sheikh-hasina

ডেস্ক রিপোর্টঃ  জনতার অভিনন্দন ও ফুলেল শুভেচ্ছায় সিক্ত হলেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। অভ্যর্থনা জানাতে দীর্ঘ ১৪ কিলোমিটার পথজুড়ে জনতার ঢল নামে।
জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭১তম অধিবেশনে যোগদান শেষে এমিরেটস এয়ার লাইন্সের ফ্লাইট ইকে-৫৮৬ শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা ৫০ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।
রাত সাড়ে ৭টার দিকে তিনি গণভবনে পৌঁছান। এই পথে রাস্তার দুই পাশে দাঁড়িয়ে পতাকা উড়িয়ে, ফুল ছিটিয়ে, হাত নেড়ে ও মুহুর্মুহু স্লোগানে প্রধানমন্ত্রীকে অভ্যর্থনা জানান হাজার হাজার নেতা-কর্মী। এ সময়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গাড়িতে বসে হাত নেড়ে উপস্থিত জনতার অভিনন্দনের জবাব দেন। বিমানবন্দর থেকে গণভবনে পৌঁছতে শেখ হাসিনার সময় লাগে প্রায় ৩০ মিনিট।
প্রধানমন্ত্রী ‘প্লানেট ৫০:৫০ চ্যাম্পিয়ন’ এবং ‘এজেন্ট অব চেঞ্জ এ্যাওয়ার্ড’ পাওয়া ও যুক্তরাষ্ট্র-কানাডায় সাফল্যজনক সফরের জন্য আওয়ামী লীগ তাঁর আগমনে বিপুল অভ্যর্থনার আয়োজন করে।
বিমানবন্দর থেকে গণভবন পর্যন্ত রাস্তার দুই পাশে জনতার ঢল নামে। ব্যান্ড পার্টি, ভুভুজেলা বাজিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানানো হয়। হাতে থাকা জাতীয় ও দলীয় পতাকা উড়িয়ে স্বাগত জানান। কখনো ছিটিয়ে দেন ফুল।
বিমান থেকে নেমে আসার পর আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য এবং সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী ফুলের তোড়া দিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানান।
এ সময়ে শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, আওয়ামী লীগ সভাপতিমন্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম, জনপ্রশাসন মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, এলজিআরডি ও সমবায় মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মাহবুব উল আলম হানিফ এমপি, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীর বিক্রম, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, খাদ্যমন্ত্রী এডভোকেট কামরুল ইসলাম, রেলপথ মন্ত্রী মুজিবুল হক, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা, ঢাকা দক্ষিণ ও উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র, মন্ত্রী, উপমন্ত্রী, সংসদ সদস্য এবং পদস্থ সরকারি কর্মকর্তারাও প্রধানন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে বিমানবন্দরে উপস্থিত ছিলেন।
শেখ হাসিনা এমিরেটসের ফ্লাইটে গতরাতে ওয়াশিংটনের ডুলেস ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট ত্যাগ এবং ঢাকার পথে দুবাইয়ে চার ঘন্টা যাত্রাবিরতি করেন।
প্রধানমন্ত্রীকে বহনকারী বিমান ৬টা ৫০ মিনিটে বিমানবন্দরে অবতরণ করলেও বেলা ৪টার আগেই বিজয় সরণি থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত রাস্তার দুইপাশে আওয়ামী লীগ, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের উপস্থিতিতে জনতার ঢল নামে।
এ সময়ে আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য এবং স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন গাড়ীতে করে বিভিন্ন স্থান ঘুরে দলীয় নেতা-কর্মীদের অবস্থান পরিদর্শন করেন।
