ডেস্ক রিপোর্ট : এক বছর আগে হোলি আর্টিজন বেকারিতে সন্ত্রাসী হামলায় জাপানের ব্যবসায়ীদের মধ্যে বাংলাদেশে বিনিয়োগের বিষয়ে যে নেতিবাচক প্রভাব সৃষ্টি হয়েছিল,তা কেটে গেছে। জাপানের বিনিয়োগকারীরা এ দেশে আবার সক্রিয় হয়েছে। দু’টি বড় কোম্পানী ইতোমধ্যে বিনিয়োগ কার্যক্রম শুরু করেছে। এর বাইরে আরো অনেক জাপানী কোম্পানী বিনিয়োগের অপেক্ষায় রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মূখ্য সমন্বয়ক মো: আবুল কালাম আজাদ ও বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান এম আমিনুল ইসলাম এ তথ্য জানিয়েছেন। গত ৩ ও ৪ আগস্ট সিঙ্গাপুরে জাপান এবং সিঙ্গাপুরের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত কনফারেন্সের বিস্তারিত তুলে ধরতে মঙ্গলবার রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তারা এসব কথা বলেন।
বিডার নেতৃত্বে সরকারি কর্মকর্তা ও ব্যবসায়ীদের একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদল গত ৩ ও ৪ আগস্ট সিঙ্গাপুরে জাপানের বড় বড় কোম্পানীর প্রধান নির্বাহীসহ সেদেশের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বিটুবি সম্মেলনে মিলিত হন।এর পাশাপাশি প্রতিনিধিদলটি সিঙ্গাপুরের ব্যবসায়ী ও সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন এবং বিভিন্ন অফিস পরিদর্শন করেন।
এই সম্মেলনের মূল উদ্দেশ্য ছিল জাপানের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উন্নয়ন এবং সেদেশের বড় কোম্পানীগুলোর সঙ্গে সংযোগ স্থাপন। একইসাথে সিঙ্গাপুরের সংস্কার কার্যক্রম থেকে অভিজ্ঞতা অর্জন,নীতি প্রণয়নকারীদের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন এবং বিনিয়োগকারীদেরকে বাংলাদেশে বিনিয়োগের উৎসাহ প্রদান।
অনুষ্ঠানে প্রশ্নোত্তর পর্বে আবুল কালাম আজাদ বলেন,‘আমরা জাপান ও সিঙ্গাপুরের ব্যবসায়ীদের কাছে বাংলাদেশের ১’টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনসহ বিনিয়োগ সুবিধার বিষয়াদি তুলে ধরেছি।এর প্রেক্ষিতে তারা বাংলাদেশে বিনিয়োগে আগ্রহ প্রকাশ করেছে।’
তিনি বলেন,হোলি আর্টিজান বেকারিতে হামলার ঘটনায় জাপানের ব্যবসায়ীদের মধ্যে যে উদ্বেগ ছিল,তা কেটে গেছে। সিঙ্গাপুরে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ-জাপান বিটুবি সম্মেলন তাদের মধ্যে বাংলাদেশ সম্পর্কে ইতিবাচক ধারনা তৈরি করেছে বলে তিনি দাবি করেন।
বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান এম আমিনুল ইসলাম বলেন,হোলি আর্টিজনের পর জাপানের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে যে শীতল সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল,তা এখন উঞ্চতায় রুপ নিয়েছে।সেখানকার দু’টি বড় কোম্পানী ইতোমধ্যে বিনিয়োগ কার্যক্রম শুরু করেছে। এর বাইরে আরো কয়েকটি বড় কোম্পানী বিনিয়োগের অপেক্ষায় রয়েছে।
তিনি বলেন,বাংলাদেশ-জাপান-সিঙ্গাপুর তৃপক্ষীয় সম্পর্ক কিভাবে হতে পারে,সম্মেলনে আমরা এ বিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছি। বিনিয়োগ বাড়ানো এবং জাপান ও সিঙ্গাপুরের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক উন্নয়ন নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে বাণিজ্য সচিব শুভাশীষ বসু বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের সিঙ্গাপুর সফর অত্যন্ত কার্যকর উদ্যোগ ছিল উল্লেখ করে বলেন,সম্মেলনে আমরা বাংলাদেশের বিনিয়াগ সংক্রান্ত সুবিধাদি জাপান ও সিঙ্গাপুরের ব্যবসায়ীদের কাছে তুলে ধরেছি। তারা এখন বাংলাদেশে বিনিয়োগ নিয়ে আসবে বলে আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি।
এফডিআই বাড়ানোর জন্য কোম্পানী আইন সংশোধন করা হচ্ছে বলে তিনি জানান।
ঢাকা চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি’র (ডিসিসিআই) সভাপতি আবুল কাশেম বলেন,স্থানীয় বিনিয়োগকারীরা আগের তুলনায় সরকারের কাছ থেকে এখন বেশি সহযোগিতা পাচ্ছে।এটি অত্যন্ত ইতিবাচক দিক। আশা করি সরকারের এই সহযোগিতা এফডিআই বাড়াতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে মেট্রাপলিটন চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি’র (এমসিসিআই) সাবেক সভাপতি সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর ও চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি’র (সিসিসিআই) সভাপতি মাহবুবুল আলম উপস্থিত ছিলেন।

বি/এস্/এস্/এন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে