নীলফামারী প্রতিনিধিঃ হতদরিদ্র পরিবারের তালিকা তৈরি না হওয়ায় নীলফামারীর সৈয়দপুরে ১০ টাকা কেজি দরে চাল কেনার সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন দরিদ্র মানুষ। এতে প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত নির্বাচনী প্রতিশ্রুতির ওই কর্মসূচি বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে উদাসীনতার অভিযোগ উঠেছে। একই সঙ্গে প্রকৃত সুবিধাভোগী মানুষের তালিকা না করে অর্থের বিনিময়ে তালিকা তৈরির অভিযোগ উঠেছে।
গত সেপ্টেম্বর থেকে এ কর্মসূচি চালু না হওয়ায় দরিদ্র মানুষ বাজার থেকে বেশি দামে চাল কিনতে বাধ্য হচ্ছেন। বর্তমানে বাজারে ২২ টাকা কেজির মোটা চাল ৩৬ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কর্মসূচি চালু না হওয়ায় অসাধু চাল সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীরা বেশি দামে চাল বিক্রির সুযোগ নিচ্ছেন।
এলাকার কয়েকজন বাসিন্দার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নে হতদরিদ্র মানুষের মাঝে সুলভ মূল্যে খাদ্যবান্ধব চাল বিক্রির কর্মসূচির আওতায় ১৫ হাজার ২৮৬ পরিবারকে ১০ টাকা কেজি দরে চাল দেওয়া হবে। প্রতি পরিবার মাসে ৩০ কেজি করে চাল পাবে। কিন্তু দায়িত্বপ্রাপ্ত কমিটি এখনো তালিকা প্রণয়ন করতে পারেনি। তালিকা চূড়ান্ত না হওয়ায় ডিলার নিয়োগও আটকে আছে। গত ৭ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলায় আনুষ্ঠানিকভাবে ওই কর্মসূচির উদ্বোধন করেন। কিন্তু কর্মসূচি উদ্বোধনের এক মাস হতে চললেও সৈয়দপুরে হতদরিদ্রদের তালিকা প্রণয়ন শেষ করতে পারেনি কমিটিগুলো।
অভিযোগ রয়েছে, সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ঢিলেঢালা কাজের কারণে তালিকা প্রণয়ন বিলম্বিত হচ্ছে। এ ব্যাপারে খাতামধুপুর ইউনিয়নের তালিকা প্রণয়ন কমিটির সভাপতি ও উপজেলা পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা এ কে এম শামীম বলেন, ‘তালিকা প্রণয়নের কাজ চলছে।
তবে তা কবে শেষ হবে, আমি জানি না।’ বোতলাগাড়ী ইউনিয়নের তালিকা প্রণয়ন কমিটির সভাপতি ও উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা হাসান আলী বলেন, মাঠপর্যায়ে তালিকা তৈিরর কাজ করা হচ্ছে। হয়তো অক্টোবরে মাসে কাজ শেষ করা সম্ভব হবে। তালিকা প্রণয়ন করতে আমরা সাধ্যমতো চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’
জানতে চাইলে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির সৈয়দপুর উপজেলা কমিটির সদস্যসচিব ও উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তা রেজওয়ানুল হক বলেন, ‘ইউনিয়নগুলো থেকে চূড়ান্ত তালিকা না আসায় কর্মসূচি শুরু করতে বিলম্ব হচ্ছে। এ কারণে ডিলার নিয়োগও চূড়ান্ত করা যাচ্ছে না। অথচ কর্মসূচি চালুর সব রকম প্রস্তুতি আমাদের আছে। ওই কর্মসূচির জন্য প্রতি ইউনিয়ন ৫০০ পরিবারের জন্য একজন করে ডিলার নিয়োগ দেওয়া হবে।’
এদিকে তালিকা তৈরিতে দীর্ঘসূত্রতা ও অনিয়মের আশ্রয় নেওয়ায় তালিকা প্রণয়ন কমিটির বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন হতদরিদ্র মানুষ। নাম প্রকাশ অনিচ্ছুক কয়েকজন বলেন, ‘কমিটির জোরালো তৎপরতা না থাকায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষিত কর্মসূচি বাস্তবায়ন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। তালিকায় নামভুক্তি নিয়ে চলছে টাকা আদায়ের খেলা। এর খেসারত দিতে গিয়ে আমরা খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির সুবিধা পাচ্ছি না। ফলে উচ্চমূল্যে চাল কিনতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে আমাদের।’