বিমানবন্দর, খিলক্ষেত, কুড়িল বিশ্বরোড, শ্যাওড়া, কাকলী, বনানী, সৈনিক ক্লাব, চেয়ারম্যানবাড়ি, আমতলী, মহাখালী, জাহাঙ্গীর গেট, প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়, বিজয় সরণি থেকে গণভবন পর্যন্ত পুরো সড়কই ছিল আওয়ামী নেতা-কর্মীদের দখলে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া, নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদী, সাভার, মুন্সীগঞ্জ, গাজীপুরসহ ঢাকা ও ঢাকার আশপাশ থেকে শত শত বাস-ট্রাকে করে, বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে সংসদ সদস্য, দলীয় নেতা-কর্মী এবং সমর্থকরা প্রধানমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা-অভিনন্দন জানাতে আসেন। এ ছাড়াও গাজীপুরের সংসদ সদস্য জাহিদ আহসান রাসেলের নেতৃত্বে হাজার হাজার নেতা-কর্মীরা দক্ষিণখান এলাকায় দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানান।
ব্যানার, ফেস্টুন, পোস্টারসহ ঢাক-ঢোল বাজিয়ে পেশাজীবী সমন্বয় পরিষদ, প্রকৌশলী, চিকিৎসক, কৃষিবিদ, ডিপ্লোমা প্রকৌশলী, আইনজীবী, সাংবাদিক, শিক্ষক নেতা, ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব, সংস্কৃতি কর্মী, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট, বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ, নারী সংগঠন ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদের নেতারাসহ সর্বস্তরের মানুষ বিভিন্ন স্পটে সমবেত হয়।
এদিকে প্রধানমন্ত্রীর অভ্যর্থনা অনুষ্ঠানকে সুশৃঙ্খল করতে বিমানবন্দর থেকে গণভবন পর্যন্ত ৮টি রুটে বিভক্ত করা হয়। স্থানীয় সংসদ সদস্যদের নেতৃত্বে সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা এসব রুটে দাঁড়িয়ে কর্মসূচিতে অংশ নেন।
এদিকে জাতীয় সংসদ ভবনের উত্তর পাশের ক্রিসেন্ট লেক সংলগ্ন সড়কে সারিবদ্ধভােেব দাঁড়িয়ে জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার মো. ফজলে রাব্বী মিয়া, চিফ হুইপ আ স ম ফিরোজ, হুইপ আতিউর রহমান আতিক, হুইপ মো. শহীদুজ্জামান সরকার, হুইপ ইকবালুর রহিম, হুইপ মো. শাহাব উদ্দিন, সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদসহ সংসদ সদস্যরা প্রধানমন্ত্রীকে অভ্যর্থনা জানান।
এ ছাড়া কেন্দ্রীয় ১৪-দল, সাম্যবাধী দল, আওয়ামী যুবলীগ, আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, যুব মহিলা লীগ, জাতীয় শ্রমিক লীগ, ছাত্রলীগসহ বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা বিভিন্ন স্পটে দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানান।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর বাসভবন গণভবনে পৌঁছানোর পরে তাঁকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান শিল্পী, কবি, সাহিত্যিক, ক্রিকেটারসহ গুণীজনেরা। জাতিসংঘে গিয়ে দু’টি সম্মানজনক পুরস্কার লাভ করায় শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী গণভবনে পৌঁছালে তাঁকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক।
এ সময়ে বিশিষ্ট রবীন্দ্র সংগীত শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা সুর তোলেন- ‘আজি বাংলাদেশের হৃদয় হতে কখন আপনি, তুমি এই অপরূপ রূপে বাহির হলে জননী! ওগো মা, তোমায় দেখে দেখে আঁখি না ফিরে।’ এ সময় উপস্থিত অন্যরা তার সঙ্গে খালি গলায় সুর মেলান। এরপরে প্রধানমন্ত্রী উপস্থিত সবার সঙ্গে কুশলাদি বিনিময় করেন।
প্রধামন্ত্রী কানাডায় গ্লোবাল ফান্ড এবং যুক্তরাষ্ট্রে জাতিসংঘের ৭১তম সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিতে গত ১৪ সেপ্টেম্বর ঢাকা ছেড়েছিলেন।

 

বি/এস/এস/এন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে