ট্রেট উপযুক্ত মনে করিলে কোনো বিশেষ মামলার অনুসন্ধান বা বিচারের যেকোনো পর্যায়ে আদেশ দিতে পারিবেন যে, সর্বসাধারণ বা কোনো বিশেষ ব্যক্তি আদালত কর্তৃক ব্যবহৃত কক্ষ বা ভবনে প্রবেশ করিতে বা অবস্থান করিতে পারিবেন না।’

সাত খুন মামলার বাদীপক্ষে নিয়োজিত ব্যক্তিগত আইনজীবী সাখাওয়াত হোসেন খান বলেন, ‘দেশের আলোচিত ঘটনার একটি সাত খুনের মামলা। বিচার হলো প্রকাশ্য আদালতে বিচার। সেই প্রকাশ্য আদালতের বিচারটা হতে হবে—বাদীপক্ষের লোকজনও থাকতে পারবে, আসামিপক্ষের লোকজনও থাকতে পারবে, সংবাদকর্মীরাও থাকতে পারবে। সেখানে তাদের সামনে একটি স্বচ্ছ বিচারব্যবস্থা হবে সেটাই আমরা চাই। এ মামলার বিচারের স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতার জন্য বিচারকাজ প্রকাশ্যে সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে হতে হবে। অন্যথায় নিহতদের স্বজন ও জনগণের মধ্যে সন্দেহ-সংশয় তৈরি হবে। কারণ মামলাটি চাঞ্চল্যকর হওয়ার কারণে জনগণের অনেক আগ্রহ রয়েছে। কিন্তু সোমবার আদালতে আইনজীবী ও সংবাদকর্মীর সংখ্যা বেশি হওয়ার কারণে সাংবাদিকদেরও ভেতরে সংবাদ সংগ্রহ করতে দেওয়া হয়নি।’

 

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে