বিডি নীয়ালা নিউজ(২রা  সেপ্টেম্বর ২০১৬ইং)-ডেস্ক রিপোর্টঃ যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কের কুইন্সে দুর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে বাংলাদেশি নারী নাজমা খানম নিহত হওয়া সময় নজরদারি ক্যামেরায় ধারণ করা দুটি ফুটেজ প্রকাশ করেছে পুলিশ। ফুটেজে সন্দেহভাজন এক ব্যক্তিকে দৌড়ে পালাতে দেখা গেছে। নিউ ইয়র্কভিত্তিক সংবাদমাধ্যম এবিসি সেভেন আইউয়িটনেস নিউজ খবরটি নিশ্চিত করেছে। তবে সন্দেহভাজনের ব্যাপারে বিস্তারিত জানানো হয়নি। হামলাকারীকে এখনও খুঁজে বেড়াচ্ছে পুলিশ।
উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় বুধবার (৩১ আগস্ট) রাতে নিজ বাড়ির সামনে নাজমা খানম নামের ওই বাংলাদেশিকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়। ৬০ বছর বয়সী ওই নারী পরিবারসহ কুইন্সের জ্যামাইকা হিলস এলাকায় থাকতেন। বুধবার রাত সোয়া ৯টার দিকে জ্যামাইকা হিলসের নরমাল রোড দিয়ে হাঁটার সময় নাজমা খানমকে ছুরিকাঘাত করা হয়। পুলিশ জানিয়েছে, নাজমা খানমের বুকে চার ইঞ্চি দৈর্ঘের ছুরি ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। ছুরিকাঘাতে আহত হয়ে চিৎকার করে ওঠেন নাজমা। চিৎকার শুনে নাজমা খানমের স্বামী ঘটনাস্থলে ছুটে যান। তকণ নাজমা স্বামীকে বলেন, ‘ও আমাকে ছুরিকাঘাত করেছে, আমি মরে যাচ্ছি।’ নাজমাকে দ্রুত জ্যামাইকা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নাজমা খানম
নিউ ইয়র্ক পুলিশের পক্ষ থেকে প্রকাশ করে নজরদারি ফুটেজের একটিতে দেখা গেছে নাজমা খানম হেঁটে যাচ্ছেন। তার হাতে একটি ব্যাগ ছিল। আর দ্বিতীয় ফুটেজে দেখা যায়, এক ব্যক্তি দৌড়ে পালাচ্ছেন।
নিহত নাজমা খানম অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক। তিনি আর তার স্বামী জ্যামাইকা হিলস এলাকায় একটি গিফট শপ চালাতেন। স্বজনরা দাবি করেছেন, নাজমা ‘ধর্মীয় বিদ্বেষমূলক’ হামলার শিকার। কেননা হামলার সময় নাজমা মাথায় হিজাব পরা ছিলেন। তবে তদন্তকারী ও পুলিশ কর্মকর্তাদের বিশ্বাস, নাজমা খানম ডাকাতের হামলার শিকার হয়েছেন। অন্যদিকে স্বজনরা, দাবি করেছেন, নাজমা খানমের সঙ্গে থাকা কোনও জিনিসপত্র লুট হয়নি। সুতরাং এটি ডাকাতির ঘটনা হতে পারে না। নিহতের ভাতিজা নিউ ইয়র্ক পুলিশ বিভাগের ট্রানজিট অফিসার। ২০০৮ সাল থেকে নিউ ইয়র্ক পুলিশে কাজ করছেন তিনি। তবে ঘটনার দিন তার ডিউটি ছিল না।

শুক্রবার দুপুর ২টার দিকে জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টারে নাজমা খানমের জানাজা হওয়ার কথা রয়েছে। এরপর দাফনের জন্য মরদেহ দেশে পাঠানো হবে।

উল্লেখ্য,নিউইয়র্কের ওজোন পার্ক এলাকায়  গত ১৩ আগস্ট (শনিবার) মসজিদ থেকে বের হওয়ার পর বাংলাদেশি ইমাম মাওলানা আখঞ্জি (৫৫) ও তার সহকারী তারা উদ্দিন (৬৪)-কে প্রকাশ্য দিবালোকে মাথায় গুলি করে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় সন্দেহভাজন হিসেবে অস্কার মোরেল নামের এক ব্যক্তিকে তার বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। আটক সন্দেহভাজন ব্যক্তির বিরুদ্ধে জোড়া খুনের অভিযোগ আনা হয়েছে। পুলিশ জানায়, মোরেলের বিরুদ্ধে হত্যা ও অবৈধ অস্ত্র রাখার দায়ে দুটি অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে তার যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হতে পারে।  ওই হত্যাকাণ্ডকেও ধর্মীয় বিদ্বেষমূলক হামলা বলে দাবি করে বাংলাদেশ কমিউনিটির নেতারা।

/এফইউ/

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে